• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০১৯, ০৬:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২২, ২০১৯, ০৬:৪৯ পিএম

ঢাবি ছাত্রকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

ঢাবি ছাত্রকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল
মেহেদী হাসান শামীম - ফাইল ছবি

‘ভুল চিকিৎসায় বাঁ হাত অকেজো’ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শামীমকে কেন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এই চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি।  

ভুক্তভোগী শামীমের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত  হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এই রুল দেয়।

রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী  জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, রিপন কুমার বড়ুয়া ও ফুয়াদ হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক।
 
স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সভাপতি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল, স্কয়ার হাসপাতালের ডা. কৃষ্ণা প্রভু ও ম্যানেজিং ডিরেক্টরসহ ৭ জনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।       

গণমাধ্যমকে নূর উস সাদিক বলেন, আদালত এ বিষয়ে রুল জারি করেছে। বড়ুয়া বলেন, স্কয়ার হাসপাতালে মেহেদী হাসান শামীমের অপারেশন করার সময়ের সিডি ও চিকিৎসার সব রেকর্ড ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করে ১৪ জুলাই রিট করা হয়।

এর আগে ১৮ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের ছাত্র মেহেদী হাসান শামীম বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শামীম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রক্তনালীর ব্রেন টিউমার (ইনসুলার ক্যাভারনোমা) হওয়ায় ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলে ডা. কৃষ্ণা প্রভু আমাকে দ্রুত অপারেশন করতে বলেন। না করলে স্ট্রোক করে যে কোনো সময় আমি মারা যেতে পারি। তিনি সহজেই এই অপরেশন করে দেবেন। কিন্তু ডাক্তারকে বারবার অপারেশনের পসিবল রিস্ক ও পোস্ট অপারেটিভ সিম্পটম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেও উনি সবকিছু সচেতনভাবে এড়িয়ে যান। স্কয়ারের ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিল করাই ছিল ডাক্তারের মুখ্য উদ্দেশ্য।

২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ডাক্তারের পরামর্শে অপারেশন করা হয় উল্লেখ করে শামীম বলেন, আমি আইসিইউতে থাকাকালীন আমার অ্যাটেন্ডেন্টকেও (ছোট ভাই) শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়নি। ২৫ তারিখ যখন আমি ওয়াশরুমে যেতে চাই তখন ডিউটি ডাক্তার আমার ভাইকে জানান, আমার বাঁ পাশ আর কাজ করছে না। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে অপারেশনের সিডি চাইলে ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তালবাহনা শুরু করে।

ডা. কৃষ্ণা প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, অপারেশনের সময় আমার মস্তিষ্কের কয়েকটি নার্ভ কাটা যায় বলে জানানো হয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুর যাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তার। সাক্ষাতে শামীমকে তার অপরেশনের রিস্কের বিষয়ে কেন জানানো হয়নি সেই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তার উত্তরে ডাক্তার বলেন, তার কারণেই তিনি (শামীম) পঙ্গু হলেও বেঁচে আছে। অন্য কেউ অপারেশন করলে সেটাও হতো না। তিনি পঙ্গু হাত নিয়ে বেঁচে থেকে সন্তুষ্ট থাকতে বলেন।

এ ঘটনায় গত ৭ তারিখ স্কয়ার হাসপাতালের সিইও বরাবর তার অপারেশনের সিডি ও পেশেন্ট ফাইল চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় বলে দাবি শামীমের।

এদিকে ভুল চিকিৎসার বিষয়ে জানার জন্য ডা. কৃষ্ণা প্রভুকে কল দেয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এমএ / এফসি

আরও পড়ুন