• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ২০, ২০১৯, ০৮:৪৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২০, ২০১৯, ০৮:৪৫ পিএম

সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার প্রসঙ্গ আলোচনায়

সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার প্রসঙ্গ আলোচনায়

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিচার কাজের স্বচ্ছতা বাড়াতে কিছু কিছু মামলা সরাসরি সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত হয় সেপ্টেম্বরে। তবে বাংলাদেশের আইন ও আদালত অঙ্গনে এ বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক এক বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশ ভারতের উদাহরণটি সামনে আসছে। বিজ্ঞপ্তিতে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করা থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হয়।

শুধু পার্শ্ববর্তী দেশ নয়, নিজ দেশের সংবিধানের আরেক স্তম্ভ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনও সরাসরি সম্প্রচার করা হয় টেলিভিশনে। আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে এই বিষয়টিও।
   
তাছাড়া বিচারিক কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি চেয়ে আট বছর আগে  বিটিভি ও সময় টেলিভিশনের করা আবেদনের প্রসঙ্গটিও সামনে আসছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন,আদালতের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারে সাধারণ মানুষ বা দর্শকের চাহিদা আছে বলেই সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশন থেকে প্রায় এক দশক আগে এই আবেদন করা হয়েছিলো।

স্বচ্ছতা বাড়াতে এবং আদালত কক্ষে ভিড় কমাতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কিছু কিছু মামলা সরাসরি সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর দেশটির  সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলেন, প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এ ব্যবস্থা চালু করা হবে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা হবে।

ভারতে আদালত কক্ষ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলেও সেখানে ভিডিও রেকর্ডিং বা মামলার শুনানির সরাসরি সম্প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল এর আগে। তবে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত থেকে জনস্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর লাইভ টিভি সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশনের সরাসরি সম্প্রচার যেমনভাবে হয় এটিও করা হবে ঠিক সেভাবেই।

আদালতের ১০৬ পাতার নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘জনগণের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে আদালতের কার্যক্রম প্রকাশ্যে আনতে সরাসরি সম্প্রচারের এ ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

‘এতে আদালতের কাজকর্মের স্বচ্ছতার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস বাড়াবে এবং সুশাসন ও জবাবদিহিতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে দাঁড়াবে। তার ওপর এ পদক্ষেপ আদালত কক্ষের দৃশ্য সবার সামনে নিয়ে আসবে।’

প্রথমে সাংবিধানিক ও জাতীয় ভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিছু মামলা বাছাই করে আইনানুগভাবে সেগুলোর বিচার কাজ সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।

প্রাথমিকভাবে আদালত কক্ষের দৃশ্য আদালত প্রাঙ্গণের মধ্যেই কোথাও বড় স্ক্রিনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। পরে ইন্টারনেটেও এ ভিডিও প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে এ প্রকল্পের নিয়মকানুন তৈরি করতে বলেছে।

তবে যৌন নিপীড়ন বা শিশু নির্যাতনের মত সংবেদনশীল মামলাগুলো এ প্রকল্পের বাইরে রাখা হবে বলে জানান সরকারি আইনজীবী শ্রদ্ধা দেশমুখ।

এদিকে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশের  প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ল' রিপোর্টার্স ফোরামের নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বলেছিলেন, ‘আদালতে যা দেখবেন তাই লিখবেন।’ 

এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পরের বছর ২০১১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি চেয়ে  আবেদন করেছিলো বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভি।

চলতি দশকের শুরুর দিকেই জনগণের আগ্রহের কারণ উল্লেখ করে বিটিভি এবং সময় টেলিভিশন এই বিচার সম্প্রচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে। 

সময় টেলিভিশন এর বার্তা প্রধান তুষার আব্দুল্লাহর স্বাক্ষরিত একটি আবেদনে ওই বছরের ২৬ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে বিচার কার্যক্রম সম্প্রচারের অনুমতি চাওয়া হয়।পরেরদিন  ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক আবু জাফর সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে (স্মারক নং বিটিভি/প্রশা/৪৬২/৪৩১০) যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি জামায়াত নেতা সাঈদীসহ অভিযুক্ত নয় জনের পুরো বিচার কার্যক্রম সম্প্রচারের আবেদন জানান। 

জনগণের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে ওই আবেদনে বলা হয়,যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে জনগণের আগ্রহ রয়েছে। আমরা এ বিষয়টি বিবেচনা করে বিচার কার্যক্রম সম্প্রচারের আবেদন করছি।

এমএ/বিএস