• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৯, ২০১৯, ০৬:১৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৯, ২০১৯, ০৬:১৪ পিএম

প্রতিক্রিয়া

‘ঢাকা ওয়াসা দু’ভাগ হলে নগরবাসীর সুবিধা বাড়বে’ 

‘ঢাকা ওয়াসা দু’ভাগ হলে নগরবাসীর সুবিধা বাড়বে’ 

ঢাকা সিটি করপোরেশনের মতো ঢাকা ওয়াসাকেও দুইভাগে বিভক্ত করার প্রস্তাবের পর বিভিন্ন মহল থেকে নানা রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। সম্প্রতি জাতীয় প্রেস ক্লাবে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাসযোগ্য নগর’ শীর্ষক বৈঠকে জনস্বার্থে সরকার চাইলে নগরবাসীর সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা ওয়াসাকে বিভক্ত করা যেতে পারে বলে মতপ্রকাশ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, নগরবাসীর সুবিধার কথা ভেবেই সরকার ঢাকা ওয়াসাকে বিভক্ত করার জন্য (গত ১৬ মে) সংসদীয় কমিটিও মতামত দিয়েছে। সরকার ওয়াসাকে দু’ভাগে বিভক্ত করলে জনস্বার্থে করবে, এটার প্রতি জনগণের সমর্থন থাকলে তার সমর্থনও থাকবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম দৈনিক জাগরণকে বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিলে সব কিছুই করা সম্ভব। ঢাকা সিটি করপোরেশনকে বিভক্ত করার সময় পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথা উঠেছিল। কিন্ত বিভক্ত হওয়ার পর জনসাধারণ যখন সুবিধা পাচ্ছে তখন নগরবাসীও সাধুবাদ জানিয়েছেন।

অনুরূপ ঢাকা ওয়াসাকে বিভক্ত করার পর নগরবাসী সাধুবাদ জানাবে বলে বিশ্বাস এই নগর পরিকল্পনাবিদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহ করতে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয় সংসদীয় কমিটির তরফ থেকে। সেই আলোকেই ঢাকা ওয়াসাকে বিভক্ত করার চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে। এদিকে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান ওই দিনের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। এ কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটি।

এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান দৈনিক জাগরণকে বলেন, একজন মানুষের বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। সমস্যার কারণে মিটিং এ উপস্থিত হতে পারিনি। তারমানে এই নয় ওয়াসাকে বিভক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার চাইলে ওয়াসাকে দু’ভাগ করতে পারেন। এখানে তার কোনও ব্যক্তিগত মতামত নেই। জনস্বার্থে সরকার যে কোনও কাজ করলে আমি সাধুবাদ জানাবো।

সাবেক প্রধান হুইপ আবদুস শহীদ ঢাকা ওয়াসাকে বিভক্ত করা প্রসঙ্গে বলেন, যেহেতু ঢাকা অনেক বড় শহর। সিটি করপোরেশনও দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছে। সব জনগণের সেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। এখন স্থানীয় সরকার বিষয়টি ভেবে দেখবে। রাজধানীর প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি মানুষের জন্য পানি সরবরাহ করে ঢাকা ওয়াসা। কিন্তু সেই পানিতে ময়লার সঙ্গে দুর্গন্ধসহ নানা সমস্যার অভিযোগ অনেক পুরনো। ঢাকায় দৈনিক বিশুদ্ধ পানির চাহিদা ২৩০-২৩৫ কোটি লিটার। ওয়াসা গভীর নলকূপ থেকে তুলে ১৭০ কোটি লিটার এবং বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পানি শোধন করে আরও ৬০ কোটি লিটার পানির যোগান দিয়ে আসছে। কিন্তু অনেক এলাকায় সরবরাহ লাইনে ত্রুটির কারণে পরিশোধিত পানি বাসার কলে আসার সময় নিয়ে আসে ময়লা আর দুর্গন্ধ। ওই পানি ফোটালেও দুর্গন্ধ দূর হয় না সব সময়। ওয়াসার ওই পানি পেটের পীড়াসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ভুক্তভোগী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আদাবর ১ নম্বর রোর্ডের ২৬৪ নম্বর বাড়ির ফয়সল আহমেদসহ একাধিক বাসিন্দা দৈনিক জাগরণকে বলেন, কে কিভাবে সেবা দিল সেটা বড় কথা নয়, আমরা চাই উন্নত সেবা। সে ক্ষেত্রে ওয়াসাকে দুই ভাগ করে সেবার মান আরও বাড়ানো যায়, তাহলে তো ভালোই হয়। ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্তির পর নাগরিকদের সেবার মান বেড়ে থাকলে, ঢাকা ওয়াসারও সেবার মান বাড়বে। আশা করি, এ সব সুদূর প্রসারিত চিন্তা-ভাবনা থেকেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রকৃত কাজে হাতে দেবেন। 

টিএইচ/এসএমএম