• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০১৯, ০৪:২৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১০, ২০১৯, ০৪:৩১ পিএম

‘ন ডরাই’ সিনেমা কেন বাজার থেকে তুলে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে না?

‘ন ডরাই’ সিনেমা কেন বাজার থেকে তুলে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে না?

‘ন ডরাই’ সিনেমার প্রদর্শনী বাতিল এবং বাজার থেকে সিনেমা তুলে নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এ-সংক্রান্ত বিষয়ে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

রিটকারি আইনজীবী মো. হুজ্জাতুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর সেন্সর বাতিল ও প্রদর্শনী বন্ধে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিমকোর্টের এই আইনজীবী। নোটিশে ‘ন ডরাই’ ছবির মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং হযরত আয়শা (রা.)-কে অপমান করায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানানো হয়েছে। নোটিশ প্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন সচিব, প্রযোজক মাহবুব রহমান, পরিচালক তানিম রহমান অংশু, সংলাপ রচয়িতা শ্যামল সেন গুপ্ত এই পাঁচজনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়।

গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ডাক ও রেজিস্ট্রিযোগে নোটিশটি পাঠান আইনজীবী।

নোটিশে বলা হয়েছে, এই সিনেমার প্রধান চরিত্রের সঙ্গে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর স্ত্রী হযরত আয়শা (রা)-এর মিল রাখা হয়েছে। হযরত আয়শা (রা.) ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের কাছে পবিত্র ও সম্মানিত ব্যক্তি। তাকে নিয়ে কুরআনে বলা হয়েছে, তিনি বিশ্বাসীদের মা।

সিনেমার মূল নায়িকার সঙ্গে হযরত আয়শার নাম ব্যবহার করে অশ্লীল দৃশ্যধারণ করা হয়েছে, যা মুসলমানদের ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাতের শামিল। শুধু তাই নয়, কমিক বই ও অ্যানিমেটেড ভিডিও থেকে এই সিনেমাটি তৈরি করা, যা খুবই আপত্তিকর। সস্তা বাজার পাওয়ার জন্য পরিচালক মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের চেষ্টা করেছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। চলচিত্র সেন্সরবোর্ড সিনেমাটি প্রদর্শনের অনুমতি দিয়ে আইন লঙ্ঘন করেছে।

‘ন ডরাই’ চলচ্চিত্র নিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে আইনজীবী বলেন, ‘সিনেমায় এমন দৃশ্য আছে যেগুলো বাংলাদেশি সিনেমায় এই প্রথম ও সাহসী বলা যেতে পারে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এ ছবি দেখা যাবে-এমন নিশ্চয়তা দেয়া যায় না।’

নায়িকার নাম হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর স্ত্রী আয়শা (রা)-এর নামে রাখা এবং অশ্লীল দৃশ্যের অভিযোগ সম্পর্কে পরিচালক তানিম রহমান অংশু বলেন, ‘না, এ ধরনের কোনো কিছুই আমরা করিনি। আর আয়শা নামে এই প্রথম কোনো কাজ হচ্ছে তা-ও তো না। এর আগেও আয়শা নামে বহু কেন্দ্রীয় চরিত্রের কাজ হয়েছে। অনেক ধরনের গল্প দেখানো হয়েছে। এখানে আসলে আয়শা চরিত্রটায় এমন কিছু দেখানো হয়নি, যেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। সার্ফিংয়ের দৃশ্যে মেয়েরা যেভাবে সার্ফিং করে সেভাবেই দেখিয়েছি, সালোয়ার কামিজ পরিহিত অবস্থায়। দৃষ্টিকটু কিছুই দেখাইনি। তাই এ ধরনের কথা ওঠায় পরিচালক হিসেবে আমি অনেক অবাক। আর নির্মাণের সময় থেকেই আমরা এসব ব্যাপারে খেয়াল রেখেছিলাম, যেন এগুলো নিয়ে দর্শকদের মধ্যে কোনো ধরনের অস্বস্তি যেন না হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের ভাষায় কিছু বানাতে গেলে অরজিনালিটি রাখার জন্য কিছু ভাষার প্রয়োগ আসলেই হয়ে যায়। সেগুলো আমরা রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বোর্ডের আপত্তির কারণে সেগুলো আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান রেখেই মিউট করে দিয়েছি। আর পরেও এমন কিছু দেখাইনি যার জন্য এ ধরনের পরিস্থিতির অবতারণা ঘটতে পারে। আমরা সেন্সর বোর্ডের নিয়মনীতি মেনেই বানিয়েছি।’

এদিকে, প্রথমে সংলাপ নিয়ে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির মুখে পড়ে ‘ন ডরাই’। সংলাপ সংশোধনের পর প্রদর্শনের অনুমতি পায় ছবিটি। এরপর একই দিনে দুইয়ের অধিক সিনেমা মুক্তি না দেয়ার জটিলতায় পড়ে। সব জটিলতা কাটিয়ে গেল ২৯ নভেম্বর দেশের ৮টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে বছরের বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘ন ডরাই’।

ছবির প্রযোজক ও স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেলের প্রথম প্রযোজিত সিনেমাটি। ‘ন ডরাই’ সিনেমার পর্দায় তুলে ধরার কাজটি করেছেন নির্মাতা তানিম রহমান অংশু। ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন দেবের ‘বুনোহাঁস’ ও ‘পিংক’ ছবির চিত্রনাট্যকার কলকাতার শ্যামল সেনগুপ্ত।

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, সুনেরা বিনতে কামাল প্রমুখ। সিনেমার প্রায় নব্বই শতাংশ দৃশ্যধারণ হয়েছে কক্সবাজারে। সিনেমাতে চট্টগ্রামের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে।

এমএ/টিএফ

আরও পড়ুন