• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২০, ০৭:২৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৭, ২০২০, ০৭:২৭ এএম

লাদাখে চীনা রণসজ্জা, তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে মোদীর বৈঠক

লাদাখে চীনা রণসজ্জা, তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে মোদীর বৈঠক
সাম্প্রতিক এই বাক-বিতণ্ডতার জেরেই লাদাখা সীমান্তে উত্তজনা- ছবি: ইমডিয়া টুডে

ভারত-চীন সীমান্তবর্তী লাদাখ অঞ্চলে চীনের সমর সরঞ্জাম মজুদ ও সম্ভাব্য যুদ্ধ প্রস্তুতির তৎপরতা আমলে নিয়ে তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

মঙ্গলবার (২৬ মে) প্রকাশিত প্রতিবেদনে- লাদাখ সীমান্তের এই উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং মোদীর বৈঠকের তথ্যটি নিশ্চিত করেছে কলকাতাভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার।

প্রতিবেদনের তথ্য মতে, চীন-ভারত সীমান্তের লাদাখ অঞ্চলের এক নদীর দু’পারে মুখোমুখি দু’দেশের সামরিক বাহিনী। সীমান্তে চীনের সেনা সংখ্যা ও সামরিক সরঞ্জাম বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে ভারত। চীনা ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর এমন সংঘাতময় পরিস্থিতিতে থমথম অবস্থা বিরাজ করছে লাদাখে।

আনন্দবাজার জানায়, প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে এমন উত্তেজনার ঘটনায় লাদাখ নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার দুই দফায় বৈঠক করেছেন তিনি। লাদাখের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে এবং সেনাবাহিনীর কৌশল ঠিক করতে প্রথমে বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত এবং তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে। কূটনৈতিক অবস্থান ঠিক করতে আলাদা বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গেও।

এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী মোদীর আগেই লাদাখ নিয়ে একদফা বৈঠক করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।তিন বাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে এ বৈঠক করেন তিনি। সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যালোচনা করেন তারা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে রাজনাথকে বিস্তারিত তথ্য দেন সেনাপ্রধান এমএম নারাভান।

সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন করে ভারতে ঢুকে পড়া নিয়ে একাধিকবার চীনের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়েছে ভারত। চলতি মাসের গোড়ার দিকে তা নিয়ে নতুন করে দু’দেশের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়। গত ৯ মে উত্তর-পূর্ব সীমান্তের নাকু লা সেক্টরে চীনা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ভারতীয় জওয়ানরা। এতে ভারতীয় বেশ কয়েকজন সেনাসদস্য আহত হয়।

দুই দেশের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে সাময়িকভাবে উত্তেজনা কমলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বরং গত কয়েক দিনে প্যাংগং এবং গালওয়ান উপত্যকায় সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করেছে দু’পক্ষই। গালওয়ান নদীর তীর বরাবর অস্থায়ী সেনা পোস্ট স্থাপন করেছে চীন। শুরুতে সেখানে দুই-তিন হাজার সেনা মোতায়েন করলেও, ক্রমেই এর  সংখ্যা বাড়িয়ে পাঁচ হাজার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এমনকি গালওয়ানে বেইজিং বাঙ্কার তৈরিরও চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে চীনা সেনার ভারতীয় এলাকায় ঢোকা নিয়ে এর আগেও দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। কিন্তু যে গালওয়ানে চীনা সেনাবাহিনীর সমাবেশ ঘটেছে, তা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কখনই বিরোধ ছিল না। আর তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে ভারতের। বিষয়টি নিয়ে এরইমধ্যে ছয় দফা বৈঠক হয়েছে দু’পক্ষের কমান্ডারদের মধ্যে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি।

এ দিকে, গতকাল লাদাখের সীমান্তবর্তী এলাকার বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট ইমেজ প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে। এতে দেখা যায়, প্যাংগং থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে তিব্বতের নারি গানসা বিমানঘাঁটিতে হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান অবতরণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্মাণকাজ চলছে। বিমানঘাঁটির টারম্যাকে সারি দিয়ে চারটি যুদ্ধবিমান দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে একটি ছবিতে। সেগুলো চীনা সামরিকবাহিনীর জে-১১ এবং জে-১৬ যুদ্ধবিমান হতে পারে বলে ধারণা করছেন ভারতীয় সামরিক বিশেষজ্ঞরা।

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে চীন যেখানে ধাক্কা সামলে উঠে দাঁড়িয়েছে, একই সময় ভারতে চলছে করোনা আগ্রাসনের সনিক ব্লো। এর মাঝে চীনের সঙ্গে কোনো প্রকার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লে ভারতের অবস্থা কি হতে পারে, তা বিবেচনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

এসকে 

আরও পড়ুন