গাজীপুরে মানুষের রক্ত শুদ্ধিকরণ ও যৌন শক্তি বৃদ্ধিকরণ বটিকাসহ কোটি টাকার ভেজাল ওষুধ জব্দ করেছে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় ওষুধ তৈরির কারখানা মালিক ও কারখানার অর্থ যোগানদাতাকে আটক করা হয়।
বুধবার (৬ মার্চ) গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংএ এ তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. রুহুল আমিন সরকার।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) ড. রুহুল আমিন সরকার জানান, গাজীপুর মহানগরীর ভুরুলিয়া এলাকার একটি ভবনে কারখানা স্থাপন করে সরকারি কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন মানুষের ও পশুর চিকিৎসার জন্য নানা ধরণের ভেজাল ওষুধ তৈরি করছিল একটি চক্র। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিকেলে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালিয়ে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন কেমিক্যাল ও উৎপাদিত ভেজাল ওষুধসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ কারখানার মালিক মো. রাব্বানী (৩৮) ও কারখানার অর্থ যোগানদাতা আব্দুস সালামকে (৪২) আটক করা হয়। রব্বানী রংপুরের মিঠাপুকুর থানার রাণীপুকুর গ্রামের মৃত আকমল হোসেনের ছেলে এবং সালাম পশ্চিম ভুরুলিয়া এলাকার ময়লার টেকের মজিবর রহমানের ছেলে। আটকরা বিভিন্ন প্রকার কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থের সঙ্গে কৃত্রিম রং মিশিয়ে মানুষের রক্ত শুদ্ধিকরণ বটিকা, বিভিন্ন চর্মরোগের মলম, যৌন শক্তি বৃদ্ধিকরণ বটিকা, চুলপড়া বন্ধের তৈল, হাঁস-মুরগি ও কবুতরের কলেরা, বসন্ত, রাণীক্ষেত এবং ডাক প্লেগসহ পশু ও মাছের বিভিন্ন ভেজাল ওষুধ তৈরি করে তা সারাদেশে বিতরণ ও বিক্রি করে আসছিল।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ক্রাইম) শরিফুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন কেমিক্যাল উচ্চতাপে বিপদজনকভাবে গলানো হয়। পরে আটা, রং, ভিনেগার, কৃত্রিম ফ্লেভার, মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয় ভেজাল ওষুধ। পরবর্তীতে মানুষ ও পশুপাখির চিকিৎসার জন্য এসব ওষুধ বিক্রির উদ্দেশ্যে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হত। প্রেসব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আরিফুল হক।
অপরদিকে ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করার অভিযোগে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত ১২টার দিকে মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তার কাছে বর্ষা সিনেমা হল সংলগ্ন একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মো. ওসমান গণি (২২) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার বরইকান্দি গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে।
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. রুহুল আমিন সরকার জানান, ৫শ’ টাকার বিনিময়ে তারা ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতো। অভিযানকালে তার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র বানানোর কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার, ক্যামেরা, লেমিনিটিং মেশিনসহ বিভিন্ন মালামাল জব্ধ করা হয়। এসব ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এসসি/