• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০১৯, ০৮:৪৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৯, ২০১৯, ০৮:৪৫ এএম

সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরের দিকে যাওয়ার নির্দেশ

সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরের দিকে যাওয়ার নির্দেশ

আজ ৯ ডিসেম্বর। একাত্তরের এই দিনে যেসব অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয় সেগুলোর অন্যতম ছিল দাউদকান্দি। দাউদকান্দি জয়ের মধ্য দিয়ে একাত্তরের ৯ ডিসেম্বর মেঘনার পুরো পূর্বাঞ্চল মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। এদিনে আরও শত্রুমুক্ত হয় খুলনার ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি, পাইকগাছা, কুমারখালী, নকলা, অভয়নগর, ত্রিশাল, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনা, গাজীপুরের শ্রীপুর, পূর্বধলাসহ বিভিন্ন এলাকা।

একাত্তরের এ সময়টায় দ্রুত পাল্টে যাওয়া দৃশ্যপট এটাই স্পষ্ট করে দেয় যে, খুব শিগগিরই অবসান হতে যাচ্ছে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পিছু হটার মধ্য দিয়ে প্রতিদিনই তখন দেশের একাধিক এলাকা শত্রুমুক্ত হচ্ছিল। তবে এর মধ্যেই মুক্তিপাগল অকুতোভয় বাংলার দামাল ছেলেদের মনোবল ভেঙে দিতে পাকিস্তান আর তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  ষড়যন্ত্র করছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন যুদ্ধের শেষ সময়ে এসে পাকিস্তানকে সহযোগিতার পদক্ষেপ নেন।

একাত্তরের এ দিনে সপ্তম নৌবহরকে তিনি বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি ভেবেছিলেন এর মাধ্যমে অন্তত বাঙালির মনোবল ভেঙে দেয়া যাবে। কিন্তু সে ধারণা সঠিক হয়নি। রোদে পোড়া, বৃষ্টিতে ভেজা পলিমাটির সন্তানদের দৃঢ় মনোবল তো আর এত সহজে ভেঙে দেয়া যায় না!

৯ ডিসেম্বর কপিলমুনির মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আনন্দের দিন। এদিনে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় সুনিশ্চিত হতে থাকলে হানাদার পাকসেনারা বিভিন্ন স্থান থেকে পিছু হটে। এদিন কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বেলা ১১টায় শহরের চারদিক ঘিরে ফেললে পৌর এলাকার কুণ্ডুপাড়ায় পাকিস্তানি বাহিনীর দেশীয় সহযোগী আল-বদর কমান্ডার ফিরোজ বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ হয়। এ সংবাদে জেলা শহরে অবস্থানরত পাকসেনারা দ্রুত এসে শহর ঘিরে শুরু করে গণহত্যা। ৯ ডিসেম্বর পুনরায় মুক্তিযোদ্ধা শহর ঘিরে রাজাকার-পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা চালালে তারা পালিয়ে যায়। ৪ থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্ত হয় গাইবান্ধার সব থানা।

১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর ১১নং সাব-সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার আবদুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে টুআইসি আবদুর রশীদ ও সিকিউরিটি অফিসার একলিম শাহসহ ১৫০ বীর মুক্তিযোদ্ধা নকলাকে পাকহানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করেন। এরপর তারা স্থানীয় নকলা পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

এদিন মুক্ত হয় তিতাস। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিতাসের বাতাকান্দি এবং কড়িকান্দিতে মুখোমুখি যুদ্ধে ৩৫ পাকসেনা নিহত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে পাক হানাদারদের হটিয়ে অভয়নগরকে শত্রুমুক্ত করেন।

একেএস

আরও পড়ুন