• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১১, ২০১৯, ০১:৪৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১১, ২০১৯, ০১:৪৮ পিএম

খালেদার বিচারে কারাগারে আদালত

রিট শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে যাওয়ার আদেশ

রিট শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে যাওয়ার আদেশ

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচারে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর আদালত স্থাপনে জারি করা প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার চেয়ে করা রিটের শুনানি নিয়মিত বেঞ্চে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন অবকাশকালীন বেঞ্চ। 

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়।

খালেদা জিয়ার পক্ষে আজ আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মওদুদ আহমদ ও এ জে মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

গতকাল সোমবারও মামলাটি শুনানির জন্য এই বেঞ্চে ওঠে। তখন শুনানিতে সাপ্লিমেন্টারি নথিপত্র এফিডেভিট আকারে দাখিলের জন্য কয়েক ঘণ্টা সময় প্রার্থনা করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর আদালত শুনানির জন্য মঙ্গলবার (আজ) পর্যন্ত মুলতবি করে আদেশ দেয়।

এর আগে গত ২৬ মে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামালসহ অন্য আইনজীবীরা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিটটি করেন। পরের দিন সোমবার (২৭ মে) রিটের শুনানি করতে গেলে মামলায় হাইকোর্টের আদেশের পর দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পক্ষভুক্ত করা হয়।

এর পরের দিন (২৮ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে মামলাটি শুনানি শুরু করে ১০ জুন পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। সে অনুযায়ী গতকাল শুনানি না হয়ে আজ (মঙ্গলবার) শুনানির জন্য দিন ঠিক করেন আদালত।

খালেদার পক্ষে দায়ের করা রিটে দাবি করা হয়েছে, গত ১২ মে জারি করা গেজেট সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ-বহির্ভূত একটা পদক্ষেপ। পাশাপাশি প্রচলিত ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ধারা ৯ এর (১) ও (২) উপ-ধারাবিরোধী।

নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিচারে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিশেষ জজ আদালত-৯ কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে স্থানান্তরে গত ১২ মে জারি করা গেজেট কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল চাওয়া হয় ওই রিটে। রুলের নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত জারি করা ওই গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে।

রিটে স্বরাষ্ট্রসচিব ও আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল।

কায়সার কামাল বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে রিটটি দায়েরের পর তা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমদ, এ জে মোহাম্মদ আলী সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলাটি উপস্থাপন করেছিলেন। তাই আদালতে রিট গ্রহণ করে শুনানির জন্য বলেছেন।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালদা জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তিনি অসুস্থ হয়ে পিজিতে আছেন। সাম্প্রতিক সময়ে অর্থাৎ গত ১২ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে উনার (খালেদা জিয়ার) নাইকো মামলাটি নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত থেকে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক এ আইনজীবী আশা করছেন, খালেদা জিয়া করাকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ থেকে ন্যায়বিচার পাবেন এবং কেরানীগঞ্জের কারাগার যে আদালত স্থাপন করা হয়েছে সেটা হাইকোর্ট বাতিল করবেন।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া একজন পাবলিক ফিগার। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর যেকোনো ট্রায়াল পাবলিকলি হওয়া উচিত। কেরানীগঞ্জের কারাগারের একটি রুমে কখনও পাবলিক ট্রায়াল হতে পারে না। পাশাপাশি যে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কেরানীগঞ্জের কারাগারে আদালত স্থাপন করা হয়েছে, সেই কারাগারটি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে। আইনে আছে, মামলাটা মেট্রোপলিটন এলাকার মধ্যে হতে হবে।

এর আগে আদালত স্থানান্তরে জারি করা গেজেট বাতিল চেয়ে গত ২১ মে আইন সচিবকে আইনি নোটিশ দেয়া হয়। সে নোটিশে গত ১২ মে জারি করা গেজেট বাতিলে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে গত ১২ মে জারি করা এ-সংক্রান্ত গেজেটটি প্রত্যাহার বা বাতিল না করা হলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। সে অনুযায়ী সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে কোনো জবাব না পেয়ে ২৬ মে রিট আবেদন করা হয়।

ওইদিন সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করে কায়সার কামাল বলেছিলেন, এ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, যে কোনো বিচার হতে হবে উন্মুক্তভাবে। কারাগারের একটি কক্ষে উন্মুক্তভাবে বিচার হতে পারে না। ফলে এই প্রজ্ঞাপন সংবিধানবিরোধী।

এমএ/আরআই