• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০১৯, ০৪:২৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৭, ২০১৯, ০৬:০৭ পিএম

‘পাওনা পরিশোধ না করলে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’

‘পাওনা পরিশোধ না করলে গ্রামীণফোনের  বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’
বক্তব্য রাখছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক - ছবি : জাগরণ

পাওনা টাকা গ্রামীণফোন না দিলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক।

তিনি বলেন, বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় গ্রামীণফোনের লাইসেন্স বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়েছে। সেই ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তাদের ব্যান্ডইউথও কমানো হয়েছে। ব্যান্ডইউথ কমানোর মধ্য দিয়ে গ্রামীণফোনকে এই বার্তা দেয়া হয়েছে যে বিটিআরসি বসে নেই, তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি পাওনা অনেকদিনের। সম্ভবত ২০০৮ বা ২০১০ সালের দিকে করা অডিটে তাদের কাছে তিন হাজার কোটি টাকার মতো পাওয়া যেতো।

তিনি বলেন, এরপর ঘটনা হাইকোর্টে গেল। হাইকোর্ট আবার ফ্রেশ অডিট করতে বললেন। সেই অডিটে জানা গেল, তাদের কাছে পাওয়া যাবে ১২ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এরমধ্যে বেশকিছু অংশ বিটিআরসির, এক তৃতীয়াংশ এনবিআর এর এবং প্রায় এক তৃতীয়াংশ ১০ বছরের সুদ।

তিনি বলেন, পাওনা আদায়ের জন্য সভা ডাকা হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এই টাকা তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করা হবে। কিন্তু আমরা লাইসেন্স বাতিল না করে গ্রামীণফোনকে নোটিশ দিলাম। তারপরও টাকা না দেয়ায় সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে তাদের ৩০ শতাংশ ব্রান্ডইউথ কমানো হয়েছে।

জহুরুল হক বলেন, ব্যান্ডইউথ কমানোর মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছি। এর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষেরও কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সাধারণ মানুষের যেন কোনও ভোগান্তি না হয়, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইকেল ফলি তাদের ব্যান্ডইথ কমানোর সিদ্ধান্তে বিষ্ময় প্রকাশ করেন। বিটিআরসির এই নির্দেশনা বাংলাদেশের মানুষ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে উল্লেখ করে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে এই নির্দেশনা তুলে নেয়ার জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ জানান তিনি।

মাইকেল ফলির এই প্রস্তাবের বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আইনে আরবিট্রেশন এর কোনও সুযোগ নেই। এজন্য আইন সংশোধন করতে হবে। আরবিট্রেশন আমরাও চাই, তবে তার জন্য সময়ের প্রয়োজন। আরবিট্রেশন এর বিষয়টি নির্ধারণ করবে সংসদ। তাহলে আরবিট্রেশন এর কথা বলে গ্রামীণফোন কালক্ষেপন করছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে জহুরুল হক বলেন, হতে পারে। এটা কালক্ষেপনের কৌশলও হতে পারে। তবে আলোচনার সুযোগ আছে। বিটিআরসি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। এই অবস্থায় বিটিআরসির পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে বা ব্যান্ডইউথ আরও কমানোর চিন্তা-ভাবনা আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনকিছু তো এত দ্রুত হয় না। আশা করি, গ্রামীণফোন টাকা দিয়ে দেবে।

বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় গ্রামীণফোন ও রবির বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। শীর্ষ এই দুই মোবাইল ফোন অপারেটরের ব্যান্ডউইথ বৃহস্পতিবারই আংশিকভাবে ব্লক করার নির্দেশ দেয়া হয়। এর ফলে গ্রাহকরা কল ড্রপ ও ইন্টারনেট সেবায় ধীরগতির সমস্যার মুখে পড়বেন।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন এ বিষয়ে জানান, বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত গ্রামীণফোনের ৩০ শতাংশ ও রবির ১৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ ব্লক করে রাখা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া এই নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ব্যান্ডউইথ আংশিক ব্লক করে দেয়া হবে।

জেডএইচ/এসএমএম

আরও পড়ুন