• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ০৮:০৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ০৮:১০ পিএম

বুড়িগঙ্গায় মিলিত ৬৮ স্যুয়ারেজ বন্ধের দায়িত্ব ওয়াসার : হাইকোর্ট

বুড়িগঙ্গায় মিলিত ৬৮ স্যুয়ারেজ বন্ধের দায়িত্ব ওয়াসার : হাইকোর্ট

পানি সরবরাহ কর্তৃপক্ষ ঢাকা ওয়াসার নির্দিষ্ট ৬৮টি লাইনের বাইরে আর কোনো লাইন নদীতে মিলিত হলে সেগুলো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, বুড়িগঙ্গায় মিলিত হওয়া ৬৮ স্যুয়ারেজ লাইন বন্ধের দায়িত্ব ওয়াসার। এর বাইরে কোনো লাইন নদীতে মিলিত হলে আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে তা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।

এ আদেশ বাস্তবায়ন করে হলফনামা আকারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতে আজ আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। ওয়াসার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ এম মাছুম এবং বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষে ছিলেন সৈয়দ মফিজুর রহমান।

মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র প্রতিবেদন অনুসারে বুড়িগঙ্গায় এখন ৬৮টি স্যুয়ারেজ লাইন পতিত রয়েছে। ওয়াসা এটার দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাদেরই এটা বন্ধ করতে হবে। এই ৬৮টি বাদে বুড়িগঙ্গার দুই পাড়ে জরিপ করে যদি আরও স্যুয়ারেজ লাইন থাকে সেগুলো ৭ জানুয়ারির মধ্যে বন্ধ করে বিআইডব্লিউটিএকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া পরিবেশ অধিদফতর যে ১৮টি বন্ধ করেছে এর বাইরে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আছে কি না সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ওয়াসা তাদের দেয়া হলফনামা প্রত্যাহার করেছে। নতুন করে আগামী রোববারের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবেন। রোববার সে বিষয়ে আদেশ দেবেন আদালত।

এর আগে, ১৭ নভেম্বর এক আদেশে হাইকোর্ট ২৭টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধে পরিবেশ অধিদফতরকে ১৫ দিনের মধ্যে নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে ওয়াসার এমডিকে শোকজ করে আদেশের জন্য ২ ডিসেম্বর দিন রাখেন।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সদরঘাট থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এলাকায় বুড়িগঙ্গার তীরের উত্তর পাড়ে গড়ে ওঠা ১৮টি প্রতিষ্ঠানের সেবা (বিদ্যুৎ সংযোগ) বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানায় পরিবেশ অধিদফতর।

এদিকে, ওয়াসার পক্ষ থেকে লিখিতভাবে হাইকোর্টকে জানানো হয়, বুড়িগঙ্গা নদীতে যে ৬৭টি প্রধান আউটলেট পতিত হয়েছে তার মধ্যে ঢাকা ওয়াসার ১৬টি। বিআইডব্লিউটিএ বলছে ৬৮টি।

তবে এর আগে গত ১৮ জুন ওয়াসার দেয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোনো স্যুয়ারেজ লাইন নেই। ওয়াসার এই দুই ধরনের প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করে মঙ্গলবার দিন রাখেন হাইকোর্ট। পরে আজ মঙ্গলবার ওয়াসা তাদের হলফনামা প্রত্যাহার করে নেয়। নতুন করে হলফনামা দিতে রোববার (৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ওয়াসাকে সময় দেয়া হয়।

বুড়িগঙ্গার পানি দূষণরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ওই রিট করা হয়। সেই রিটের শুনানি শেষে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১১ সালের ১ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের শুরুতে এ রায় নিয়ে এইচআরপিবি একটি সম্পূরক আবেদন করেন।

ওই আবেদনের পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জনস্বার্থে করা এক রিট মামলায় পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িগঙ্গার পানিদূষণ রোধে ২০১১ সালে আদালত অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বুড়িগঙ্গার ভেতরে যেসব সুয়ারেজ লাইন আছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইন আছে সেগুলো ৬ মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশের পাশাপাশি বুড়িগঙ্গার তীরে যাতে ময়লা আবর্জনা ফেলতে না পারে সে জন্যে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করার জন্য বলা হয়েছিল রায়ে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এসব নির্দেশনা পুরোপুরি পালন না করায় এ সম্পূরক আবেদন করা হয়েছিল।

এমএ/টিএফ

আরও পড়ুন