• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২০, ১১:৩০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৭, ২০২০, ১১:৩৪ এএম

মানবপাচারের সিন্ডিকেট মামলা : প্রধান বিচারপতি বরাবর স্মারকলিপি

মানবপাচারের সিন্ডিকেট মামলা : প্রধান বিচারপতি বরাবর স্মারকলিপি

মানব পাচারের সিন্ডিকেট মামলাবাজদের হাত থেকে বাঁচাতে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। 

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এনেক্স বিল্ডিংয়ের সামনের চত্বরে মানববন্ধন শেষে তারা রেজিস্টার কার্যালয়ের মাধ্যমে  এই স্মারকলিপি জমা দেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, এই মামলাবাজ সিন্ডিকেটের দলে রয়েছে- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসৎ কর্মকর্তা, নিম্ন ও উচ্চ আদালতের গুটিকয়েক কর্মচারী এবং বেশকিছু অসাধু আইনজীবীও।

তারা বলেন, ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে যে সাজানো মানব পাচারের অভিযোগ করা হয়, তার ধরন ও গল্প ঘুরেফিরে একই। একটি মামলায় জামিন হলে পুরনো আরেকটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এসব মামলা থেকে রেহাই পেতে আপনার (প্রধান বিচারপতির) হস্তক্ষেপ চাই।

স্মারকলিপিতে প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, আপনি আইনের রক্ষক। সর্বোচ্চ আদালতের শুধু প্রধান বিচারপতিই নন, অভিভাবকও আপনি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাই আপনার ব্রত। কারও প্রতি দয়া, ঘৃণা, অনুকম্পা, সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ আপনার নেই। আপনি আইন দ্বারা পরিচালিত হন। আপনি আইনের ভাষায় কথা বলেন। সেই আইনের প্রতি সবাই শ্রদ্ধাশীল। মাননীয় প্রধান বিচারপতি,আমরাও প্রচলিত আইনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, একটি ঠকবাজ প্রতারক চক্র সেই আইনকে চরমভাবে বেআইনি কাজের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যার শিকার আমাদের পরিবার। এই দুষ্টচক্রের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব শিশু, বৃদ্ধ, যুবক, নারী ও পুরুষ। এমন এক জালে বন্দি আমরা, যে জাল আমাদের একার পক্ষে ছিন্ন করা সম্ভব না। বিচ্ছিন্নভাবে আমরা একেকজন ভুক্তভোগী। কিন্তু যারা আমাদের দুঃস্বপ্নের একেকটি রাতের জন্য দায়ী তারা অনেক বেশি শক্তিশালী, সংঘবদ্ধ ও প্রাতিষ্ঠানিক। এক-দুইদিন নয়, বছরের পর বছর জেল খাটছে আমার স্বজন। একটি-দুটি নয়, পাঁচটি-দশটি এমনকি ৫০-৬০টি সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সময় যতই গড়াচ্ছে মামলার সংখ্যাও চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। কারা কোথা থেকে কীভাবে মামলা সাজাচ্ছে তা জানা নেই আমাদের। মামলার শিকার মানুষগুলো চিনে না সাজানো বাদীদের। আবার সাজানো বাদীরাও চিনে না কথিত আসামিদের। মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে দেখেছি একজন এই মামলায় বাদীতো অন্য মামলায় সাক্ষী। এমনও ব্যক্তি আছেন একজনকে ভিকটিম সাজিয়ে পৃথক সব জেলায় ভিন্ন ভিন্ন আসামিদের বিরুদ্ধে সাজানো মানবপাচার মামলা করেছেন। এই চক্রের মূল উদ্দেশ্যই হলো মানবপাচারসহ অন্যান্য মামলার জালে সমাজের নিরীহ সম্মানিত ব্যক্তিদের ফাঁসিয়ে তাদের সহায় সম্পদ, ভিটে-মাটি লুটে নেয়া।

তারা বলেন, মামলার জালে জড়ানোর আগে কোনদিনই থানা-পুলিশ কিংবা আপনার আদালত প্রাঙ্গণে আমাদের পা পড়েনি। আমাদের স্বজনদের বিরুদ্ধে এর আগে কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ডও নেই। অথচ সেই মানুষগুলোর বিরুদ্ধেই সাজানো অভিযোগের অসংখ্য মামলা।

প্রধান বিচারপতিকে তারা আরও বলেন, ওরা শুধু মামলা দিয়েই থেমে থাকে না। ভুয়া ওয়ারেন্ট দিয়েও আমাদের স্বজনদের কারাগার থেকে কারাগারে ঘোরায়, যদিও আমার স্বজনদের বিরুদ্ধে এইসব ভুয়া ওয়ারেন্টের কোনো অস্তিত্ব নেই। এরা প্রবল শক্তিশালী। জেনেছি, সব সাজানো মামলা দায়েরের অনুমতি ও নির্দেশনা আসে একটি একক জায়গা থেকে। এও জেনেছি, মামলাবাজ সিন্ডিকেটের মূলহোতা পারিবারিক সম্পত্তি থেকে তার আপন তিনভাইকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের মতো এদের বিরদ্ধেও ৪৮টি করে সাজানো মামলা দিয়েছে।

মামলাবাজ সিন্ডিকেটের হাত থেকে তদন্ত সাপেক্ষে স্বজনদের মুক্তি দেয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে তারা আকুল আবেদন জানান। তারা এর সুষ্ঠু তদন্তের জন্যও বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানান।

এমএ/একেএস