• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩, ১১:৪৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩, ১১:৪৭ পিএম

জীবিত কেউ উদ্ধার হলেই ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি

জীবিত কেউ উদ্ধার হলেই ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি
ছবি ● সংগৃহীত

যেদিকে চোখ যায়, ধ্বংসস্তূপ। সেখানে চাপা পড়া হতাহতদের উদ্ধারে ব্যস্ত উদ্ধারকর্মীরা। দিন গড়িয়ে রাত নেমেছে, তবু এই ব্যস্ততার শেষ নেই। এরই মধ্যে হঠাৎ দুই-একজনকে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে বের করে আনা হচ্ছে। তাদের কেউ কেউ জীবিত। এ সময় ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠছে পুরো এলাকা। কোনও মরদেহ উদ্ধার করা হলেও উঠছে একই রব। এ চিত্র তুর্কিয়ের (সাবেক তুরস্ক) আদানা শহরের।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভূমিকম্পের পুরো শহরটি বলতে গেলে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। শুধু আদানা নয়, দক্ষিণ তুরস্কের বেশির ভাগ এলাকার অবস্থা একই। ভূমিকম্পে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৪১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত ১৫ হাজারের বেশি। আর পাশের দেশ সিরিয়াতে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি।

আদানায় ভূমিকম্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে লেবানন থেকে শহরটিতে উড়োজাহাজে করে গিয়েছেন বিবিসির একজন প্রতিবেদক।

তার ভাষ্যমতে, উড়োজাহাজটি অগ্নিনির্বাপণের কর্মী ও চিকিৎসা কর্মীতে ভর্তি ছিল। সাহায্য আসছে তুরস্ক অন্যান্য প্রান্ত এবং বিভিন্ন দেশ থেকেও। এ ছাড়া আদানা বিমানবন্দরে দেখা গেছে, সুইজারল্যান্ড ও রোমানিয়ার শত শত উদ্ধারকর্মী।

আদানা শহরের দশা এখন বেহাল। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। যাঁদের বাড়িগুলো টিকে আছে, তারাও নতুন কোনও ভূমিকম্পের আশঙ্কায় সেখানে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন।

স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে বিবিসির ওই প্রতিবেদক জানতে পেরেছেন, প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে রোববার দিবাগত রাত ৩টা ২০ মিনিটে। সেটি স্থায়ী ছিল ৯০ সেকেন্ডের মতো। তবে স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে এই সময় বহু দীর্ঘ মনে হয়েছিল।

ভূমিকম্পের সময় অনেকে হাতের কাছে যা পেয়েছেন, তা নিয়েই ঘর ছেড়েছেন। অনেকে আবার কিছুই সঙ্গে নিতে পারেননি। ফলে হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় খোলা আকাশের নিচে তাঁদের অবস্থা এখন দুর্বিষহ। নেই খাবারসহ অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। আরও ভয়ের কথা হলো, চলতি সপ্তাহের শেষে শীতের প্রকোপ আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।এ গেল তুর্কিয়ের একটি শহরের চিত্র। পাশের দেশ সিরিয়ার অবস্থা আরও ভয়াবহ।

ভূমিকম্পে দেশটিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম নয়। বড় সমস্যা হলো সিরিয়ায় অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ করছে সরকারের পাশাপাশি বিদ্রোহীরাও। এতে সেখানে বিদেশি সহায়তা পাঠানো কঠিন হয়ে পড়ছে। আর সিরিয়ায় উদ্ধার সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে।

ভূমিকম্পের পর সিরিয়ার আলেপ্পো, বসানিয়া, ইদলিব, জিনদেরেস শহরগুলোর মানুষের অবস্থা দেখলে মনে হবে, এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না। তারা সাহায্যের আশায় রয়েছেন। মানুষের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস। তবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসার মতো তেমন কেউ নেই।

এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে উত্তর সিরিয়ার মানুষেরা প্রায় সবকিছুই হারিয়েছেন। এবার ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে তারা সর্বহারা হলেন। বিবিসি।

জাগরণ/আন্তর্জাতিক/কেএপি/এসএসকে