• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০, ০১:২৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০, ০১:৩৪ এএম

অপারেশন ‍‍‍‍‘বান্দার‍‍’

বালাকোটের ২১ মিনিট ভুলে গেছে পাকিস্তান

বালাকোটের ২১ মিনিট ভুলে গেছে পাকিস্তান

" কাশ্মীর প্রসঙ্গ ভারত-পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই রাষ্ট্র দু’টির মাঝে বিরুপ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। সম্প্রতি ভারত অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ অঞ্চলের বিশেষ অধিকার সংক্রান্ত সাংবিধানিক বিধি ৩৭০ প্রত্যাহারের ইস্যুতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে পাক-ভারত বৈরীতায়। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের কট্টর প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে ভারত সরকার পাক-অধ্যুষিত কাশ্মীর অঞ্চলের শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনে টানাহেঁচড়া করছে, থাবা বসিয়েছে সরাসরি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বে! ভারতের বিরোধীতার ক্ষেত্রে অসংযত,সহিংস,আক্রমনাত্মক ও আগ্রাসি মনোভাব দেখাচ্ছে পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে ভারতে সামরিক আগ্রাসন চালানোর হুমকি প্রদানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি পারমানবিক যুদ্ধ ঘোষণার হুমকিও দেয়া হয়। "

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা যায়, জঙ্গি নেতাদের চাপে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে পড়েছে ইমরান সরকার। আর তাই উদভ্রান্তের মত ভারতের ইস্যু নিয়ে তাদেরই সামরিক আগ্রাসনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বার বার। তার চেয়ে বড় কথা, আবারও ভারতকে যে জুজুর ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে পাকি সেনারা তাতে মনে হচ্ছে, ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে পাকিস্তান অধ্যুষিত বালাকোটে ঘটে যাওয়া ‘২১ মিনিটের মহাভারত যজ্ঞ’ একেবারেই ভুলে গেছে তারা।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার রোধের ফলে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির জন্যে দায়ি খোদ পাকিস্তান। যার প্রেক্ষাপট একদিনে সৃষ্টি হয়নি। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বহুবার পাক ভূখণ্ডে লালিত জঙ্গিদের আগ্রাসি হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে ভারতের মাটি। ইতিহাসের তথ্য মতে এ সময়ের মাঝে সন্ত্রাসবাদের বিভিন্ন ঘটনায় ভারতীয় অন্তত ৪০ হাজার ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিপরীতে ভারতীয় নিরাপত্তী রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩২ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানী সন্ত্রাসবাদী ভারতের মাটিতে মারা গেছে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত অধ্যুষিত কাশ্মীরের পুলাওয়ামায় দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর একটি কনভয়ে ভয়াবহ আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলার ঘটনায় ৪০ জনেরও বেশি ভারতীয় জওয়ান শহীদ হন। পরবর্তীতে এই হামলার দায় স্বীকার করে কুখ্যাত পাকিস্তানী উগ্রপন্থী নেতা মাসউদ আযহারের নেতৃত্বাধীন জঙ্গি সংগঠন জঈশ-ই-মুহম্মদ। সন্ত্রাসীদের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও বর্বরোচিত হামলার জেরে অবশেষে ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে ভারত সরকারের। দেয়া হয় ‘অপারেশন বান্দার (বানর)’-এর মাধ্যমে দাঁত ভাঙা জবাব।

সে সময় পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি পাকিস্তানে মাসউদের উপস্থিতির কথা স্বীকার করলেও বিষয়টি অস্বীকার করেন পাকিস্তান সেনা ইন্টেলিজেনসের কর্মকর্তারা। ভারত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বললে কোনো প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস না দিয়ে বরং পাকিস্তান জানায়, কোনো প্রকার হামলা হলে জবাব দেবে পাকিস্তান সেনারাও।  জোর গলে সামরিক মহড়ার কথা জাহির করার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী সেনা ঘঁটিগুলোতে শুরু হয়  প্রস্তুতি। ট্যাংক, কামানসহ ভারি সমরাস্ত্র পরখ করে দেখার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী আকাশে লাগাতার চক্কর দিতে থাকে পাক জঙ্গি বিমান। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে ভারত বুঝতে পারে যে এবারেও পাকিস্তান এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবে না বরং জঙ্গিদের আড়াল করার চেষ্টা করবে।

অপারেশন বান্দার: বালাকোটের ২১ মিনিট ও পাকিস্তানের দম্ভ নাশ

পুলাওয়ামা হামলার সপ্তাহখানেক পর অনেকটাই ঠাণ্ডা হয়ে আসে পরিস্থিতি। কিন্তু ক্ষোভে ফুঁসছিলো গোটা ভারত। এমন আঘাতের পর নিরবতা ছিল অসহনীয়। এদিকে ভারতের এই নিরবতা ক্রমেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে, তবে কি সত্যিই পাকিস্তানের সামরিক শক্তির কাছে দুর্বল ভারতীয় সমর শৌর্য!

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটা নাগাদ সদম্ভে পাকিস্তান ভূখণ্ডে ঢুকে পাখতুনের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল বালাকোটে অবস্থিত জঈশ জঙ্গিদের আস্তানা শনাঙ্কত করে গুড়িয়ে দেয় ভারতীয় বিমান বাহিনী। রাতের অন্ধকারে ১২টি ভারতীয় মিরাজ-২০০০, দুই জোড়া সুখোই-৩০ জঙ্গি বিমান, দুইটি অন -এয়ার রেইডার ফ্লাইয়ার এবং দুইটি অন-এয়ার ফুয়েল জেট নিয়ে গঠিত ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল এ হামলা চালায়। জঙ্গিরা সীমান্তে এসে আঘাত করেছিলো যার বদলা হিসেবে পাক সেনাদের শাণ দেয়া তোপ-কামান ডিঙিয়েই একেবারে জঙ্গিদের ঘরে ঢুকে মরণ আঘাত হানে ভারতীয় বায়ু সেনা।

পাকিস্তান থেকে বিবিসি সংবাদদাতারা জানান, ঘটনার পর পরই জাব্বা টপ পাহাড়ের আশেপাশের এলাকা নিরাপত্তা বাহিনী ঘিরে ফেলেছে ও কাউকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের নিশ্চিত করেছেন। ফলে পাহাড় চূড়ায় ঠিক কী ঘটেছে তা এখনও বিশেষ কিছু জানা যায়নি। এই হামলায় কত লোক মারা গেছেন সেটা নিয়েও অস্পষ্টতা আছে। ভারত দাবি করছে, 'বহু জঙ্গি সদস্য' হতাহত হয়েছে - যদিও নির্দিষ্টভাবে কোনও সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। তবে ভারতের সামরিক সূত্রগুলো বিভিন্ন ভারতীয় চ্যানেলের কাছে অন্তত 'দুশো থেকে তিনশো প্রাণহানি'র দাবি করেছে। যা চাপিয়ে যায় পাকিস্তান। কোনো ক্ষয়ক্ষতি নেই বলে সাফ জানিয়ে দেয় তারা। শুধু হামলার কয়েক ঘন্টা পর পর্যন্ত বালাকোটের ঐ অঞ্চলে একটি পক্ষীও প্রবেশের অনুমোতি দেয়নি পাক সরকার। বালাকোটের এই অভিযানে দম্ভহারা পাকিস্তান এই হামলার প্রত্যুত্তর দেয়ার মত সদুপায় আজ অবদি আর খুঁজে নিতে পারেনি। যদিও শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছিলেন, সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

অপরদিকে ঘটনা চক্রে পাকিস্তানে আটক ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে কূটনৈতিক চাপে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। যা ছিল তাদের জন্য এক লজ্জাস্কর কূটনৈতিক পরাজয়। মুখে রণহুঙ্কার ছেড়ে বাতাস গরম করলেও রণাঙ্গণে ভারতের ঊষ্ণতা ঠিকই টের পায় তারা। পাকিস্তানের এই সামরিক আগ্রাসনের হম্বিতম্বির স্বাদ যে নিরস মাকাল ফলের মত তা বালাকোট ঘটনার মধ্য দিয়েই প্রকাশ পায়। সম্প্রতি, জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে আবারও সেই ফাঁকা কলসের বাদ্য শোনাচ্ছে তারা।

ভারতসহ সারা বিশ্বের বিরুদ্ধে বার বার পারমানবিক যুদ্ধের হুমকি দেয়া পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সেদেশের প্রধান সেনা মুখোপাত্র 

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের মত পরাক্রমশালী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মত দুঃসাহস ভুলেও দেখাবেনা পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সামরিক শক্তির তুলোনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে শীর্ষ সামরিক সক্ষমতা সম্পন্ন রাষ্ট্রের একটি তালিকা প্রকাশ করে থাকে ‘গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার’ সংস্থা। ২০২০ সালে প্রকাশিত সংস্থাটির সর্বশেষ তালিকার তথ্য মতে, বর্তমান বিশ্বের ৪র্থ শক্তিশালী সামরিক ক্ষমতা সম্পন্ন রাষ্ট্র হচ্ছে ভারত। পক্ষান্তরে পাকিস্তানের অবস্থান ১৫ তম। স্থল, আকাশ ও নৌ শক্তি- সকল ক্ষেত্রেই ভারত থেকে যোজন মাইল দূরে পাকিস্তানের সামর্থ্য। শুধু তাই নাই, এই প্রতিবেদনের তথ্য বলছে বর্তমানে বাংলাদেশের নৌ শক্তির পাকিস্তানের চেয়েকয়েক ধাপ ওপরে। এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৪। আর পাকিস্তান আছে ২৭ নম্বরে।

 ★ পরিসংখ্যানে ভারত-পাকিস্তান সমর সক্ষমতা  ★

ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক, স্থানীয় শিল্প, প্রাকৃতিক সম্পদ, কর্মক্ষমতা এবং প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিশ্বের দেশের মর্যাদার বিষয়গুলো এখানে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

জনসংখ্যার দিক থেকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে ভারত। যেখানে ভারতের জনসংখ্যা ১২৮ কোটি সেখানে পাকিস্তানের জনসংখ্যা মাত্র সাড়ে ২০ কোটি।

ভারতের সেনাবাহিনীর সংখ্যা ৪২ লাখ। অন্যদিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সংখ্যা ৯ লাখ ১৯ হাজার।

প্রতিরক্ষা বাজেটে ভারতের বরাদ্দ চার হাজার ৭০০ কোটি ডলার, অন্যদিকে পাকিস্তানের মাত্র ৭০০ কোটি ডলার।

ভারতের সামরিক বিমান রয়েছে দুই হাজার ১৮৫টি। অন্যদিকে পাকিস্তানের রয়েছে এক হাজার ২৮১টি।

ভারতের সামরিক বাহিনীর কাছে সাধারণ হেলিকপ্টার রয়েছে ৭২০টি, পাকিস্তানের ৩২৮টি।

তবে অ্যাটাকিং হেলিকপ্টারের দিক দিয়ে এগিয়ে আছে পাকিস্তান।  তাদের রয়েছে ৪৯টি হেলিকপ্টার, যেখানে ভারতের আছে মাত্র ১৫টি।

ভারতের কার্যক্ষম বিমানবন্দর রয়েছে ৩৪৬টি। অন্যদিকে পাকিস্তানের ১৫১টি।

ভারতের ট্যাংক রয়েছে চার হাজার ৪২৬টি, সেখানে পাকিস্তানের রয়েছে দুই হাজার ১৮২টি।

ভারতের সাঁজোয়াযান রয়েছে তিন হাজার ১৪৭টি। পাকিস্তানের রয়েছে দুই হাজার ৬০৪টি।

পাকিস্তানের আর্টিলারি বাহন রয়েছে ৩০৭টি। আর ভারতের রয়েছে ১৯০টি। তবে টেনে নিয়ে যাওয়া যায়, এমন আর্টিলারি ভারতের আছে চার হাজার ১৫৮টি। আর পাকিস্তানের আছে মাত্র এক হাজার ২৪০টি।

ভারতের রকেট প্রজেক্টর আছে ২৬৬টি, পাকিস্তানের আছে ১৪৪টি।

ভারতের নৌবাহিনীর কাছে যুদ্ধযান রয়েছে ২৯৫টি, অন্যদিকে পাকিস্তানের রয়েছে ১৯৭টি।

ভারতের কাছে সাবমেরিন রয়েছে ১৬টি। আর পাকিস্তানের ৫টি।

ফ্রিগেট রয়েছে ভারতের ১৪টি, পাকিস্তানের ১০টি।

ভারতের প্যাট্রল নৌযান রয়েছে ১৩৯টি, পাকিস্তানের ১১টি।

ভারতের মাইন যুদ্ধজাহাজ রয়েছে ৪টি, অন্যদিকে পাকিস্তানের ৩টি।

এ ছাড়া ভারতের ১১টি ডেস্ট্রয়ার ও ২২টি কর্ভেট (ছোট আকারের যুদ্ধজাহাজ) রয়েছে। তবে পাকিস্তানের কাছে এ ধরনের কোনো যুদ্ধজাহাজ নেই।

                                                                                                                                              -সূত্র: গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার

এই সামরিক পরিসংখ্যানের পার্থক্যের চেয়েও বড় কথা হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের রাষ্ট্র ও অর্থ ব্যবস্থা। আর যুদ্ধক্ষেত্রে যেখানে সেনা শক্তির প্রশ্ন, সেক্ষেত্রে বলতে হয় পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের সেনা শক্তি রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের প্রতি অনেক বেশি অনুগত। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত একধিকবার সেনা ক্যু’র মুখে পড়েছে পাকিস্তান। বিপরীতে ভারতের ইতিহাসে এর পরিমাণ শূন্যের কোটায়।

২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোট এয়ার স্ট্রাইকের মাধ্যমে পাক-অধিষ্ঠিত ভূখণ্ডে লালিত উগ্রবাদী জঙ্গিদের উদ্দেশে চরম বার্তা প্রদানের পাশাপাশি পাকিস্তান সরকারকেও সতর্ক সংকেত দিয়ে রেখেছে ভারত। জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গে ভারতের ঘরের বিষয়কে ইস্যু করে যে ধরনের মিথ্যাচার আর অপপ্রচারে বিব্রতি সৃষ্টি এবং অন্যদিকে সীমান্তে অস্থিতিশীলতা বাড়াচ্ছে পাকিস্তান, তা যেন আবারো ভারত সরকারের সহিষ্ণুতার চরম পরীক্ষা নিতে শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে যদি আবারও পাল্টা জবাব দেয় ভারত তা হয়তো একুশ মিনিটের বালাকোট হামলার মত না হয়ে বরং একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াল থাবা হয়ে আঘাত হানবে পাকিস্তানের অস্তিত্বে।