• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২১, ০৮:৫৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২১, ০৯:৪৬ পিএম

উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ ধস

মৃত্যু বেড়ে ১৪, নিখোঁজ ১৭০

মৃত্যু বেড়ে ১৪, নিখোঁজ ১৭০

ভারতের উত্তরাখণ্ডে চামোলি জেলায় হিমবাহ গলে আলাকানন্দ ও ধৌলিগঙ্গা নদীতে সৃষ্ট তীব্র বন্যায় ১৪ জন নিহত ও ১৭০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এনডিটিভি খবরে এ তথ্য জানায়।

খবরে জানায়, বন্যায় ৫টি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এনটিপিসি বিদ্যুৎকেন্দ্র ভেসে গেছে। ঘরবাড়ি এবং আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ভেসে গেছে। আহত হয়েছেন ৬ জন। জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সদস্যরা উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করেছেন: “ভারত উত্তরাখণ্ডের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং জাতি সবার সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্র প্রার্থনা করেছে।”

৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাত থেকে হিমবাহ ভাঙন শুরু হয়। প্রবাহ বেড়ে গেলে জলবিদ্যুৎ বাঁধ ভেঙে যায়। এতে  চামোলি জেলার ধুলিগঙ্গা নদীর পানি বাড়তে থাকে।

স্থানীয় গণমাধ্যম এবং নিউজ এজেন্সি এএনআইয়ের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রোববার সকালেও উত্তরাঞ্চল রাজ্যের বাঁধের দিকে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তীব্র স্রোতে লোকালয় ভেসে গেছে। ধসে গেছে পাঁচটি বাঁধ। উদ্ধারকাজে সহায়তায় সেনা ও বিমানবাহিনী কাজ করছে। আশপাশের নদীর তীরে পানির স্তর বৃদ্ধির কারণে মানুষকে তাড়াতাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে তপোবন বাঁধের কাছে নির্মাণাধীন টানেল থেকে ১৬জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল। বন্যায় প্লাবিত একটি নির্মাণাধীন স্থাপনা থেকে সাতজনের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। দুই বিদ্যুৎকেন্দ্রে দেড় শতাধিক মানুষ নিখোঁজ থাকার কথাও জানান তিনি।

ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও আটকে পড়া0দের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রবল বন্যায় ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্লাবিত হওয়ার পর আশপাশের গ্রামগুলোর অনেক অবকাঠামো বিলীন হয়ে গেছে। উত্তরাখণ্ডের আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরও জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

রাজধানী দেহরা দুনে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “উত্তরাখণ্ড একটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সাতটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধারকাজ চলছে।”

উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা ওম আগরওয়াল ভারতীয় টিভিকে জানিয়েছেন, হিমবাহ ভাঙনের সময় ভূমিকম্পের মতো ভূমি কেঁপে ওঠে।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্য সচিব ওম প্রকাশ বলেন, “প্রায় দেড় শতাধিক লোক মারা যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”

উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার ঋষিগঙ্গা ও তপোবন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রায় দেড়শ শ্রমিকের এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত মোট ৩৫ জন ব্যক্তির মধ্যে প্রায় ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

সরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ সংস্থা এনটিপিসির ডাউন স্ট্রিম হাইড্রোড প্রকল্প থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে ধলীগঙ্গা নদী। প্রায় ১৭৬ শ্রমিক ওই প্রকল্পে কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এদের মধ্যে ৩৫ থেকে ৫০ জন শ্রমিককে উদ্ধার করে এনটিপিসি প্ল্যান্টে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে নিহতদের পরিবারকে প্রতি ৪ লাখ রুপি ও মোদির ত্রাণ তহবিল থেকে আরো ২ লাখ রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাওয়াত। গুরুতর আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন।