বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্রের পরিণতি- মন্তব্য করে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) চেয়ারম্যান ও দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান বলেছেন, ষড়যন্ত্র না হলে ১৫ আগস্টের পর ২১ আগস্ট এলো কীভাবে?
বুধবার (২৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিইউবিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মো. আবু সালেহ এর সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী ক্যাম্পাসের হলরুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা আবেদ খান বলেন, বলা হয়- ১৫ আগস্ট কতিপয় ব্যক্তির ষড়যন্ত্র। কিন্তু না। ’৭৫ এর আগেও বঙ্গবন্ধুকে কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তা সফল হয়নি। সর্বশেষ ১৫ আগস্ট ঘটে চূড়ান্ত পরিণতি। এই পরিণতি ঘটানোর পেছনে ছিল বাঙালি, এমনকী কিছু মুক্তিযোদ্ধাও। তাদেরকে ব্যবহার করা হয়েছে। যারা দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল, তারাই জন্ম দিয়েছে ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায়টির। আজকে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও হচ্ছে ষড়যন্ত্র। তাকে হত্যার চেষ্টা হচ্ছে বারবার। এই ষড়যন্ত্রকারীরাও দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচরণকারী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠী ভালো করেই জানে- বাংলাদেশ শেষ করতে হলে শেখ হাসিনাকে জীবিত রাখা যাবে না।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে আবেদ খান বলেন, জিয়া ছিলেন সশস্ত্র সিরিয়াল কিলার। ’৭৫-এ তার ভূমিকা কী ছিল, তা ঢাকার জন্য একের পর এক হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে গেছেন, রেহাই পায়নি বড় সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধাও।
‘বাঙালি খুব দুর্ভাগা’ উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিইউবিটির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি, জাতীয় চার নেতাকে হারিয়েছি, চৌকস চৌকস সেনা কর্মকর্তাদের হারিয়েছি নির্মমভাবে। ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশকে সেই ’৭১ থেকে এ পর্যন্ত নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছে। কিন্তু তা সফল হয়নি। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বজুড়ে বাঙালির নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। ’৭১ ও ’৭৫ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের ইতিহাসের বিচারের কাঠগড়ায় আসতেই হবে। আমরা দেখব। তাদেরকে তোমরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। এদের বিচারের ভার তোমাদের তুলে নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা ’৭১ ’৭৫ সম্পর্কে জানো নিশ্চয়ই। কিন্তু এর পেছনের ঘটনাগুলো জানো না। হয়তো জানবে। তখন বুঝবে আসল ঘটনা কী। এই দেশ আমরা বানিয়েছি, পেছনের ঘটনা জানলে বুঝবে আমাদের কত বিনিয়োগ ছিল এই দেশের পেছনে।
শোক দিবস উপলক্ষে বিইউবিটিতে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের অভ্যূদয়’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। একইসঙ্গে ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত, জীবিতদের উন্নতি কামনা করে দোয়া করা হয়।
বিইউবিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মো. আবু সালেহ প্রধান অতিথি আবেদ খানকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও মূল্যবান বই উপহারস্বরূপ প্রদান করেন। এছাড়া প্রধান অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খানের জীবন-কর্ম নিয়ে বিইউবিটি শিক্ষার্থীদের দ্বারা নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সূচনা বক্তব্য দেন বিইউবিটির শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রমের ছাত্র-উপদেষ্টা ও প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মিঞা লুৎফার রহমান।
আরএম/ এফসি