• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০১৯, ০৪:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৪, ২০১৯, ০৫:৪২ পিএম

দুদক-পুলিশের ঘুষকাণ্ড : শর্ষের মধ্যেই ভূত!

দুদক-পুলিশের ঘুষকাণ্ড : শর্ষের মধ্যেই ভূত!

দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির এবং ডিআইজি মিজানুর রহমান এখন দেশের গণমাধ্যমগুলোর প্রধান শিরোনাম। একজন দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক; আরেকজন পুলিশের বড় কর্মকর্তা। নারী নির্যাতন, নারীঘটিত কেলেঙ্কারি এবং দুর্নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচিত ও বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানের  ‘অবৈধ সম্পদের‘  অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে তার পক্ষে রিপোর্ট করিয়ে নিতে চেয়েছিলেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। রিপোর্ট পক্ষে না আসায় ঘুষ দেওয়ার তথ্য-প্রমাণ গণমাধ্যমের সামনে হাজির করেন মিজানুর রহমান নিজেই।

পুলিশের একজন বড় কর্মকর্তা দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বাঁচতে ঘুষ দেন। তিনি সেই ঘুষ কাকে দিলেন? যিনি দেশ থেকে দুর্নীতি দমনকাজে নিয়োজিত, সেই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালককে। যারা আইনের রক্ষক, যারা সমাজ থেকে দুর্নীতির মূলোচ্ছেদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তি-- তারাই এই অনৈতিক ঘুষ চালাচালির মূলহোতা। আমরা এখানে সাধারণ মানুষ দর্শকমাত্র। দেখা ছাড়া করার কিছু নেই। শর্ষের মধ্যেই যদি ভূত লুকানো থাকে, তা হলে আমরা সাধারণ মানুষ যাব কোথায়!

দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির : ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে দুদক পরিচালক এনামুল বাছির খুবই অন্যায় কাজ করেছেন। এ অন্যায়কে কোনোভোবেই মেনে যায় না। মেনে নেয়া উচিত নয়। দেশে দুর্নীতি দমন কার্যক্রম গতিশীল ও অর্থবহ করতে ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সৃষ্টি করা হয়। অথচ সেই প্রতিষ্ঠানেরই এক পরিচালক আজ দুর্নীতির পঙ্কে নিমজ্জিত। সেটা নিয়ে সমাজে নানা প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। কিছুদিন আগেও বিনা অপরাধে তিন বছর জেল খাটা জাহালমের বিষয়েও দুর্নীতি দমন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে দেশে তুমুল তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল।


 
দুদক একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। যে উদ্দেশ্যে এ প্রতিষ্ঠানের জন্ম, সে উদ্দেশ্য ক্ষুণ্ন হোক এবং এর ভাবমূর্তি সাধারণ মানুষের কাছে খারাপ হোক-- তা কারো কাম্য হতে পারে না। তাই দুদক ও পুলিশের উভয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি দেশবাসীর। এক্ষেত্রে এনামুল বাছিরের বরখাস্তই যথেষ্ট নয়। অথচ দুদক শুধু তার বরখাস্তের কাজটিই করেছে। দুদকের এমন অবস্থানে দেশবাসী শুধু হতাশ ও মর্মাহতই নয়, বরং দেশে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ নিয়েও তারা রীতিমতো শঙ্কাবোধ করছে। একজন উচ্চপদস্থ তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণসহ দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর তাদের প্রত্যাশা ছিল, দুদক একে একটা প্রাতিষ্ঠানিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবে এবং তাদের অন্য কোনো কর্মকর্তাও যে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত নন তা নিশ্চিত করতে দৃশ্যমান, বিশ্বাসযোগ্য ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। দুদক নিজেই যদি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে, তা হলে তাদের কার্যক্রমের ওপর জনগণের আস্থা থাকবে কী করে? কী করে তারা দেশের দুর্নীতি দমন করবে?

ডিআইজি মিজান : মিজানুর রহমানের কাণ্ড আরও ভয়াবহ। তিনি ডিআইজি পদমর্যাদার একজন বড় কর্মকর্তা। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পর তাকে পদ থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ তিনি ঘুষ দেওয়ার কথা, তাও আবার ৪০ লাখ টাকার মতো বড় অংকের টাকা দিয়ে নিজের সেই অডিও ক্লিপ ফাঁস করে যে ঔদ্ধত্যের পরিচয় দিয়েছেন, তা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তিকে চরম আঘাত করেছে বলেই প্রতীয়মান। দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাসপেন্ড করা হলেও হেডকোয়ার্টার্সে সংযুক্ত মিজানের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

দুদক পরিচালক ঘুষ নিয়ে খুবই অন্যায় কাজ করেছেন। তার বিচার হবে। কিন্তু যিনি ঘুষ দিলেন এবং বুক ফুলিয়ে সেটা বলে বেড়ালেন; সেই মিজান কিন্তু এখনও বহালতবিয়তেই আছেন। তাই ডিআইজি মিজানের ঘুষ দেওয়া নিয়ে অনেক প্রশ্ন জনমানুষের। প্রথম প্রশ্ন হলো- ডিআইজি মিজান যদি নির্দোষ হন, তা হলে তিনি ঘুষ দিলেন কেন? নিশ্চয়ই নিজের সম্পদের পাহাড় আড়াল করতেই ঘুষ দিয়ে তিনি দুদক পরিচালকের মুখ বন্ধ রাখতে চেয়েছিলেন। দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো-- মিজান কত টাকা আড়াল করতে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন? তার চেয়ে বড় কথা হলো, তার সব অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হওয়া সত্ত্বেও ঘুষ দেওয়ার জন্য ৪০ লাখ টাকা তিনি কোথা থেকে পেলেন? পুলিশের এই পদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরই দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় হয়ে যাচ্ছে। অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, সিনিয়র পর্যায়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তা এমন বেপরোয়া হলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? কোথায় ভরসা পাবে তারা?

ওসি মোয়াজ্জেম : দেশের আলোচিত ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা-মামলার আসামি সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! খোদ তার আইনজীবীও সাংবাদিকদের বলেছেন, হাইকোর্টে জামিন আবেদনের পরে মোয়াজ্জেম হোসেন তাকে (আইনজীবী) আর ফোন করেননি। তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরতে পারছে না। কারণ তিনি লাপাত্তা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন,  ‘ওসি পালিয়ে থাকলে খুঁজে পেতে হয়তো একটু সময় লাগবে। তবে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।’ ভরসা এখানেই।

একদিকে যখন পুলিশের একজন ডিআইজি নিজের সম্পদ আড়াল করতে ঘুষ দিচ্ছেন, তখন পুলিশেরই আরেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আসলে নুসরাত হত্যার মামলাই হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তাকে বাঁচিয়ে দেওয়ার সব চেষ্টাই করা হয়েছে। বেঁচেও গিয়েছিলন তিনি। তাকে সোনাগাজী থেকে ক্লোজ করে রংপুরে পাঠানো হয়। ক্লোজ করাকে সাধারণ মানুষের কাছে কখনোই শাস্তি বলে মনে হয় না। ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পেয়ে গত ২৭ মে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ৩১ মে পরোয়ানাটি ফেনীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পৌঁছায়। কিন্তু ফেনীর পুলিশ সুপার কাজী মনির-উজ-জামান বারবার পরোয়ানাটি হাতে পাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত ৩ জুন গ্রেফতারি পরোয়ানা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি। তারও দুদিন পর বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে পরোয়ানাটি রংপুর রেঞ্জে পাঠানো হয়। ফেনী আর রংপুর পুলিশের এই টালবাহানা দেখেই দেশবাসীর তখন সন্দেহ হচ্ছিল, তারা ওসি মোয়াজ্জেমকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন না তো? তাদের সে শঙ্কাই পরে সত্যি হয়েছে। এখন আর ওসি মোয়াজ্জেমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

মোয়াজ্জেম এবং মিজানের কর্মকাণ্ড পুলিশবাহিনীর দুটি দিক মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। মোয়াজ্জেম একজন পুলিশ কর্মকর্তা, সাধারণ মানুষ নন; কোনো সাধারণ অপরাধীও নন। গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে তিনি পালিয়ে যাবেন কেন? তিনি একটি শৃঙ্খলা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হিসেবে সৎ সাহস নিয়ে আইনের মুখোমুখি হবেন। এই যে তার পালিয়ে যাওয়া, আইনের কাছে সোপর্দ না করা, তাকে পালাতে সাহায্য করা-- প্রতিটি কাজেই পুলিশবাহিনীর সদস্যদের নৈতিক সাহস ও মূল্যবোধ এবং বাহিনীর ভেতরকার শৃঙ্খলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বস্তুত মোয়াজ্জেম হোসেন শত শত পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি ছোট্ট রিফ্লেকশন। দেশের প্রতিটি বিভাগে, জেলা-উপজেলায়, থানায় থানায় এ রকম মোয়াজ্জেমের সংখ্যা অগণিত। বরং রাষ্ট্রের শীর্ষমহল নুসরাত ইস্যুতে সংবেদনশীল এবং সিরিয়াস বলেই এই পুলিশ কর্মকর্তা মূলত ’ধরা খেয়ে’ গেছেন!

ডিআইজি মিজানের ঘুষকাণ্ড এবং ওসি মোয়াজ্জেমের লাপাত্তা হওয়ার ঘটনা পুরো পুলিশবাহিনীকে আজ বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। গত বুধবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় একাধিক কর্মকর্তা ডিআইজি মিজান ও ওসি মোয়াজ্জেমকে নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগের কারণে গোটা বাহিনীর ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে পদস্থদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এমনকি এক বছরের বেশি সময় আগে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি ২০৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করেছিল, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফাইলবন্দি থাকায় সেটাও আলোচনায় স্থান পায়। 

দেশে ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাধি অতি পুরনো। আমাদের দেশে ব্রিটিশ শাসনামলে তাতে নতুন মাত্রিকতা যুক্ত হয়েছিল। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা ঘুষ-দুর্নীতিকে রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি হাতিয়াররূপে ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। শাসনযন্ত্রের তৃণমূল স্তর থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত তারা এর প্রসার ঘটিয়েছিল। ঘুষ-দুর্নীতি রাষ্ট্রীয় কর্মপরিচালনার একটি উপাদান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার একটি অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছিল। অবশ্য ঘুষ-দুর্নীতির কর্মকাণ্ড যেন লাগামহীন পর্যায়ে গিয়ে চরম নৈরাজ্যমূলক না হয়ে উঠতে পারে, সেজন্য সেই ব্রিটিশরাই আবার ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন, বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থাও প্রবর্তন করেছিল। অবশ্য সে ক্ষেত্রে আবার বিত্তবান-প্রভাবশালীরা যেন আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে, তার ব্যবস্থাও তারা করে রেখেছিল। ব্রিটিশ শাসকদের প্রবর্তিত ঘুষ-দুর্নীতির সেই ধারা আজ আমাদের দেশেও অব্যাহত। আজ বাজার-অর্থনীতির অভিঘাত সমাজে ঘুষ-দুর্নীতির মাত্রা ও প্রকার নতুন মাত্রিকতায় নিয়ে গেছে। 

....................

 মোয়াজ্জেম  হোসেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা, সাধারণ মানুষ নন; কোনো সাধারণ অপরাধীও নন।  বস্তুত মোয়াজ্জেম হোসেন শত শত পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি ছোট্ট রিফ্লেকশন। দেশের প্রতিটি বিভাগে, জেলা-উপজেলায়, থানায় থানায় এ রকম মোয়াজ্জেমের সংখ্যা অগণিত। বরং রাষ্ট্রের শীর্ষমহল নুসরাত ইস্যুতে সংবেদনশীল এবং সিরিয়াস বলেই এই পুলিশ কর্মকর্তা মূলত ’ধরা খেয়ে’ গেছেন!

....................

 আমাদের পুলিশ বাহিনীতে সৎ, দক্ষ ও কর্মনিষ্ঠ সদস্যের অভাব নেই। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিকভাবে তাদের মূল্যায়ন করা হয় না। আর অভিযুক্ত সদস্যদের পক্ষ সমর্থন বা তাদের অপরাধ ভুক্তভোগীদের দ্বারা বর্ণিত অপরাধ থেকে হালকা করে দেখানোর প্রবণতা সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করতে হবে। তা হলেই পুলিশবাহিনী পুনরায় জনগণের জন্য ভীতির কারণ না হয়ে জনগণের বন্ধু হতে পারবে। জনগণের সেবক ও বন্ধু হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য পুলিশবাহিনী থেকে দুর্নীতি অবশ্যই নির্মূল করতে হবে। কেননা পুলিশের সাহায্য ছাড়া দেশে অপরাধ দমন সম্ভব নয়। তাই পুলিশ কর্মকর্তা দ্বারা সংঘটিত বেআইনি কর্মকাণ্ড সাধারণ জনগণের কাছে অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত মনে হয়। পুলিশবাহিনীকে দুর্নীতিমুক্ত করুন, দুর্নীতিমুক্তদের যথাযথ মূল্যায়ন করুন; তা হলে সারাদেশে দুর্নীতি এমনিতেই অনেক কমে যাবে। সতর্ক থাকুন আর যেন এনামুল বাছির, মিজানুর রহমান এবং ওসি মোয়াজ্জেমের মতো ঘটনা না ঘটে। 

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে অসংখ্য পুলিশ সদস্যের রয়েছে মহান আত্মত্যাগের ইতিহাস। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইটে’র নামে ঢাকায় প্রথম গণহত্যা শুরু করলে রাজারবাগ পুলিশলাইনে ওই রাতেই প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়। সেনানিবাস থেকে হিংস্র শ্বাপদের মতো বেরিয়ে আসা সাঁজোয়া যানের বহর দেখে বাঙালি পুলিশের সদস্যরা সেদিন একটুও ভয় পাননি। ছেড়েছিলেন বিদ্রোহের রণহুঙ্কার। মুক্তিযুদ্ধের সেই লড়াকু পুলিশবাহিনীর কাছে দেশবাসীর তাই প্রত্যাশাও অনেক।


লেখক: সাংবাদিক

আরও পড়ুন