• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৬, ২০১৯, ০৫:০৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৬, ২০১৯, ১১:৩৮ পিএম

রমজান মাসে ইফতারি যেমন হওয়া উচিত

রমজান মাসে ইফতারি যেমন হওয়া উচিত

আমাদের দেশে ইফতারি মানেই হল নবাবি আয়োজন। পেঁয়াজু,বেগুনী,হালিম,শরবত,ভুনা ছোলা,আলুর চপ,কয়েক প্রকার ফল আরও নানা রকম আইটেম থাকে আমাদের ইফতারের আয়োজন। আসলে এই খাবারের ভিড়ে আমারা হয়ত ভুলেই যায় রোজার আসল উদ্দেশ্য সংযম। অর্থাৎ,জীবনে চলার পথ থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়া সব কিছুতেই আমাদের সংযমী হবার শিক্ষা নিতে হবে পবিত্র রমজান মাস থেকে। আর যেহেতু,প্রচণ্ড গরমের মধ্যে রোজা পড়েছে তাই ডিহাইড্রেশন এবং অসুস্থতা এড়াতে বুঝে শুনে খাবার গ্রহন করতে হবে।অর্থাৎ,ইফতারি হতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত।

ইফতারির ক্ষেত্রে যে বিষয় গুলো মানতে হবে 

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারি হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিল যা সকালের নাস্তার সমতুল্য। সুতরাং ইফতারীতে এমন খাবার খেতে হবে যেন তা শরীরে শক্তি প্রদানের পাশাপাশি যথাযথ পুষ্টি ও যোগায়।

• ইফতারির শুরুতে ২-৩ টি খেজুর ১ কাপ দুধে ভিজিয়ে খেতে পারেন। সারাদিনের ক্লান্তি নিমিষে দূর করার জন্য এর চাইতে ভাল কিছু নেই।খেজুর পটাশিয়ামের ভাল উৎস যা সারাদিনের ইলেক্ট্রোলাইটসের ইম্ব্যালান্স দূর করার পাশাপাশি হাইড্রেশনে  সাহায্য করেবে। আর দুধে আছে উচ্চ ক্যালসিয়াম,পানি এবং ব্যালান্সড ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টস যা দ্রুত শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে।

• এরপর শুধু পানি না খেয়ে-পানির পাশাপাশি ডাবের পানি অথবা চিনি ছাড়া ফলের জুস বা লেবুর শরবত খেতে পারেন। এক্ষেত্রে মিষ্টি স্বাদের প্রয়োজন হলে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা যেতে পারে । এই ব্যাপারটি যে কেবল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভাল তা নয়,সাদা চিনি যেকোন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ তাই যতটা সম্ভব চিনি এড়িয়ে চলা ভাল।

•  ইফতারিতে ভুনা ছোলা না খেয়ে,সিদ্ধ ছোলা,কাঁচা মরিচ,পেয়াজ কুঁচি,লবণ এবং ১/২ চা চামচ সরিষার তেল দিয়ে মাখিয়ে খেতে পারেন,চাইলে ১/২-১ কাপ মুড়ি ও যোগ করতে পারেন।

• পিয়াজু,বেগুনী ছাড়া যাদের ইফতারের স্বাদ একেবারে অপূর্ণ থাকে তাদের বলছি,আপনি একে বারে সুস্থ রোজাদার হোন আর অসুস্থ রোজাদার হোন একটি মাঝারি সাইজের বেগুনী এবং দুইটি পেঁয়াজুই যথেষ্ট।অতিরিক্ত ভাজাপোড়া এবং মসলা যুক্ত খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিক, বুক জ্বালাপোড়া বা অসস্তিতে ভুগতে পারেন। তাই,সুস্থ ভাবে পুরো রমজান কাটাতে হলে স্বাদের চাইতে স্বাস্থ্যের উপর নজর দেয়া উচিত।
 
• ইফতারিতে দই চিড়া এবং অর্ধেক পাকা কলা খুবই স্বাস্থ্যসম্মত একটি খাবার। অস্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবর্তে এই খাবারটি খেতে পারেন।
• ইফতারিতে একই দিনে পেঁয়াজু,বেগুনী,হালিম,ভুনা ছোলা,আলুর চপ এই আইটেম গুলো একসাথে না খেয়ে এক এক দিন একটা থেকে দুইটা আইটেম ইফতারিতে রাখতে পারেন,তবে এই ধরণের খাবার গুলো সীমিত পরিমানে খাওয়া বাঞ্ছনীয়।
 
• ইফতারিতে এক বাটি ফল রাখতে ভুলবেন না। ফল থেকে ফাইবারের চাহিদা পূরণ হবার পাশাপাশি পানির চাহিদা ও পূরণ হবে।
• ইফতারিতে ঘরে তৈরি ভেজিটেবল চিকেন স্যুপ রাখতে পারেন। এই ধরণের স্যুপ তৈরিতে নানা রকম শাকসবজি এবং মুরগীর মাংস ব্যবহার করা হয়। ফলে,এই ধরণের স্যুপ যেমন পুষ্টিকর তেমনি সাস্থ্যসম্মত।আর ইফতারিতে এমন আয়োজন থাকলে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহনের তেমন কোন ঝুঁকি নেয়।

• যারা পেপ্টিক আলসারের সমস্যাতে ভুগছেন তারা অবশ্যয় অতিরিক্ত গরম খাবার, ভাজা পোড়া,তৈলাক্ত এবং অতিরিক্ত মসলা এবং ঝাল যুক্ত খাবার,কাঁচা শাকসবজির সালাদ এড়িয়ে চলবেন। ইফতারিতে সহজ পাচ্য এবং সুসিদ্ধ খাবার বেঁছে নিন।
• যাদের এনিমিয়া আছে-তারা ইফতারিতে প্রতিদিন গুঁড়ের তৈরি শরবত খাবেন।
• এছাড়া,যাদের ইউরিক এসিড বেশি বা কিডিনির সমস্যা রয়েছে তারা যেকোন ধরণের ডাল বা ডালের তৈরি খাবার এড়িয়ে চলবেন।

লেখক : পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড