• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০১৯, ০৫:১৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০১৯, ০৯:০৯ পিএম

চিকিৎসার অভাব

মরতে বসেছেন মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের প্রথম শহীদের মা

মরতে বসেছেন মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের প্রথম শহীদের মা
মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের প্রথম শহীদের মা দিপালী সমাজদার


মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের প্রথম শহীদের মা দিপালী সমাজদার এখন মৃত্যুশয্যায়। বাড়ির উঠানে পা পিছলে পড়ে বাম উরুর দু’টি হাড় ভেঙ্গে যায় প্রায় পঁচাশি বছর বয়সী এই বৃদ্ধার। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে স্টিলের দু’টো হাড় সংযোজনের মাধ্যমে আপাতত তাকে সারিয়ে তোলা হলেও প্রায় দু’মাস ধরে তিনি শয্যাযায়ী। 

চিকিৎসকদের পরামর্শ অন্তত তাকে আরও দু’মাস বিছানাতেই থাকতে হবে। যদিও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাকে একটি হুইল চেয়ার দান করেছেন। কিন্তু বিছানা থেকে নামার মত অবস্থা এখনও তার হয়নি। আর্থিক অনটনের কারণে ওষুধ পথ্য তো দূরের কথা, দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটানোও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কোন আত্মীয় স্বজন কিংবা কোন হৃদয়বান ব্যক্তি ন্যূনতম সাহায্য সহযোগিতা করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সব মিলিয়ে চিকিৎসার অভাবে শহীদ এই মাতা এখন মৃত্যুমুখে। 

১৯৭১ এর ৩রা মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে রংপুরের উত্তাল গণমিছিলে যোগ দেন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শংকু সমাজদার ও তার বড় ভাই কুমারেশ সমাজদার। মিছিলটি যখন রেল স্টেশন অতিক্রম করে শহরের দিকে ফিরছিল, তখন উর্দুতে লেখা একটি সাইনবোর্ড চোখে পড়ে শংকুর। নিমিষে সাইনবোর্ডটি ছুড়ে ফেলার চেষ্টা করে শংকু আর শরীফুল ইসলাম। ঠিক তখনই অবাঙালি সরফরাজ খান তার বাসা থেকে গুলি চালায়। এতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান শংকু। গুরতর আহত হন শরীফুল। যার কথা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণেও উল্লেখ করা হয়েছে। শংকুর বড়ভাই কুমারেশ কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। আয় রোজগার করতে পারেন না। দিপালী সমাজদার আগে অন্যের বাসায় পুজোর ভোগ (রান্না) এবং সেলাই ফোরনের কাজ করে কোন রকমে ছেলে ও তার স্ত্রী এবং দুই নাতি নিয়ে সংসার চালাতেন। কিন্তু বর্তমান বয়সের ভারে ন্যুব্জ হওয়া এবং চোখে তেমন দেখতে না পারায় গত কয়েক বছর ধরে তাও করতে পারছেন না। ছেলের স্ত্রী একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়ার চাকরি করে যা পাচ্ছেন তা দিয়েই ৫ সদস্যের সংসারটিকে চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু সম্প্রতি শাশুড়ির এই দুর্ঘটনায় তিনিও ভেঙ্গে পড়েছেন। একদিকে শাশুড়ির সেবা, অন্যদিকে চাকরি। এছাড়াও বেতনের যে টাকা পান তা দিয়ে সংসার চলে না। ওষুধতো দূরের কথা। এ অবস্থায় শহীদ এই মাতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশের বিত্তবান মানুষের কাছে হাত বাড়িয়েছেনন চিকিৎসা খরচের জন্য। তাকে বিকাশে টাকা পাঠানোর মোবাইল নম্বর- ০১৭০৪২৪৬৯৬৮।

আরআই