• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০১৯, ০৩:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৪, ২০১৯, ০৪:২২ পিএম

বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা আর নেই

বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা আর নেই
সাদেক হোসেন খোকা

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা মারা গেছেন ( ইন্নালিল্লাহি লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সোমবার (০৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় বেলা ১টায় নিউইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়েন ক্যাটারিং ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদেক হোসেন খোকা মারা যান।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৈনিক জাগরণকে এ নেতার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মুত্যুর আগে তাকে লাইফ সাপোর্ট রাখা হয়েছিলো। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র সময় আজ সোমবার বাদ আসর জামাইকা মুসলিম সেন্টারে সাদেক হোসেন খোকার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে তার মরদেহ ঢাকায় নেয়া হবে।

২০১৪ সালের ১৪ মে মাসে সাদেক হোসেন খোকা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান।গত ১৮ অক্টোবর সকালে খোকার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষণিক ভাবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দেশে কয়েকটি দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার কয়েকটিতে সাজাও দেন আদালত।

সাদেক হোসেন খোকার জন্ম ১৯৫২ সালের ১২ মে। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন তিনি।

আশির দশকে বামপন্থি রাজনীতি ছেড়ে আসেন বিএনপিতে। ওই সময় নয়াবাজার নবাব ইউসুফ মার্কেটে বিএনপির কার্যালয় থেকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা করে সাতদলীয় জোটের নেতৃত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ওই অন্দোলনে ঢাকা মহানগর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছিলেন খোকা।

১৯৯০ সালে ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে পুরান ঢাকার মানুষের মনে আস্থার জায়গা করে নেন।
১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসনে (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি) শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন। এসময় তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ঢাকার আটটি আসনের মধ্যে সাতটিতে বিএনপি প্রার্থী পরাজিত হলেও একমাত্র খোকা নির্বাচিত হন। দিনে দিনে তার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। ঢাকার রাজনীতিতে খোকা ফ্যাক্ট হয়ে ওঠেন।পরে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে প্রায় পাঁচ বছর একক নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতায় পরিণত হন।

২০০১ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী হন। ওই সময় পুরান ঢাকায় বিএনপির রাজনীতিতে নিজস্ব বলয় তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে দলকে শক্তিশালী করার পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

এর আগে ১৯৯৪ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফের কাছে পরাজিত হন মির্জা আব্বাস। বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য বিরোধী দল কঠোর আন্দোলন শুরু করলে ঢাকায় বিএনপি কোণঠাসা হয়ে পড়ে।

এ অবস্থায় খোকাকে ১৯৯৬ সালে মহানগর বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ঢাকার মেয়র ছিলেন।

তার মৃত্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

টিএস/বিএস