গ্রীষ্মের বড় আকর্ষণ হল ফলের রাজা আম। আম যেমন সুস্বাদু তেমনি একটি পুষ্টিকর ফল।আম কাঁচা কি পাকা দুই অবস্থাতে খাওয়া যায়।কাঁচা আমের ভর্তা,আম-ডাল,আমের আচার,জুস,কিংবা আমের মোরব্বা যে ভাবে ইচ্ছা আমকে সেভাবেই খাওয়া যায়। আর পাকা আম মানেই তো রসালো মিষ্টি স্বাদের স্বর্গ রাজ্য।
আমের পুষ্টি গুন
আম একটি লো ক্যালরি ফল।এতে রয়েছে উচ্চ পরিমানে ফাইবার,ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি,রয়েছে ফোলেট,আয়রন ভিটামিন বি-৬,এবং সামান্য পরিমানে জিংক, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-ই।এছাড়া আমে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং ফাইটো কেমিক্যালস।
আমের উপকারিতা
আম পলি ফেনলের ভালো উৎস
আমে রয়েছে ডজন খানেক পলি ফেনলস।পলি ফেনল হল প্লান্ট কম্পাউন্ড যাএন্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে।আর,এন্টিঅক্সিডেন্ট এমন এক ধরণের উপাদান যা আমদের দেহের কোষের সুরক্ষায় অপরিহার্য মেঅ্যান্থোসায়ানিন,ক্যাটেসিন,কোয়ারসেটিনিন,কেমফেরোল,বেনজয়িকএসিড,ম্যাঙ্গিফেরিন ছাড়াও আরও অনেক ধরণের পলিফেনলস রয়েছে ।
পলি ফেনলস উচ্চ রক্তাচাপ,উচ্চ কোলেস্টেরল,ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।এছাড়া,ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং আমাদের অন্ত্রের সুস্থতায় পলি ফেনল কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে ধীর এবং ত্বক ফর্সা করে
আমে থাকা কোলাজেন আমাদের বয়স বাড়ার প্রক্রিয়ার লাগাম টেনে ধরে।বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকে যে বলিরেখা বা রিঙ্কলেল দেখা যায় তা দূর করতে কোলাজেন সাহায্য করে।এছাড়া,রং ফর্সা করতে ও কোলাজেন বেশ কার্যকর।তাই,যারা বয়স ধরে রাখতে এবং ফর্সা ত্বক চান তারা আম খাবার পাশাপাশি মুখে আমের পাল্প লাগাতে পারেন।
ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে ভালো রাখে
ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে ঠিক-ঠাক এবং নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করতে সাহায্য করে আম।আমে থাকা টারপিন এবং এস্টার স্টোমাকের এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।এছাড়া,আমের উচ্চ ফাইবার ডাইজেস্টিভসিস্টেমের যেকোন ধরণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
ড়কে শক্তিশালী করে
আমে থাকা ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি হাড়ের জন্য ভীষণ উপকারী।এছাড়া,আমে থাকা কোলাজেন যে শুধু ত্বকের জন্য ভালো তা নয়,এইপ্রোটিনটি হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত।
চোখের জন্য ভাল
যখন ভিটামিন-এ এর তীব্র অভাব হয় তখন মানুষ অন্ধ পর্যন্ত হতে পারে।তাই,যারা ভিটামিন-এ এর অভাব জনিত সমস্যাতে ভুগছেন তারা আম খেতে পারেন।কেননা,আমে উচ্চ পরিমানে ভিটামিন-এ রয়েছে।
ব্রেনের জন্য ভালো
ভিটামিন-বি৬,যা পাইরোডক্সিন নামে পরিচিত।আমে থাকা এই ভিটামিন-বি৬ নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে ব্রেনকে সাহায্য করে।বলা বাহুল্য,বি-৬ এর অভাব হলে আমাদের কগনিটিভ সামর্থ্য ড্যামেজ হবার আশংকা দেখা দেয়।এছাড়া,বি-৬,অ্যাজমা এবং প্রি মিনেস্টোরালসিন্ড্রোম কমাতে সাহয্য করে। দেহের পি এইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করেআমে থাকা ম্যালিক এসিড এবং টারটারিক এসিড এবং অন্যান্য এসিডিয় উপাদান দেহের ক্ষারীয় ভারসাম্য রক্ষা করে।
এনিমিয়া দূর করে
আমে ভালো পরিমাণে আয়রন থাকায় তা এনিমিয়া দূর করতে সাহায্য করে।সুতরাং,যারা এনিমিয়াতে ভুগছেন আয়রনের অভাব দূর করার জন্য নিয়মিত আম খেতে পারেন।
সতর্কতা:
যদিও আম অনেক পুষ্টিকর একটি ফল।তবুও মাত্রারিক্ত আম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।আমে উচ্চ পরিমানে সুগার থাকায় মাত্রারিক্ত পরিমানে গ্রহন করলে রক্তে সুগার এবং দেহের ওজন উভয়ই বৃদ্ধি পেতে পারে।এছাড়া,আমে বেশি ফাইবার থাকায় খুব বেশি পরিমানে খেলে ডায়ারিয়া বা হজমে সমস্যা হতে পারে।যাদের,বাতের সমস্যা আছে অথবা ইউরিক এসিড বেশি তাদের আম না খাওয়াই ভালো।কারণ,আম
হাই ফ্রুক্টোজ ফল।
লেখক: পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড
/ডিজি