• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০১৯, ০৮:৪৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২০, ২০১৯, ০৮:৪৯ এএম

মাইন বিস্ফোরণে পা হারান মুক্তিযোদ্ধা উসমান গণি 

মাইন বিস্ফোরণে পা হারান মুক্তিযোদ্ধা উসমান গণি 
উসমান গণি তালুকদার -ছবি : জাগরণ

যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা নেত্রকোনা পৌর শহরের নাগড়া উত্তর পাড়ার বাসিন্দা মো. উসমান গণি তালুকদার (৬৮)। মুক্তিযুদ্ধে তিনি অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। তার নেতৃত্বেই নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বিজয়পুর থেকে প্রতিহত করা হয়েছিল পাক হানাদার বাহিনীকে।

মরহুম আব্দুল গণি তালুকদারের ছেলে উসমান গণি ১৯৭১ সালে বিএ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। নেত্রকোনা কলেজ হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করতেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মে মাসের শেষের দিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। গেরিলা আক্রমণে তিনি ছিলেন খুবই পারদর্শী। বিজয়পুর থেকে হানাদার বাহিনী পিছু হঠার সময় তাদের পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে একটি পা হাটুর উপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তার। সম্প্রতি দৈনিক জাগরণে দেয়া এই বীর মুক্তিযোদ্ধার একটি সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হল। 

তিনি বলেন, পাকিস্তান সরকারের দুঃশাসন থেকে নিজেকে ও দেশকে বাচাঁতেই মূলত যুদ্ধে যাওয়া। পাক বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন এতটাই বেড়েছিল যে, তখন ঘরে বসে থাকা অসম্ভব ছিল। নিজের নৈতিকতা বোধ থেকেই যুদ্ধে গিয়েছিলাম।

উসমান গণি বলেন, প্রথমে ভারতের মেঘালয়ের মহাদেও ইয়ূথ ক্যাম্পে যাই। সেখানে ২০দিন প্রথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর ১২৫ জনের দলনেতা করে আমাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় ভারতেরই তোরা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে। যিনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন তিনি হলেন অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ জজ কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তোরায় প্রায় ১ মাস প্রশিক্ষণের পর বাঘমারা এসে আমি কয়েক দিনের মধ্যেই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। ১১নং সেক্টরের অধীনে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরসহ আট-দশটি স্থানে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম।

৬ ডিসেম্বর বিজয়পুরে হানাদার মুক্ত হবার পর আমরা যখন আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে বিজয়পুরেই এক বাংকার থেকে অন্য বাংকারের পথ ধরে হাঁটছি এমন সময় হঠাৎ এক মাইন বিস্ফোরণে আমার শরীর থেকে একটি ‘পা’ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যে মাইনটির বিস্ফোরণ ঘটেছিল সেটি পাক সৈন্যরা চলে যাবার আগে গোপনে ওখানে পুতে রেখেছিল।

আমার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এখানেই শেষ হলো এবং  আমার সহযোদ্ধারা আমাকে তৎক্ষণাৎ বাঘমারা চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়োজিত সামরিক বাহিনীর একজন ডাক্তার আমার শরীর থেকে একটি পা আলাদা করেন। 

একেএস