• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০১৯, ০৮:৩২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৫, ২০১৯, ০৮:৩২ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণে হস্তক্ষেপ করব না : হাইকোর্ট

প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণে হস্তক্ষেপ করব না : হাইকোর্ট
আবরার ফাহাদ - ফাইল ছবি

ফাহাদ হত্যার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজে পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরাও পর্যবেক্ষণে রাখব। এক্ষেত্রে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটলে সেক্ষেত্রে আমরা হস্তক্ষেপ করব, এখন নয়।
 
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনায় করা একটি রিট শুনতে এই কারণ দেখিয়ে অপারগতা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করে। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লা আল মাহমুদ বাশার। তিনি জানান, রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করার পর হাইকোর্ট রিটকারী আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আবরার হত্যার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজে পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরাও বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখব। এ ক্ষেত্রে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটলে সেক্ষেত্রে আমরা হস্তক্ষেপ করব, এখন নয়।

আদালত আরও বলেন, ‘অপেক্ষা করুন। দেখুন কী হয়। না হলে পরে আসবেন।’

মাহমুদ বাশার বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে, আসামিরাও গ্রেফতার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আসামিরা যে-ই হোক কোনো ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার কথাও বলেছেন। এছাড়া এখনও আমরা দেখছি, মামলা সঠিক পথেই চলছে, আবরার হত্যার ঘটনায় যখন আইনের কোনো বরখেলাপ ঘটবে তখন আমরা অবশ্যই দেখব।

আবরার হত্যার ঘটনায় ক্ষতিপূরণের রিটটি আরও দুটি হাইকোর্ট বেঞ্চসহ পৃথক পৃথক তিনটি হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়। তিনটি কোর্টে রিট শুনানিতে ব্যর্থ হন রিটকারী আইনজীবী। এছাড়া উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত রয়েছে, পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়-স্বজন ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বা ভিকটিমের পক্ষে রিট মামলা করতে পারবে না কেউ। এসব দিক বিবেচনায় রিটটি শুনানিতে ব্যর্থ হন আইনজীবী।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও তার পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে চাওয়া রিটের শুনানি করতে পৃথক পৃথক তিনটি হাইকোর্ট বেঞ্চে যান। প্রথমেই এ রিটের ওপর শুনানি করতে হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে উপাস্থপন করা হলে আদালত শুনানি গ্রহণ করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

এরপর রিট আবেদনটি হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে তারাও রিটের শুনানি করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। সর্বশেষ রিটটি হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপিত হয়।

আদালতে আজ (মঙ্গলবার) রিটের পক্ষে শুনানির জন্য উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম ফায়েজ।

গত ১৩ অক্টোবর আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে আইনজীবী শাহিন বাবুর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম ফায়েজ এ রিট দায়ের করেন। রিটে আবরার হত্যাকাণ্ডে বুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। এ ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা বুয়েটকে দিতে হবে। এছাড়া রিটে ওই ঘটনায় বুয়েট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। এ রিটের আদেশ হলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের জন্যও ক্ষতিপূরণ আদায় করা সম্ভব হবে বলে রিটে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া রিটে আবরারের হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন এবং আবরারের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়। রিটে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ছাড়াও, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

প্রসঙ্গত, আবরার ফাহাদ তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ৬ অক্টোবর (রোববার) রাতে শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ১১ জনকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ।

এমএ / এফসি