• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২০, ০৫:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১২, ২০২০, ০৫:২৬ পিএম

করোনা প্রতিরোধে হার্ড ইমিউনিটির চিন্তা ভুল: ডব্লিউএইচও

করোনা প্রতিরোধে হার্ড ইমিউনিটির চিন্তা ভুল: ডব্লিউএইচও
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমারজেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইকেল রায়ান (বাঁয়ে) : ছবি- সংগৃহিত

ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত তথাকথিত হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের মাধ্যমে নভেল করোনাভাইরাস মহামারিকে পরাজিত করার ক্রমবর্ধমান আলোচিত ভাবনাকে হিসেব-নিকেশের ভুল এবং এই চিন্তা-ভাবনা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এ প্রসঙ্গে সোমবার (১১ মে) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমারজেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইকেল রায়ান এক ব্রিফিংয়ে বলেন, এটা সত্যিই বিপজ্জনক, বিপজ্জনক হিসেব-নিকেশ।

হার্ড ইমিউনিটির ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা বলেন, যেসব দেশের করোনা মোকাবিলা ব্যবস্থা শিথিল এবং কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি; হার্ড ইমিউনিটির ধারণাটি সম্ভবত সেসব দেশের। তাদের ধারণা হঠাৎ করেই তারা ম্যাজিক্যালি হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছাবে। কিন্তু এই পথে যদি আমরা কিছু বয়স্ক মানুষকে হারিয়ে ফেলি, তখন কি হবে?

'মানুষ পশুর পাল নয়' উল্লেখ করে সতর্কবার্তা রায়ানের; বলেন, একই মান যদি মানুষের সঙ্গে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে সেটি নিষ্ঠুর হিসেব-নিকেশের দিকে নিয়ে যেতে পারে; যা এই সমীকরণের কেন্দ্রে মানুষ, জীবন এবং ভোগান্তিকে রাখবে না।

ভেটেরিনারি মেডিসিন শাস্ত্র থেকে হার্ড ইমিউনিটির ধারণাটির উদ্ভব হয়েছে। যা প্রাথমিকভাবে জনস্বাস্থ্যের সামগ্রিক অবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে। প্রাকৃতিকভাবে একটি জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশের শরীরে কোনও সংক্রামক রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে এমন ধারণা থেকে হার্ড ইমিউনিটির উৎপত্তি। তখন ওই জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা সংক্রমিত হননি; তাদের মধ্যে রোগটির কম বিস্তার ঘটবে।

এর অর্থ হলো একটি ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত অধিকাংশ মানুষকেই শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়েই করোনাকে ঠেকাতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই চিন্তা-ভাবনা নিয়ে করোনা মোকাবিলায় অগ্রসর হলে চরম মূল্য দিতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই কর্মকর্তা বলেন, মানুষের মাঝে হার্ড ইমিউনিটি তখনই প্রযোজ্য যখন বিজ্ঞানীদের হিসেব-নিকেশ করা দরকার যে, একটি সমাজে কত সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া গেলে যথাযথ হার্ড ইমিউনিটিতে পৌঁছানো যাবে।

তিনি বলেন, বিশ্বের বৃহৎসংখ্যক জনগোষ্ঠী ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত হয়েছেন বলে যে ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে, মহামারিবিষয়ক প্রাথমিক গবেষণায় সেটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। মাইকেল রায়ান বলেন, যারা ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন তাদের বড় একটি অংশ গুরুতর অসুস্থ।

প্রাথমিকভাবে নভেল করোনাভাইরাসকে যেভাবে ভাবা হয়েছিল বর্তমানে এটি তারচেয়ে অনেক বেশি গুরুতর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

হার্ড ইমিউনিটির চিন্তা-ভাবনাকারী নির্দিষ্ট কোনও দেশের নাম উল্লেখ করেননি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা। তবে ইউরোপের দেশ সুইডেন-সহ বিশ্বের আরও কিছু দেশ করোনা মোকাবিলায় কঠোর লকডাউন আরোপ না করায় সেসব দেশের দিকে ইঙ্গিত করে এসব কথা বলেছেন মাইকেল রায়ান। কারণ ওই সব দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা লকডাউন না থাকলে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে উঠতে পারে বলে যুক্তি দেখিয়েছেন।

সূত্র: আরটি নিউজ

এসকে