• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০১৯, ০২:২৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৩, ২০১৯, ০২:২৯ পিএম

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে হাইকোর্ট

‘বাসায় গিয়ে রান্নাবান্নার কাজ করুন’

‘বাসায় গিয়ে রান্নাবান্নার কাজ করুন’


উচ্চ আদালতের আদেশের পরও বাজার থেকে মানহীন ৫২ পণ্যের কোনটিই সরাতে না পারায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। এ সময় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে তাদের আইনজীবীকে আদালত বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অফিসে থাকার দরকার কী? বাসায় গিয়ে রান্নাবান্নার কাজ শুরু করুন।'

আজ বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

এ সময় সংস্থাটির আইনজীবীকে আদালত আরও বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ মানেনি। এখনও মানহীন পণ্য বাজারে আছে। আমাদের ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না, ৫২ পণ্য নিয়ে হাইকোর্টকে কি হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন?’

পরে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে তলব করে হাইকোর্ট। আগামী ১৬ জুন তাকে আদালতে হাজির হয়ে বাজার থেকে ৫২টি পণ্য না সরানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

এছাড়া নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলা কেন অবৈধ হবে না- জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে হাইকোর্ট। আদেশে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।একই সঙ্গে ভোক্তা অধিকারকে আগামী ২ দিনের মধ্যে নিম্নমানের সকল পণ্য বাজার থেকে সারাতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ১২ মে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় প্রমাণিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য বাজার থেকে দ্রুত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিলো হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তখন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে এ নির্দেশ পালন করে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। পাশাপাশি পণ্যগুলোর বিষয়ে যথাযথ আইন অনুসারে তা নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট ভেজাল পণ্যের মানোন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত তা উৎপাদন ও বাজারজাত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
 
কিন্তু আদালতের সেই আদেশ প্রতিপালন না করায় বৃহস্পতিবার নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে তলব করলো হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিএসটিআই ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। যেখানে ৫২টি প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিম্নমানের ও সেখানে ভেজাল রয়েছে বলে জানানো হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের এ রিপোর্ট প্রকাশ করে বিএসটিআই। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

বিএসটিআই এর প্রতিবেদনে ভেজাল খাদ্যপণ্য হলো— সিটি ওয়েলের সরিষার তেল, গ্রিন ব্লিচিং এর সরিষার তেল, শমনমের সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের সরিষার তেল, কাশেম ফুডের চিপস, আরা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার, আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার, মিজান  ড্রিংকিং ওয়াটার, মর্ন ডিউয়ের  ড্রিংকিং ওয়াটার, ডানকান ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, আরার ডিউ  ড্রিংকিং ওয়াটার, দিঘী  ড্রিংকিং ওয়াটার, প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, ডুডলি নুডলস, শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার, জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ড্যানিশের হলুদের গুড়া, প্রাণের হলুদ গুঁড়া, ফ্রেশের হলুদ গুঁড়া, এসিআইর ধনিয়ার গুঁড়া, প্রাণের কারি পাউডার, ড্যানিশের কারি পাউডার, বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচ গুঁড়া, মিস্টিমেলা লাচ্ছা সেমাই, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মিঠাইর লাচ্ছা সেমাই, ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, এসিআইর আয়োডিন যুক্ত লবণ, মোল্লা সল্টের আয়োডিন যুক্ত লবণ, কিং- এর ময়দা, রূপসার দই, মক্কার চানাচুর, মেহেদীর বিস্কুট, বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, নিশিতা ফুডস এর সুজি, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মঞ্জিলের হলুদ গুঁড়া, মধুমতির আয়োডিন যুক্ত লবণ, সান ফুডের হলুদ গুঁড়া, গ্রিন লেনের মধু, কিরনের লাচ্ছা সেমাই, ডলফিনের মরিচের গুঁড়া, ডলফিনের হলুদের গুঁড়া, সূর্যের মরিচের গুঁড়া, জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, দাদা সুপারের আয়োডিন যুক্ত লবণ, মদিনার আয়োডিন যু্ক্ত লবণ এবং নূরের আয়োডিন যুক্ত লবণ। 

এমএ/আরআই