• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২১, ০২:২৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩০, ২০২১, ০২:২৯ পিএম

পরিচয় জেনেই দানিশকে নির্মমভাবে হত্যা করে তালেবান

পরিচয় জেনেই দানিশকে নির্মমভাবে হত্যা করে তালেবান

আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবানের সংঘর্ষের সময় নিহত হয়েছিলেন বিশ্ববিখ্যাত পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকী। চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশটির কান্দাহারের স্পিন বোলদাক শহরে নিহত হয়েছিলেন তিনি। তবে দানিশের মৃত্যুর প্রায় দুই সপ্তাহ পর তার নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ম্যাগাজিন।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) মার্কিন ওই ম্যাগাজিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনী ও তালেবানের মধ্যকার সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে দুর্ঘটনাক্রমে বা ক্রসফায়ারে নিহত হননি সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকী। পরিচয় পাওয়ার পরই তাকে আটক করে ‘নির্মমভাবে হত্যা করেছে’ তালেবানের যোদ্ধারা।

মার্কিন ম্যাগাজিন ওয়াশিংটন এক্সামিনার’র ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সীমান্ত থেকে কয়েকশ মিটার দূরে আফগান সরকারি বাহিনীর ওপর প্রথম আক্রমণ চালায় তালেবান যোদ্ধারা। আক্রমণের তীব্রতায় এসময় আফগান সেনাবাহিনীর কনভয় দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়।

এসময় আফগান কম্যান্ডারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান দানিশ। তিনজন আফগান সেনার সঙ্গে তিনি অন্য দিকে ছিটকে যান। তার শরীরে স্প্লিনটারের আঘাত লাগে। সেনা সদস্যরা তাকে স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যান। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে দানিশ এবং আফগান সরকারি বাহিনীর তিন সেনার মসজিদে আশ্রয় নেওয়ার খবর পৌঁছে যায় তালেবানের কাছ। তালেবানের একটি দল ওই মসজিদ আক্রমণ করে। ভেতরে ঢুকে তারা দানিশকে আটক করে। পরে পরিচয় জানতে পেরে তাকে নিয়ে চলে যায় তালেবান যোদ্ধারা। একপর্যায়ে তাকে অন্যদের সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, দানিশের মৃত্যুর পর যে ছবি পাওয়া গেছে, তাতে স্পষ্ট যে- হত্যা করার আগে তার মাথার কাছে একাধিক আঘাত করা হয়েছে। তারপর বুলেট দিয়ে তাকে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছে। ক্রসফায়ার বা উভয়পক্ষের মধ্যে পড়ে মারা গেলে মৃতদেহে এ ধরনের আঘাত থাকতে পারে না।

মৃত্যুর পরে আফগান সরকারের সহায়তায় দানিশের মৃতদেহ বিমানে করে দিল্লিতে আনে ভারত সরকার। পরে রাজধানী নয়াদিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় তাকে কবর দেওয়া হয়। অবশ্য দানিশের মৃত্যু নিয়ে ভারত এখনও সরকারি ভাবে কোনো তথ্য দেয়নি।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রধান চিত্র সাংবাদিক ছিলেন দানিশ সিদ্দিকী। তার বাড়ি ভারতের মুম্বাইয়ে। ৪০ বছর বয়সী এই সাংবাদিক জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ছাত্র ছিলেন। টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরে চিত্র সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।

২০১০ সালে রয়টার্সে শিক্ষানবীশ চিত্র সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। তার ৬ বছরের মধ্যেই ইরাকের মসুলের যুদ্ধের ছবি তুলতে যান দানিশ। ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পের ছবিও তোলেন। ২০১৯-২০ সালে হংকং আন্দোলন, ২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গার ছবিও তোলেন এই চিত্র সাংবাদিক।