• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ১০:০৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ১০:০৯ পিএম

প্রেস কাউন্সিলের বারণ প্রত্যাহার চায় ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম

প্রেস কাউন্সিলের বারণ প্রত্যাহার চায় ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম

বিচার চলাকালে এজলাসে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে কথোপকথন বা যুক্তি-তর্ক গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে বারণ করেছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল। কাউন্সিলের দেয়া এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার চেয়েছে আইন, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ)। 

বিজ্ঞপ্তিতে কাউন্সিল হাইকোর্টের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

সংগঠনের সভাপতি ওয়াকিল আহমেদ হিরন ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান রাজু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের এমন বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও কণ্ঠরোধের শামিল।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও পরবর্তীতে গত ২১ মে আরেকটি ‘স্পষ্টীকরণ’ বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সব সময় সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আদালতের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এবং বিচারকার্য প্রভাবিত হয় এমন সংবাদ পরিবেশন বা প্রচার প্রত্যাশিত নয়।’

এলআরএফের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সুপ্রিম কোর্ট বিটের সাংবাদিকরা সবসময় দেশের বিচার বিভাগ ও আদালতের মর্যাদা, ভাবমূর্তি ও সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে সংবাদ প্রকাশ করে আসছে। তবে আদালতের সংবাদ জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। তাই আদালত অঙ্গনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছে এখানকার গণমাধ্যমকর্মীরা। এমতাবস্থায় অবিলম্বে প্রেস কাউন্সিলের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হচ্ছে। অন্যথায় স্বাধীন সাংবাদিকতার স্বার্থে এলআরএফ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’

গত ৯ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এক সৌজন্য সাক্ষাতে এলআরএফ নেতৃবৃন্দকে বলেছিলেন, আদালতে যা দেখবেন তাই লিখবেন। 

প্রধান বিচারপতির বলা এরূপ কথার পরেও প্রেস কাউন্সিলের এ রকম বিজ্ঞপ্তি দেয়ার কোনও অবকাশ নেই বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এলআরএফ।

এর আগে বিচারধীন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের ‘আদেশের ভিত্তিতে’ বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বলে সোমবার এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, “এজলাস চলাকালীন বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে কথোপকথন বা যুক্তি-তর্ক একান্তভাবে কোর্টের সম্পদ এবং এটি সংবাদপত্রে প্রকাশযোগ্য নয়।”

আদালত সম্পর্কিত সংবাদ প্রকাশ ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে ১৯৯৩ সালে প্রণীত এবং ২০০২ সালে সংশোধিত ‘সাংবাদিকদের জন্য আচরণবিধির’ ১৬ দফা অনুসরণের জন্য সকল গণমাধ্যমকে অনুরোধ করা হয়েছে প্রেস কাউন্সিলের ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

আচরণবিধির ১৬ দফায় বলা হয়েছে, “কোনো অপরাধের ঘটনা বিচারাধীন থাকাকালীন সব পর্যায়ে তার খবর ছাপানো এবং মামলা বিষয়ক প্রকৃত চিত্র উদঘাটনের জন্য আদালতের চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করা সংবাদপত্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে বিচারাধীন মামলার রায়কে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনো মন্তব্য বা মতামত প্রকাশ থেকে চূড়ান্ত ঘোষণার আগ পর্যন্ত বিরত থাকতে হবে।”

প্রেস কাউন্সিল বলছে, বিচারাধীন মামলার রায়কে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনও বিষয় বা ঘটনা এবং বিচারকদের মানহানি ঘটে এমন কোনো মন্তব্য বা মতামত প্রকাশ থেকে গণমাধ্যমকে বিরত থাকতে হবে।

“বিচারাধীন মামলার বিষয়ে প্রকৃত চিত্র পরিবেশন করা যাবে। তবে কোনও বিষয়ে সন্দেহের উদ্রেক হলে তা সংশ্লিষ্ট কোর্টের বেঞ্চ অফিসার, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার এবং আপিল বিভাগের কাছ থেকে যাচাই করে প্রকাশ করতে হবে।”

সুপ্রিম কোর্টের ‘অবমাননা’ হয় এবং বিচারকদের ‘মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়’ অথবা ‘ক্ষুণ্নের সম্ভাবনা থাকে’- এমন সংবাদ পরিবেশন থেকে সাংবাদিকদের বিরত থাকতে বলা হয়েছে প্রেস কাউন্সিলের বিজ্ঞপ্তিতে।

একক প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং অনলাইন মিডিয়াকে ‘অত্যন্ত সতর্কতার সাথে’ বিষয়টি ‘প্রতিপালন করার অনুরোধ’ জানায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল।

এমএ/এসএমএম 

আরও পড়ুন