• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০১৯, ০১:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৩, ২০১৯, ০৩:২৩ পিএম

পূর্বাচল নতুন প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা জানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

পূর্বাচল নতুন প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা জানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ


আদালতের রায়ের (পাঁচ বছর আগে দেয়া) পর এ যাবত পূর্বাচল নতুন প্রকল্পের বিষয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) যতগুলো বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে তার সবগুলোর অনুলপি চেয়েছে হাইকোর্ট। 

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো.আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার এই আদেশ দেয় আদালত। 

আদেশে খেলার মাঠ, বন, উন্মুক্ত স্থান, পার্ক, জলাশয় এসব এরিয়া চিহ্নিত করে চতুর্থ লে-আউট প্ল্যান ও প্রস্তাবিত পঞ্চম সংশোধিত লে-আউট প্ল্যান আদালতে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রাজউককে দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে।

আদালতে বুধবার রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ কবীর। অন্যদিকে, রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানজিব-উল-আলম।

আইনজীবী সাঈদ আহমেদ কবীর সাংবাদিকদের বলেন, মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সাতটি সংগঠনের দায়ের করা জনস্বার্থের এক মামলায় ২০১৪ সালের ১৩ মার্চ দেয়া রায়ে হাইকোর্ট পূর্বাচল প্রকল্পের জন্য রাজউকের চতুর্থ সংশোধনী লে-আউট প্ল্যানের অনুমোদন দেন। ওই রায়ে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়ে বলেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া অনুমোদিত চতুর্থ সংশোধিত লে-আইট প্ল্যানে চিহ্নিত বন, লেক, খাল, পার্ক, খেলার মাঠ ও উদ্যান, সবুজ বেষ্টনী ও নগরায়নের জন্য করা সবুজ আচ্ছাদনে কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না রাজউক।

কিন্তু দেখা যায়, ২০১৮ সালের নভেম্বরে চতুর্থ সংশোধিত লে-আউট প্ল্যানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে নতুন প্লট সৃষ্টির জন্য পঞ্চম সংশোধনী প্ল্যান অনুমোদনের জন্য আদালতে আবেদন করে রাজউক। রাজউকের সেই পঞ্চম সংশোধনী প্ল্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, তিনটি (১০০ তলা বিশিষ্ট ভবন, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ও রাজউকের কেন্দ্রীয় স্ট্যার্কইয়ার্ড) নতুন স্থাপনার জন্য পূর্বাচলের চতুর্থ সংশোধিত প্ল্যানে ২১ রকম ভূমি ব্যবস্থাপনার ২০টিতেই পরিবর্তন আনার প্রস্তার করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, চতুর্থ সংশোধিত লে-আউট প্ল্যানের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে খেলার মাঠ (প্রায় ১৪০ একর) সরিয়ে অন্য জায়গায় বরাদ্দ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল রাজউকের প্রস্তাবিত পঞ্চম সংশোধনী প্ল্যানে। ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রাজউকের পঞ্চম সংশোধনী লে-আইট প্ল্যানটি কার্যত বাতিল করে দেন।

প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে কেবল ১০০ তলা ভবনের অনুমোদন দেয়া যেতে পারে বলে আদেশ দেন আদালত। সেখানে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয় যে, চতুর্থ সংশোধনীতে যেখানে বাণিজ্যিক এলাকা দেখানো আছে শুধুমাত্র সেখানেই এ ১০০ তলা ভবনের জন্য অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। তবে খেলার মাঠ, সবুজ বেষ্টনী, জলাশয়সহ অন্য ২০টিরও ভূমি ব্যবহারে কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না।

হাইকোর্টের এই আদেশের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় যে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বনের জায়গা কমিয়ে নতুন প্লট তৈরির অনুরোধ জানিয়ে কয়েক দফা চিঠি দিয়েছে। এছাড়াও আদালতের অনুমোদিত প্ল্যানে ব্যত্যয় ঘটিয়ে ৮৪টি প্লটও বরাদ্দ দিয়েছে।

মামলাটি চলমান থাকায় রাজউকের এসব সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত এপ্রিলে সাতটি সংগঠনের পক্ষে একটি আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এই আদেশে দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী।

এমএ/আরআই