• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২২, ১২:২৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২২, ২০২২, ১২:২৪ এএম

ভোটে ৫ বছর নিষিদ্ধ ইমরান খান

ভোটে ৫ বছর নিষিদ্ধ ইমরান খান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ● ফাইল ফটো

দুর্নীতি অভিযোগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ৫ বছরের জন্য পার্লামেন্টের সদস্য পদে অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সর্বসম্মতিতে তোষাখানা দুর্নীতি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

পাকিস্তানের ডন পত্রিকার বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, নির্বাচন কমিশনের ট্রাইবুনাল এক লিখিত রুলিংএ সংবিধানের ৬৩(১)(পি) ধারা অনুযায়ী ইমরান খানকে পার্লামেন্ট বা প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত বা মনোনীত হবার অযোগ্য বলে ঘোষণা করে।

রিপোর্টে আইনি বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, কমিশনের এ রুলিং-এর অর্থ হচ্ছে যে ইমরান খান বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ পর্যন্ত এর সদস্য হবার অযোগ্য থাকবেন। পার্লামেন্টে তার আসনটিতে উপ-নির্বাচন হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়।

নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে হাইকোর্টে আপিল করার কথা জানিয়েছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। রায়ের বিরুদ্ধে সমর্থকদের রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়েছে পিটিআই।

গত আগস্টে ইমরানের বিরুদ্ধে তোষাখানা মামলা করে ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের একজন সদস্য। অভিযোগে বলা হয়, বিদেশিদের কাছ থেকে পাওয়া রাষ্ট্রীয় উপহার তোষাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রি করেছেন ইমরান খান।

ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির শাসকদের থেকে রত্নখচিত ঘড়ি, কলম, নেকলেসসহ নানা উপহার পেয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলির মধ্যে অন্তত চারটি তিনি কয়েক কোটি টাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন।

পাকিস্তানের নিয়ম অনুযায়ী বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছ থেকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা অন্য মন্ত্রীরা যা উপহার পান, তা সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা। তবে ১০ হাজার টাকার কম মূল্যের উপহার হলে প্রধানমন্ত্রী তা নিজের কাছে রাখতে পারেন। তার বেশি মূল্যের কোনও উপহার তার পছন্দ হলে তার বাজার-মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করে সেই উপহার নিজের কাছে রাখতে পারেন।

এক্ষেত্রে ইমরান নেকলেসের মূল্য অনেক কম দেখিয়ে মাত্র কয়েক হাজার টাকা সরকারি ভাঁড়ারে জমা দিয়ে সেটি হাতিয়ে নিয়েছিলেন। ইমরান নেকলেসটি তার বিশেষ সহায়ক জুলফিকার বুখারির মাধ্যমে লাহৌরের এক গয়না বিক্রেতার কাছে বিক্রি করে দেন। উপহার বিক্রির এই অভিযোগ ‘সত্য’ বলে জানায় তদন্তকারী সংস্থা ‘ফেডেরাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি’। এর পরেই পদক্ষেপ করেছে কমিশন।

নিজের হাতে গড়া দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর অন্দরে বিদ্রোহ, পিএমএল(এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি, মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের মতো বিরোধী দলগুলির নজিরবিহীন জোট এবং পাক সুপ্রিম কোর্টের ধারাবাহিক ভর্ৎসনায় বিদ্ধ ইমরান গত ১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।

দেশজোড়া তুমুল অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে সে সময় তার জনসমর্থনও তলানিতে ঠেকেছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ৮ আসনের উপনির্বাচনে ৬টিতেই জয়ী হয়ে চমকপ্রদ প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিয়েছিল ইমরানের দল।

এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ প্রাক্তন পাক ক্রিকেট ক্যাপ্টেনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আবার অনিশ্চিত করে তুলল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে।

জাগরণ/আন্তর্জাতিক/কেএপি/এমএ