• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২১, ০৪:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১২, ২০২১, ১০:০২ পিএম

পবিত্র শবে বরাতে যেভাবে ইবাদত করবেন

পবিত্র শবে বরাতে যেভাবে ইবাদত করবেন

আজ পবিত্র শবে বরাত (লায়লাতুল বরাত)। মুসলমানদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ এক রাত্রী। মহান আল্লাহ তাআলার রহমত লাভের উদ্দেশ্যে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা এই রাতে নামাজ, দোয়াসহ ইবাদতে মশগুল থাকবেন। এ রাতে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য তার অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেবেন।

আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, মানুষকে বিচার করা হবে তার তাকওয়া দ্বারা। আর নামাজের মধ্য দিয়ে তাকওয়া লাভ করা যায়।

পবিত্র ও বরকতময় এই রাতের ইবাদতের নিয়ম সঠিকভাবে জেনে নিন। সেই সঙ্গে বেশকিছু সতর্কতাও মেনে চলুন।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ত_

পাক পবিত্র হয়ে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়াবেন। এরপর আরবি, বাংলা যেকোনও ভাষাতেই নিয়ত করতে পারেন।

বাংলায় নিয়ত করবেন, "দুই রাকাত নফল নামাজ/ সালাত কিবলামুখী হয়ে পড়ছি, আল্লাহু আকবর"।

শবে বরাতের ইবাদত_

শবে বরাতের জন্য আলাদা নিয়মের কোনও নামাজ নেই। সাধারণ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়মেই নফল নামাজ আদায় করতে পারেন মুসলিমরা।এই রাতটি ইবাদত বন্দেগির করে কাটাতে হবে। নামাজ, কোরআন তেলওয়াত, দোয়ার মাধ্যমে কাটাবেন পবিত্র এই রাত্রী। বিশ্ব মুসলিম বিশেষ কিছু ইবাদত করেন।

সন্ধ্যায় মাগরিব নামাজের পর হায়াতের বরকত, ঈমানের হেফাযত এবং অন্যের মুখাপেক্ষী না হওয়ার জন্য দুই রাকাত করে মোট ৬ রাকাত নফল নামাজ পড়া উত্তম। ৬ রাকাত নফল নামাজের প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা ও এরপর যেকোনো একটি সূরা পড়তে হবে। দুই রাকাত নামাজ শেষ করে সূরা ইয়াছিন বা সূরা ইখলাছ ২১ বার করে পড়বেন।

  • ২ রাকাত নফল নামাজের জন্য প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং ১৫ বার করে সূরা এখলাছ পড়বেন। এরপর সালাম ফেরানোর পর ১২ বার দুরূদ শরীফ পড়বেন। ফযীলত-রুজিতে রবকত, দুঃখ-কষ্ট হতে মুক্তি লাভ করবে, গুনাহ হতে মাগফিরাতের বখসিস পাওয়া যাবে।
  • ৮ রাকাত নফল নামাজের জন্য দুই রাকাত করে পড়তে হবে। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর, সূরা এখলাছ ৫ বার পড়তে হবে। একই নিয়মে বাকি রাকাতও নামাজ আদায় করতে হবে। বাকি সব। ফযীলতঃ গুনাহ থেকে পাক হবে, দোয়া কবুল হবে এবং বেশি বেশি নেকী পাওয়া যাবে।
  • ১২ রাকাত নফল নামাজের জন্য় দুই রাকাত করে পড়বেন। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর, ১০ বার সূরা এখলাছ এবং এই নিয়মে বাকি নামাজও শেষ করতে হবে। ১০ বার কালেমা তওহীদ, ১০ বার কালেমা তামজীদ এবং ১০ বার দুরূদ শরীফ পড়বেন।
  • ১৪ রাকাত নফল নামাজের জন্য দুই রাকাত করে পড়বেন। প্রতি রাকাত সূরা ফাতিহার পর যেকোনো একটি সূরা পড়ুন। ফযীলত- যেকোনো দোয়া চাইলে তা কবুল হবে।
  • ৪ রাকাত নফল নামাজ এক সালামে পড়তে পারেন। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পর ৫০ বার সূরা এখলাছ পড়বেন। ফযীলত- গুনাহ থেকে  এমনভাবে পাক হবে যে সদ্য মায়ের গর্ভ হতে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন।
  • আট রাকাত নফল নামাজ এক সালামে পড়তে পারেন। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১১ বার সূরা এখলাছ পড়বেন।
  • ‘সালাতুল তাসবীহ' নামাজও পড়তে পারেন। এই নামাজের অনেক ফযীলত রয়েছে।

শবে বরাতের রোজা_

শবে বরাতের পরদিন রোজা রাখা সম্পর্কে একটি হাদিস রয়েছে- হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "পনের শাবানের রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত বন্দেগিতে কাটাবে এবং দিনের বেলা রোজা রাখ। কেননা এ রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে আসেন এবং বলেন, কোনও ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। আছে কি? কোন রিজিক প্রার্থী? আমি তাকে রিজিক দেব। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রয়োজনের কথা বলে তাদের ডাকতে থাকেন।(ইবনে মাজা, হাদিস নম্বর-১৩৮৪)

যা মেনে চলবেন_

  • নামাজের আগে নিজে পাক পবিত্র হয়ে নিন।
  • নামাজের স্থানকে পাক পবিত্র রাখতে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন।
  • নামাজের জন্য আরামদায়ক  পোশাক বাছাই করুন।
  • খাবার খাওয়া নিয়ে সতর্ক হোন। এমন খাবার খাবেন না যা নামাজের মাঝে সমস্যা করবে।
  • সারারাত ইবাদত বন্দেগিতে কাটাবেন। তাই হাতের কাছে কিছু শুকনো খাবার রাখতে পারেন।
  • কোলাহল নয়, একান্তে আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থাকুন।
  • নামাজে কিরাআত ও রুকু-সেজদা দীর্ঘ করুন।
  • পরের দিন নফল রোজা রাখতে পারেন।
  • মনে রাখবেন, শবে বরাতের সারারাত ইবাদত শেষে ফজরের নামাজ পড়া গুরুত্বপূর্ণ। খেয়াল রাখবেন ঘুমের কারণে এই নামাজ যেন বাদ না হয়। শবে বরাতের নফল শেষ করে বেতের নামাজ পড়ুন। এরপর ফজরের নামাজ আদায় করুন।