• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০১৯, ০৮:৩৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৬, ২০১৯, ০৬:৩৩ পিএম

আঠারোয় নিত্য উপহার

‘কঠিনেরে ভালবাসিলাম’

‘কঠিনেরে ভালবাসিলাম’

শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসে নিত্য উপহারে যাতায়াত। আজিজ সুপার মার্কেটে বাহার রহমান তখন সৃষ্টির নেশায় মত্ত। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী হলেও মোহাম্মদপুরে বেড়ে উঠেছেন তিনি।আজিজ সুপার মার্কেটের শুরুর দিকে যারা পিদিম জ্বালাতো তাদের মধ্যে বাহার ভাইয়ের নিত্য উপহার ও বিজুদার পাঠক সমবাবেশ অন্যতম।। আমরা যেতাম বাহার ভাইর কাছে। বড় স্বপ্নবান মানুষ তিনি। ওখানে বসেই পরিকল্পনা করতেন বিভিন্ন কাজের । বাহার ভাইয়ের স্বপ্ন কতোটা সফল হবে সেটা বোঝার মতো অবস্থা আমার ছিলো না। শুধু বুঝতাম বাহার ভাই যে মাপের মানুষ তার কাজে সাফল্য আসবেই। ধীর-স্থির মানুষ, কখনো বাড়তি কথা বলতেন না। বাহার রহমান যখন আজিজ মার্কেটে কিছু করবেন ভেবে বসে থাকেন, গেলেই চা খাওয়ান, গল্প করেন, স্বপ্নবান এই মানুষটির সাথে আমদের সখ্যতা হয়। প্রতিদিনের গন্তব্য হয়ে ওঠে নিত্য উপহার। গান্ডিব পত্রিকা করা থেকে এক/দুটা চাকরিও করেছেন। কিন্ত কোনটায়ই মন বসেনি। একদল বন্ধু-বান্ধব সম্বল করে চলা।

হঠাৎ একদিন প্রকাশ কররেন ছোট একটা নোট বই। নাম - ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’।ভেতরে বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত সব কবিতা, চিত্রকলা বিভিন্ন কিছু সহকারে করা তার এ নোট বই  তার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলে। তবে চিত্রকলা তাকে তাড়িয়ে বেড়াতো। এক সময় তার মনে হলো , বিদেশে থেকে কত বিখ্যাত ব্যক্তির ছবি বুকে করে আমাদের দেশে বিদেশিরা আসে, এভাবে আমাদের দেশের কৃষ্টি-কালচার গেঞ্জিতে এঁকে দিলে তাও ঘুরে বেড়াবে বিশ্বব্যাপি। বুকে ঘুরে বেড়াবে বাঙালি সংস্কৃতির ক্যানভাস। যেই চিন্তা সেই কাজ । শুরু হলো টি শার্টের অগ্রযাত্রা। ধ্রুব এষ, সব্যসাচী হাজরাসহ নবীন প্রবীন এক ঝাঁক শিল্পীর কাজে ঋদ্ধহয়ে উঠলো নিত্য উপহার।

তুমুল আড্ডাবাজ বাহার রহমানকে লক্ষ্য করে দেখলে মনে হবে সব আড্ডা হইচইয়ের মধ্যেও কোথায়যেন ডুবে আছেন তিনি। তার এই হারিয়ে যাওয়াকে ভিড়ের হাটের একাকীত্ব মনে হয়। মনে পড়ে জীবনানন্দ দাশের আট বছর আগেএকদিন কবিতার কথা। ‘ অর্থ নয়, কীর্তি নয়, স্বচ্ছলতা নয়/আরো-এক বিপন্ন বিষ্ময়/আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে/খেলা করে; কি তারভিতরে খেলা করে? নতুন সৃষ্টির চিন্তা নাকি আরো অন্তর্গত অন্য কিছু। টিশার্টের ইতিহাসে বাঁক বদল করেছেন তিনি। একবার আমার মনে আছে আমি চে গুয়েভারার ছবি আঁকা একটি গেঞ্জি গায়ে পটুয়াখালী শহরের মধুরিমা রেস্টুরেন্টে বসেছিলাম মন খা্রাপ করে। কোন বন্ধু পাচ্ছিলাম না। কিছুক্ষণ পর এক তরুণ ঢুকলেন একই গেঞ্জি গায়ে। ঢাকায় ছাত্র ইউনিয়নের সম্মলেনে এসে নিত্য উপহারের গেঞ্জি কিনেছে। এই গেঞ্জির মধ্য দিয়ে মিল্টনের সাথে আমার আত্মীয়তা শুরু হলো, শহরে অনেক বন্ধু পেলাম শুধু একটি টিশার্ট , একটি চলমান ক্যানভাসের কারনে। আরো একটি ঘটনা বলি, ওয়ান ইলিভেনের সময় চে’র ছবি সম্বলিত গেঞ্জি গায়ে আমাকে গুলিস্তানে আর্মির এক অফিসার ডাকলো। তার আগের দিন আর্মি যাতে ব্যারাকে ফিরে যায় তা ব্যানারে লিখে (গো ব্যাক ব্যারাক)আমরা লেখক সাংবাদিকরা একটা মিছিল করলাম। সে ছবি পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর সম্ভবত আমাকে ডেকেছিলেন। আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন এ ছবিটা কার? আমি বললাম লাতিন আমেরিকার একজন রেড আর্মির। তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন। মানে নিত্য উপহারের টি শার্টের অনেক গুন। গায়ে দিলে বন্ধুও হয়,আবার সামরিক বাহিনীও ডাকে। বিষয়টি নিয়ে তখন ক্যাম্পাস এলাকায় হাস্যরসের আসরে আলোচনা হতো। ইতিহাসের ধূসরপান্ডুলিতে কি লেখা থাকবে না এ অর্জন? এই আঠারো বছরে কত লোক এসেছে কত লোক গিয়েছে তার অন্ত নেই। তবে বাহার রহমান ব্যবসায়ী হরেও ব্যবসায়ী চরিত্রের না। প্রকৃত অর্থে তিনি একজন সৃষ্টি পাগল মানুষ, হতে পরেন, কবি, ডিজাইনার ,শিল্পী। নিজের এটা জিনিস কাউকে দিতে তার একটু চিন্তা  করতে হয় না। ব্যবসায়িরা এমন হয় না। বাহার রহমান সেদিক থেকে ব্যবসায়ির চেয়ে শিল্প মনস্ক বা শিল্প অন্তঃপ্রাণ ব্যক্তি।

 সেই শুরুর দিকের থেকেই বলছি বাহার ভাই আমাদের বিভিন্ন বয়সী মানুষের বন্ধু। তবে তার ব্যক্তিত্বের কাছে যে সে আলোচনা জায়গা পেতো না। সব বয়সের মানুষের সাথে তার বয়সের সাথে যায় এমন াালোচনাই তিনি করতেন।মানুষের উপকার করতে না পারলেও সৎ পরামর্শ দিতেন। বুঝতেন কাকে দিয়ে কোন কাজ হবে। শিল্পকলা -সাহিত্যের প্রতি তার টান ছিলো দুর্বার। বিভিন্ন  মাপের আড্ডাবাজরা আসতো তার কাছে, চারুকলার একটা বড় গ্রুপ আসতো। সবার নির্ভরতা ছিলো বাহার ভাই। বাহার ভাই তেমন নির্ভরতার মানুষ আজও একটুও বদলাননি। আজিজ মার্কেটে তার পূর্ন  বিকাশের সময়ে কত কবি শিল্পীকে তিনি  পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন তা নয় নাই বললাম। তবে তিনি বহু ব্যক্তিকে কাজে লাগিয়েছেন। তার সঠিক মজুরি দিয়েছেণ। বাহার ভাই সম্বন্ধে আগেই বলেছি কাকে দিয়ে কী কাজ হবে  সেটা তিনি খুব ভালো বোঝেন। একবার  ভাষার কাজ নিয়ে আমার সাথে বসলেন। যেকোন কাজের আগেই তার যে অস্থিরতা সেটা ধরেই বলছি। কাজের কথা বলার আগে তার সাথে রিক্সায় ঘুরলাম কয়েকঘন্টা । তারপর তিনি বললেন ,ভাষা দিবস আসছে ৫২ টা ভাষায় লিখতে হবে ‘আমি আমার মায়ের ভাষায় কথা বলবো’। তারপরে একটা ফর্ম তৈরি করলেন। মুরু হলো কাজ । শাড়ির ডিজাইন করলেন যতদূর মনে পড়ে শিল্পী ডিজাইনার চন্দ্রশেখর সাহা  । কাপড় বেরোনোর পর কি প্রশান্তি তার তার । এজন্য আগেই বলেছিলাম সাধারণ কোন বুটিকের দোকান নিত্য উপহার না,ছিলো না। তারপর অনেকদিন পার হলো।বিভিন্ন কারনে বাহার ভাইর সাথে যোগোযোগ ছিলো না। এরমধ্যে একদিন জানলাম তিনি সুলতানা রাজিয়া রোডে নিত্য উপহারের অফিস নিয়েছেন সেখানে বাহার ভাই বসেন। আমাদের আড্ডা শুরু হলো বাহার ভাইকে ঘিরে। তারপর আবার অফিস বদলালো। এবার  নিত্য উপহার এলো তাজমহল রোডে মিস্টার বেকারের নিচে।   কিন্তু  মোহম্মদপুরের তাজমহল রোডের এই শো রুমেও বসতে শুরু করলেন বাহার ভাই।  মানে  নিত্য উপহারের  সত্ত্বাধিকার বাহার রহমান । শাহবাগের শোরুমে মাঝে মধ্যে গেলেও মূলত তিনি মহম্মদপুরেই বসতে শুরু করলেন।  সকাল থেকে দোকান বন্ধ না হওয়া অবধি এখানে বহার ভাইকে পাওয়া যায়। এখানে বসেই ব্যবসার দেখাশোনা, ল্যাপটপে লেখালেখি, বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা ইত্যাদি।  সারা বিশ্বের শিল্প-সাহিত্যের খবর রাখেন তিনি । আলোচনা করেন রাজনীতি, সাহিত্য বিভিন্ন বিষয়ে। এরই মাঝে হয়তো কারখানা থেকে  ছাপা রঙ দেখাতে এলে বলে দিলেন কোথায় ডিপ হবে কোথায় হালকা হবে ইত্যাদি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ইউটিউব দেখে কত কাজ করে চলেন তিনি তার ইয়ত্তা নেই।   বিভিন্ন বয়সের বন্ধুরা আসে । আড্ডা দেয়,চা খায় আবারচলে যায়, নতুন অতিথি আসে ।এরমধ্যে চিন্তার গভীর সমুদ্রে জলজোনাকের মতো সৃষ্টিশীলতা চিল্কায় মগজের কোষে কোষে। বাহার রহমান,আড্ডা দেন-কথা বলেন - হাসিতে ফেটে পড়েন । কিন্তু তিনি কোথায় উপস্থিত কোথায় তার মন সেটা বোঝা বড় দুস্কর। শিল্পিত পথ ধরে দিনমান হেটেঁ চলেন তিনি সৃষ্টির নেশায়।

তার এই পরিশ্রম শিল্পিত আবেশে ছুটে চলা সবই তার টিশার্টে নতুনত্বদেয়ার জন্যে। তার এই রিলস পরিশ্রমের কারনে ঘটনাটা এমন দাঁড়িয়েছে  যে,টি শার্ট মানেই নিত্য উপহার। এখানে ক্যামেরার কবি নাসির আলী মামুনের আলো আঁধারের কৌনিক চিন্তা নিয়েও  টিশার্ট করেছে নিত্য উপহার। বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী এস .এম সুলতানের ্ দুর্লভ ছবি দিয়ে টি শার্ট করেছে নিত্য উপহার। ঋদ্ধ হতে যত পথ পাড়ি দিতে হয় ততোপথ হাঁটতে কোন দ্বিধা নেই বাহার রহমানের। তাই নিত্য উপহার নিজগুনে তার পরিচিতি ছড়িয়ে দিয়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে।  ভালো কোন আলোকচিত্র, পেইন্টিং , ডিজা্ইন তার মাথা ঢুকলে তিনি তা টিশার্টে,চাদরে বা শাড়িতে রূপ দিতে না পারলে তার স্বস্তি থাকে না। তার এই সৃষ্টি জনিত অস্থিরতা বলে দেয় তিনি নিজেই একজন স্রষ্টা এবং সৃষ্টি রসে পুরোপুরি নিষিক্ত। কোয়ালিটি কাজ তার চাই যেকোন মূল্যে। অনেক সীমাবদ্ধতা,বিভিন্ন সংকট এলেও সততা,নিষ্ঠার সাথে কাজ করার ব্রত থেকে নিত্য উপহার কখনও বিচ্যুত হয়নি। নিত্য উপহার তাদের নিজস্ব নকশা ও গৌরবের বিষয়গুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ফলে তরুণদের কাছে নিত্য উপহারের পোশাক হয়ে উঠেছে অপরিহার্য ও অনুপ্রেরণারে উৎস।

টিশার্টের মাধ্যমে দেশের ঐতিহ্য বুকে বুকে ছড়িয়ে দেওয়াই শুধু নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরতে এমনকি ক্রিকেট খেলার সময় অজস্র দর্শকককে গ্যালারিতে দেখা যায় যারা নিত্য উপহারের গেঞ্জি পরিহিত। চেক থেকে একবার আসা এক তরুণের চাহিদা ওপরামর্শ  নিয়ে বাহার ভা্ই একটা ঘটনা বলেছিলেন। যে ঘটনায় তিনি আন্দোলিত হয়ে বাঙলাদেশেরে পতাকা দিয়ে টিশার্ট করেছিলেন। আমাদের পরিচিত মহলে কেউ বেড়াতে এলে বা আমরাও ঈদ-পুজার গিফট বা আত্মীয় স্বজন যারা দেশের বাইরে থাকে সবার জন্য নিত্য উপহারের টিশার্ট পেলে খুবই খুশি হয়। মানুষ খুশি হলে আর কি চাই? সহনীয় দামে দেশের কৃষ্টি-কালচার,নিসর্গের ছবি সম্বলিত টিশার্ট  সংগ্রহ করে সবাই স্বদেশের গন্ধ নেয়। তাই বিদেশে পাড়ি জমানোর আগে বা ছুটিতে বাড়ি ফিরতে তরুণেরা নিত্য উপহারে  টিশার্ট  নিয়ে যান। যার জন্য দিনে দিনে ছড়িয়ে পড়েছে নিত্য উপহারের সুনামের সুগন্ধ।  তবে বাংলাদেশের পতাকা শোভিত টিশার্টের বিশষত্ব আলাদা। দেশি- বিদেশি সবাই খুঁজে নেয় বাংলাদেশেরপতাকা, নিসর্গ ও সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের বিভিন্ন অনুষঙ্গ সম্বলিত টিশার্ট। এটাই নিত্য উপহারকে খুঁজে বের করার বিশেষত্ব।

 বহু খ্যাতিমান চিত্রশিল্পীর নাম জড়িয়ে আছে নাম জড়িয়ে আছে নিত্য উপহারের এ কর্মযজ্ঞের সাথে। দেশবরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, আবুল বারক আলভি, শেখ আফজাল ও চন্দ্রশেখর সাহার মতো চিত্রশিল্পী ও ডিজাইনাররা যেমন নিত্য উপহারের জন্য নকশা করেছেন। আর খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী ধ্রুব এষ, সব্যসাচী হাজরা আছেন নিত্যউপহার শুরুর হাতের যাত্রা থেকে আজ অবধি এমন বহু শিল্পী, ছাত্র,পেশাজীবীদের সম্মিলিত প্রয়াসে ঋদ্ধ নিত্য উপহার।

 বিশ্ব ভ্রমনে যারা যা, যারা সাগর ভ্রমনে যেতে চান, পাহাড়ে চূড়ায় উঠে যারা বাঙলাদেশেরে পতাকা ওড়াতে চান সবাই বাংলাদেশের পতাকা শোভিত টিশার্টরে সংগ্্রহ করে নিয়ে যান।  বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড দলও নিত্যউপহারের জার্সি  পরে জিতেছে স্বর্ণপদক। এখব পাওয়ার পরে বাহার ভাইরের আনন্দ ছিলো স্বর্ণ পদক বিজয়ীদের চেয়েও বেশি। তাহলে কি বলবো, বাহার রহমান শুধু টিশার্ট ব্যবসায়ি বা নিত্য উপহার শুধুমাত্র একটি বুটিক হাউজের মধ্যে সীমাবদ্ধ?

নিত্য উপহারের ১৮ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গত ২২ ও ২৩ জুন ‘স্বদেশী চর্চার ১৮ বছর পূর্তি উদযাপনও  প্রদর্শনী’র আয়োজন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিল্পী হাশেম খান বলেন, ‘নিত্য উপহার স্বদেশি চর্চার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছে। বাংলাদেশের পোশাকের ক্ষেত্রে বাহার রহমান ও নিত্য উপহার একটি বিপ্লব ঘটিয়েছে।’ একথার পরে আর কোন কথার দরকার নেই।সময়-দুঃসময় পাড়ি দিয়ে আসা একজন বাহার রহমান সৎ,নিষ্ঠা,একাগ্রতা এবং লেগে থাকা মধ্য দিয়ে দেখিয়েছেন হয়-ইচ্ছে থাকলেই হয়। নিত্য উপহার ও  বাহার রহমান সমকালীন সময়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। কবি সুকান্তের আঠারো বছর বয়স কবিতার মধ্য দিয়ে যে কথা বলতে চেয়েছেন বাহার রহমান সেকথারই বাস্তবায়ন করেছেন। আঠারো বছরে বাহার রহমান নিজেকে অতিক্রম করেছেন। মানুষ স্বপ্ন দেখলে তা সততা,নিষ্ঠা দিয়ে পুষলে এবং একাগ্রতা থাকলে যে বৃথা যায় না্,অভিষ্ট লক্ষ্যে সে পৌঁছায় বাহার রহমান তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। নিত্য উপহার,শংখবার শুধু নয় বাহার রহমান আরও বড়। তার থেকে তিনি অনেক বেশি অতিক্রান্ত। আঠারো বছর খুব বেশি সময় না। এর মধ্যে এই অবস্থান তৈরি বিশাল ব্যাপার। আজ নিত্য উপহারের বিকাশে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যে‘র ‘আঠারো বছর ’কবিতাটা মনে পড়ছে

আঠারো বছর বয়স কী সুঃসহ
স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি,
আঠারো বছর বয়সেই অহরহ
বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি ।

আঠারো বছর বয়সের নেই ভয়
পদাঘাতে চায় ভাঙতে পাথর বাধা,
এ বয়সে কেউ মাথা নোয়াবার নয়---
আঠারো বছর বয়স জানে না কাঁদা ।’

/ডিজি