• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০, ০৭:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০, ০৭:৩০ পিএম

কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আরও তিন মাস সময়

কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আরও তিন মাস সময়
কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম - ফাইল ছবি

কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বন্দরের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের আরও তিন মাস সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশে চট্টগ্রাম বন্দরের অধীনে থাকা সংশ্লিষ্ট এই স্থানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আগে সেখানকার পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।

এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য ১২ মে দিন ধার্য করেন আদালত। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

তলবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপস্থিত হওয়ার পর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে চেয়ারম্যানের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরানুল কবীর। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

পরে আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরানুল কবীর বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের অধীনে থাকা কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমাদের (বন্দর কর্তৃপক্ষ) ৩ মাসের সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আগে সংশ্লিষ্ট স্থানের পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া উচ্ছেদ কার্যক্রমে সহায়তায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ মে দিন ধার্য রেখেছেন আদালত। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ২০১৬ সালে রায় দিয়েছিলেন আদালত। এসব স্থাপনা উচ্ছেদে আমরা বার বার আদালতে আসছি। সর্বশেষ ডিসির পক্ষ থেকে তার অধীনের জায়গাগুলো কিছু উচ্ছেদ করেছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দর এলাকায় যে জায়গা, সেটা তারা উচ্ছেদ করতে পারবে না। কারণ ওখানে বন্দরের কর্তৃত্ব। তখন আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত বন্দর চেয়ারম্যানকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে বললে তারা সময় চেয়ে বলেন ৫৮ একর সম্পত্তির মধ্যে ২০ একর উচ্ছেদ করে ফেলছি, ৬ মাস সময় দেন। কিন্তু আমাদের আপত্তির পর আদালত ৩ মাস সময় দিয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। ৩ মাস পরে আদালত বন্দর চেয়ারম্যানকে হাজির হতে বললেন। তখন আবার একটা আবেদন দিল আরও কিছু সময় পরে হাজির হওয়ার জন্য। এরপর আদালত ১১ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেন।

মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, ‘আজকে হাজির হয়ে (চেয়ারম্যান) লিখিত আবেদন দিয়ে বলেছেন, আমরা (বন্দর কর্তৃপক্ষ) কাজ করছি। অলরেডি ৫৮ একরের মধ্যে ৩৫ একর উচ্ছেদ করেছি। ২৩ একর উচ্ছেদে বিভিন্ন সমস্যা আছে। আরও ৬ মাস সময় প্রয়োজন। তখন আমরা আপত্তি দিয়েছি। আদালত সমস্যার বিষয়গুলো লিখিত দিতে বলেন। পরে তারা লিখিতভাবে দিয়েছেন। সেখানে বলেছে- ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করলে তারা উচ্ছেদ করতে পারবে না। এটা একটা ঝামেলা হবে। পরে আদালত পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করে অবৈধ স্থাপনা ৩ মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দেন। আর একটি প্রতিবেদন দিতে হবে। 

কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধ দখল সংক্রান্ত ২০১০ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট নিয়ে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট করা হয়। রিটের পর আদালত রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের আদালত রুল যথাযথ ঘোষণা করে ১১ দফা নির্দেশনা দেন। ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট রায়ের অনুলিপি দেয়া হয়। ওই রায় অনুসারে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু কয়দিন চলার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এক আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল কর্ণফুলীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা অবিলম্বে উচ্ছেদে বন্দর চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। উচ্ছেদ করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

মনজিল মোরসেদ জানান, আদালতের নির্দেশে আংশিক উচ্ছেদ করা হয়। এরপর আবার আবেদন করা হলে আদালত বন্দর কর্তৃপক্ষকে সময় দেন। সময় পার হলেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করে ফের সময় আবেদন করায় বন্দরের চেয়ারম্যানকে তলব করে আদেশ দেন আদালত।

এমএ / এফসি