• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯, ০৯:৩৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০১৯, ০৮:৫৩ পিএম

ভাষা সৈনিক মাজেদা আলী 

আমরা চাই শুদ্ধ বাংলার ব্যবহার ও প্রসার 

আমরা চাই শুদ্ধ বাংলার ব্যবহার ও প্রসার 
ভাষা সৈনিক মাজেদা আলী 

 

ভাষা সৈনিক, শিক্ষাবিদ, লেখক, সংগঠক বেগম মাজেদা আলী এখন চোখে দেখতে পান না। তবে নিজ বাসার সর্বত্র তার পরিচিত হওয়ায় হাটা চলা করে বেড়ান তিনি। আজীবন পড়ুয়া, লেখক বেগম মাজেদা আলী প্রতিদিন পত্রিকার খবর শোনেন অর্থাৎ তাকে পড়ে শোনানো হয়। তিনি এখনও লেখালেখি করেন কিন্তু শ্রুতি লেখকের মাধ্যমে। পত্রিকা পড়ে শোনানো, বই পড়ে শোনানো এবং বলা কথা লিখে দেয়ার জন্য তিনি একজন শিক্ষার্থীকে বেতন দিয়ে রেখেছেন। সেই মেয়েটি তাকে প্রতিদিন নিয়ম করে পত্রিকা, বই পড়ে শোনানো এবং লিখে দেয়ার কাজটি করেন। 

জীবন সায়াহ্নের মুখোমুখি আসা ভাষা সৈনিক বেগম মাজেদা আলীর সঙ্গে কথা হয় নগরীর ফারাজীপাড়ার তার বাসভবনে। যদিও টেলিফোনে আগেই তার সঙ্গে কথা বলার জন্য সময় নেয়া হয়। ঠেলিফোনে তিনি বলেছিলেন, ভাষা আন্দোলনের কথা বলে বা লিখে কি আর হবে। এখন আর এসব কেউ পড়তে চায় না শুনতে চায় না। এখন সবাই মোবাইল ফোনে গেম খেলে টেলিভিশনে বিদেশি সিরিয়াল দেখে সময় কাটায়। কারও পড়ার সময় নেই। 

বেগম মাজেদা আলীর বাসায় যাওয়ার পর জনৈক শাহাদাত নামে এক ব্যক্তি বেশ সমাদর করে বসার ঘর নিয়ে যান। এরপর দোতলা থেকে বেগম মাজেদা আলী সিঁড়ি বেয়ে দেয়ালে হাত দিয়ে ওই শাহাদাতকে বলেন, ঘরের সকল বাতিগুলো জ্বেলে দাও। এরপর তিনি জানতে চান কেমন আছ তুমি। কাজ কেমন চলছে এমন সব কথা বার্তা। এরপর তার কাছে জানতে চাওয়া হয় সময় কিভাবে কেটে যাচ্ছে। বলেন বাইরে বের হই না। চোখে দেখতে পাই না। অনেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিতে চান কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও যেতে পারি না। তারপর কিছু কিছু অনুষ্ঠানে যেতে হয়। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে ম্যাকূলা ডি জেনারেশন (বয়স বৃদ্ধিজনিত চোখের রোগ) রোগে আক্রান্ত হন । দেশে বিদেশে অনেক চিকিৎসা করিয়েও প্রতিকার হয়নি। প্রথম প্রথম কিছুটা দেখতে পেলেও ২০১৬ সালে একবারেই দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন।
 
এক পর্যায়ে তার কাছে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে  বলেন , যে আদর্শ নিয়ে আমরা কাজ করেছি তা কি কার্যকর বা ফলপ্রসু হয়েছে? ভাষা আন্দোলনে একজন নারী হিসেবে যোগদান ও তার প্রতিবন্ধকতা এবং সংগ্রামী সময়ের কথা বলতে গিয়ে এমনই অনেক প্রশ্ন করলেন ভাষা সৈনিক বেগম মাজেদা আলী। 

তিনি বলেন,  আমরা ধর্মনিরাপক্ষতার কথা বার বার বলি কেন? আমরা ধর্মনিরপেক্ষ ছিলাম ও আছি সেখানে বার বার ধর্মনিরাপক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলার কি আছে?। কিছু দুবৃর্ত্ত আমাদের এই অসাম্প্রদায়িকতা নষ্ট করতে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটাচ্ছে আমরা সেটা নিয়ে বার বার কথা বলে তার গুরুত্ব বাড়াচ্ছি। ইসলামে পরিস্কার বলা হয়েছে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। অতএব ধর্মীয়ভাবেও আমরা অসাম্প্রদায়িক। ভাষা আন্দোলনের চেতনাতো এটা না। ভাষা আন্দোলন হল বাঙালির সংস্কৃতি, ঐহিত্য ও অধিকারের আন্দোলন। তবে এখন দুঃখ হয় রেডিও, টেলিভিশনে রাজনৈতিক নেতা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সকলেই ভুল উচ্চারণ ও ইংরেজি, বাংলা মিলিয়ে কথা বলেন যা একজন ভাষা সৈনিক হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই শুদ্ধ বাংলার ব্যবহার ও প্রসার। কিন্তু এখন সেটা আর হয় না। আর যারা এ বিষয়ে কাজ করবেন তারাই এটি মানেন না। যা খুবই দুঃখজনক এবং একুশের চেতনার পরিপন্থী।
 
ক্ষোভ প্রকাশের পর ৫২’র উত্তাল দিন ও নারী হিসেবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতার কথা জিজ্ঞাসা করতেই নিরব হয়ে গেলেন এই ভাষা সৈনিক। তারপর আস্তে আস্তে বলা শুরু করলেন তিনি। ঐ সময়ে মেয়েদের পড়াশুনা করাটা খুব কষ্টের ছিলো। আমার বাড়ি ছিল খুলনার কাশিপুর মসজিদ বাড়ি। আমি বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতাম বলে আমাদের মসজিদের মোয়াজ্জেম ও গ্রামের লোকজন বাবাকে নানা বাজে কথা বলতো। একদিন তারা বলেই ফেললেন মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠানো হলে আমাদের পরিবারকে এক ঘরে করা হবে। বাবা সেদিন নামাজ পড়ে মন খারাপ করে বাড়ি ফিরে এলেন। কারোর সঙ্গে কথা না বলেই ছাতাটা নিয়ে বয়রায় বড় মামার বাসায় গেলেন। বড় মামা নারী শিক্ষার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তিনি বললেন, ধৈর্য্য ও সাহস ধরো সব ঠিক হয়ে যাবে। ইসলামে নারীদের পড়াশুনায় কোন বাঁধা নেই। বাড়ি ফিরে বাবা পরের দিন গেলেন করোনেশন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিস সুফিয়া আলীর নিকট। তিনি বললেন, সামাজিক এই অবস্থায় প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে হবে না। ও মাসে একবার আসবে। আর নিয়মিত পরীক্ষাগুলোই অংশ নেবে। বাড়িতে বসেই পড়াশুনা করবে ও। এভাবেই মাসে একবার ক্লাস করে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন তিনি। 

তিনি বলেন, তারপরও থামলো না দুষ্কৃতকারীদের অত্যাচার। মাধ্যমিক পাসের আগে তিন বার বই খাতা চুরি হয়ে গেলো। প্রথম চুরি হলো ছয় মাস আগে। পড়ার ঘরে গিয়ে দেখা গেল কোনো বই নেই। কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকদিন পরে মসজিদ পুকুরের পাশে ঝোঁপে পাওয়া গেল বই। তার দুই মাস পর আবার চুরি হলো বই। এবার পড়ার ঘরের তালা ভেঙ্গে চুরি করা হলো বই। পাওয়া গেল বাড়ির পাশে কালভার্টের নিচে। পরীক্ষার মাত্র এক মাস আগেও চুরি হলো বই। এমন অবস্থা হলো যে পরীক্ষা আর দেওয়া হবে না। হঠাৎ বাড়ির নারিকেল গাছের নারিকেল পারতে গিয়ে দেখা গেল মসজিদের ছাদে অনেক বই খাতা ছড়ানো। বইগুলো মাজেদা বেগমের। তারপর অনেকটা জেদ ধরেই পড়াশুনা করে ১৯৫১ সালে মাধ্যমিক পাশ করলাম। 

বাবা গেলেন বিএল কলেজে আই’এ (ইন্টারমিডিয়েট বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক) ভর্তি করার জন্য। বি এল কলেজের অধ্যক্ষ বললেন এখানে ছেলেরা পড়াশুনা করে। আপনি করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আর কে কলেজে যোগাযোগ করেন ওখানে মেয়েরা পড়াশুনা করে। যোগাযোগ করা হলো আর কে কলেজের অধ্যক্ষ অমূল্য ধন সিংহর সঙ্গে। তিনি কলেজে ভর্তি করলেন। কিন্তু প্রতিদিন দৌলতপুর থেকে ট্রেনে করে মাধ্যমিকে ক্লাস করা সম্ভব নয়। সমাজিক ও পারিবারিক অনেক চাপ আছে। তাই করোনেশন বালিকা বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মিস সুফিয়া বেগম বিদ্যালয়ে নারী হোষ্টেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। কমরেড শচীন বসুর স্ত্রী অনুপমা বসুর সহযোগিতায় রেলওয়ে বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করারও সুযোগ হল। অনুপমা দিদির হাত ধরেই তখন আস্তে আস্তে রাজনীতির সঙ্গে যোগ হল আমার। ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে ড. সানজিদা খাতুন ঢাকা থেকে চিঠি দিলেন খুলনায় ছাত্রী সংসদ গঠনের। ১১ সদস্যের একটি ছাত্রী সংসদ গঠন করা হলো খুলনায়। 

১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যার দিকে বিদ্যালয় থেকে ফেরার সময় দেখলাম গাজী শহীদুল্লাহ, মিজানুর রহিম, মালেক আতাহার সহ কয়েকজন ছাত্রনেতা কলেজ গেটে দাঁড়ানো। তখনও আমি জানি না ঢাকায় ২১ ফেব্রুয়ারির মিছিলে গুলি হয়েছে। রফিক, জব্বার সহ অনেক ছাত্রনেতা ও সাধারণ জনতা নিহত হয়েছেন। তাদের কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম এ ঘটনা। তারা বললেন আপনারা ছাত্রী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করবেন। সকল সহযোগিতা আমরা করব। আর শনিবার করোনেশন বালিকা বিদ্যালয়, রেলওয়ে বালিকা বিদ্যালয়, আর কে কলেজ ও হামিদ আলী বালিকা বিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে হবে।
 
তাদের নির্দেশ মত শুক্রবার সারা দিন রাত ছাত্রীদের বাড়ি গিয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হলো। পরিকল্পনা করা হলো কিভাবে সবাই একত্রিত হবে। কিভাবে বিদ্যালয়ের গেটে তালা মারা হবে। কিন্তু সমস্যা হলো হোষ্টেল থেকে এতো ভোরে বের হবেন কি করে? হোষ্টেলের চাবি থাকত দেবলা মাসির কাছে। দারোয়ান ছিল বচন মিয়া। করোনেশন বিদ্যালয়ের পেছনেই থাকতেন দেবলা মাসি। মেয়েরা সকলে মিলে দেবলা মাসির বাসায় গিয়ে বললেন ‘মাসি তুমি কাল স্কুলে যাবা না। তোমার খুব জ্বর হয়েছে বাসায় শুয়ে থাকবে। আর বচন মিয়া চাবি চাইলে বলবা চাবি খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা কালকে বিদ্যালয় ও কলেজ বন্ধ রাখবো। ঢাকায় ছাত্রদের উপর গুলি হয়েছে তার প্রতিবাদে। দেবলা মাসিকে বুঝিয়ে চাবি নিয়ে আসা হলো। ছাত্রনেতারা লাঠি সোটা, কাগজ, কালি ও চাটাই এর ব্যবস্থা করলেন পোষ্টার ও ফেস্টুন বানানোর জন্য। সারা রাত বসে ফেস্টুন ও পোষ্টার বানিয়ে ভোরে হেষ্টেলের বাথরুমের পাশে ছোট গেট দিয়ে মেয়েরা বাইরে বের হলো। অন্যান্য বিদ্যালয়ের মেয়েরাও স্বতস্ফূর্ত ভাবে অংশ গ্রহণ করলেন মিছিলে। প্রায় দেড়শত মেয়ে সেদিন মিছিলে ছিলেন এ সময় যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ডা. অতুলেন্দ্র দাসের তিন মেয়ে রত্না, খুকু ও ঝঞ্জা, ডা. মাহবুবের স্ত্রী রোকেয়া বেগম শিরী প্রমুখ। 

মিছিলটি করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে নিলা হল বর্তমান পিকচার প্যালেস হলের সামনে থেকে থানা হয়ে, ডিসি অফিসের সামনে দিয়ে সার্কিট হাউজ ঘুরে মহেন্দ্র হীল নারী পার্কে এসে শেষ হয় মিছিল। এটিই ছিল ভাষা আন্দোলনে নারীদের প্রথম মিছিল খুলনায়। মিছিলের পরপরই শুরু হয় তাদের উপর চাপ। তাদের একজন সহকর্মী ছিলেন কলেজের মসজিদের মোয়াজ্জেমের মেয়ে। মোয়াজ্জেম সাহেব খুব বকা ঝকা করলেন, মেয়েকে যা না তাই বললেন। আমাকে বললেন তুমি বড় নেতা হয়ে গেছ। পরে তাকে অবশ্য বড় ভাইরা হুমকি ধামকি দিয়ে ঠাণ্ডা করেন। রোববার সকালে কলেজের প্রিন্সিপাল অমূল্য ধন সিংহ তাকে রুমে ডেকে পাঠালেন। ভয়ে ভয়ে অধ্যক্ষের রুমে গেলে স্যার তাকে দেখে বলেন, তোমাকে আমি বকা ঝকা করতে ডাকিনি। তুমি একটি সাহসী কাজ করেছো। আমি তোমার প্রশংসা করছি। কিন্তু তোমাকে কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হবে। তখন আসলে আমি গা ঢাকা বলতে বুঝিনি। এই কারণে বোকার মত স্যারের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। 
স্যার কিছুক্ষণ পরে বললেন গা ঢাকা মানে হচ্ছে তুমি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে পারবা না। হোষ্টেলে বা বাড়িতে থাকতে পারবে না। কলেজেও ক্লাস করতে পারবা না। কয়েকদিন একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসো। আমি তখন অল্প বয়স কে আমাকে থাকতে দেবে। এই ভেবে খুব দুঃশ্চিন্তায় পরে গেলাম। পরে মুন্সিপাড়া এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠলাম। 

এই ছিল আমার ভাষা আন্দোলন ও জীবন সংগ্রামের কাহিনী। বলে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললেন বেগম মাজেদা আলী। তারপর বললেন এ দিয়ে কি হবে? ভাষা আন্দোলনের আদর্শই তো বাস্তবায়িত হলো না। তিনি বললেন আমাদের পুরনো লোক ও সরকার একসঙ্গে কাজ করে উদ্যোগ নিলেই বাস্তবায়ন সম্ভব। আমাদের সব কিছুই আছে শুদুমাত্র কার্যকর পদক্ষেপের অভাব। আমাদের ছোট ছেলে মেয়েরা  বাংলা বলতে পারে না, কিন্তু হিন্দি ও ইংলিশ বলতে পারে। কারণ তারা কার্টুন ও সিনেমা হিন্দি ও ইংরেজি দেখে। আমরা কি পারিনা এই কার্টুন ও সিনেমা বাংলায় অনুবাদ করে প্রচার করতে।
 
৫৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দেবার পর সাবেক স্পিকার রাজ্জাক আলীর (রাজ্জাক আলী তখন সাংবাদিক ছিলেন) সঙ্গে বিয়ে হয় বেগম মাজেদা আলীর। তারপর ঢাকায় চলে যান। বাবা ছিলেন শেখ আব্দুর জব্বার, মাতা দৌলতুন্নেসা। ১১ ভাই বোনের সবার বড় ছিলেন তিনি। ১৯৪১ সালে দৌলতপুর বিণাপানী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা শুরু হয় তার। ১৯৫১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন (বর্তমান মাধ্যমিক) পাশ করেন তিনি করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। ১৯৫৩ সালে আর কে কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ১৯৬৭ সালে এমএ পাশ করেন। ১৯৬৯ সালে বিনা বেতনে সুন্দরবন কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। সংসার জীবনে তিনি চার কন্যা সন্তানের মাতা। বড় কন্যা প্রফেসর ড. রুনা রাজ্জাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে আছেন। মেঝ মেয়ে ডা. সাহানা রাজ্জাক খুলনায় থাকেন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, সেজ মেয়ে ডা. এ্যানা রাজ্জাক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ জার্মানীতে থাকেন, ছোট মেয়ে লীনা রাজ্জাক ঢাকায় থাকেন চার্টার একাউন্টটেন্ড।
 
তিনি অনেক বই ও লিখেছেন। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ছোটদের কবিতার বই জীবনের উপপাদ্য, গৌধুলীর স্বপ্ন, ছোটদের ছড়ার বই, হাসির খুশির মেলা, হাসি খুশির খেলা, হাসি খুশির দোলা, প্রাক্তন শিক্ষিকাদের নিয়ে খুলনার শিক্ষিকা পরিচিতি, প্রজন্ম ৭১ প্রমুখ। তিনি খুলনা মহিলা সমিতি,  ও লেখিকা সংঘেরও প্রতিষ্ঠাতা। 

বিএস