• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০১৯, ০৮:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৫, ২০১৯, ০৮:০৪ পিএম

বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা

গোলাম কিবরিয়া পিনু’র কবিতা

গোলাম কিবরিয়া পিনু’র কবিতা

টিস্যু পেপার 

টিস্যু পেপারের মতন
ব্যবহৃত হওয়ার পর তুমিও পড়ে থাকবে
                     ময়লার ঝুড়িতে! 

তেজপাতাও হয়ে পড়ে পরিত্যাজ্য
পায়েসের কাছ থেকে!
পরিত্রাণ ও পরিত্যাগের মধ্যে
                 কতটুকু থাকে ব্যবধান!
অগ্নি ও জ্বালানির তো একই গান!

টিস্যুপেপারও ছিল তরতাজা গাছের অংশ
নিরীহ গাছের অংশ বংশচ্যূত হয়ে
                          খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে
চলে গিয়েছে লরিতে করে কারখানায়!
                  চেরাইকলে উঠেছে
আজব কারখানায় কে কখন কাকে কীযে বানায়!

বীজ 

নিজ বীজে লুকিয়ে রয়েছি
এখনো বপন হইনি
           সূচীভেদ্য অন্ধকারে আছি!
জল কাদা আলো
কিছুই পেলাম না এখনো
অঙ্কুরোদগম হবে কবে?
           শিকড় ছড়িয়ে পড়বে কবে?
বীজকোষ নষ্ট হয়ে যাবে
              এভাবে থাকলে!
অভয়অরণ্য গড়ে উঠেছে কতক
তারপরও আমি 
              চাষকবলিত হয়ে
মাটি ফুঁড়ে বের হতে পারলাম না!
ক্ষেত্রবসুধা এতটা বিরূপ কেন?

নিমকহারাম

নিমকহারাম
        নিমকি ও চা খাওয়ার সময়
              গদগদ গররাজি নয়!
পরের দিন ও দৃশ্যে
             কাকে দেয় সে অভয়?

আমার ক্ষতিতে যে যতি টানে না
তার কোলে গিয়ে বসে!
            অংকটা কষে
                   লাভের!
এরপর পুরোপুরি চায় আমারও লয়!

নিবিড়ভাবে সে এখন শত্রুর শিবিরে
নীড়ে নীড়ে এমন হারামি
                চতুরামি করে
চড়–ই পাখির বাসা ভাঙে!
গাঙে হাহাকার নৌকো লুঠের ভয়
বারবার হবে হারামির জয়?
         
জলরাক্ষস

একটি পুকুরে
        একটি নদীতে
এতগুলো জলরাক্ষস কখন যে
                 জায়গা করে নিল!
এখন সাঁতরানোর একটু জায়গা নেই!
    
কচুরিপানার উপদ্রব সহ্য করে
তাদের দঙ্গল দু’হাতে সরিয়ে
এইতো কিছুদিন আগেও
              জলে নামা যেত
                 গোসলও করা যেত!
আর এ-সময়ে?

একটা পুকুর
                             একটা নদীও নেই 
যেখানে জলরাক্ষসের উপদ্রব নেই!

ফলের প্রাচুর্য 

স্নেহের প্রলেপ নিয়ে আমিও মসৃণ
                হয়েছি সেদিন
অপরের পুত্র হয়েও  তোমার পুত্রের মতন
ঢাকনা খুলেছি
আরও প্রশস্ত হয়ে আরও কাছাকাছি
              শিশুগাছ হয়ে উঠি! 
তেজপাতার বনে জন্ম নিয়ে 
তেজোদীপ্ত হয়ে আমিও ফলশালী হই!
জন্মগত সম্পর্ক না থাকলেও আমিও 
তোমার ফলের প্রাচুর্য বাড়াতে পারি!

জন্তু

নদীটার ¯স্বচ্ছজল ও উল্লোল দেখে
            আমারও ভালো লেগেছিল!
         তার পাড়ে গিয়ে বসলাম
অন্যান্য দূষিত নদী থেকে
              তাকে আলাদা ভাবতে লাগলাম!
যখনই তার জলে নেমে
সাঁতরাতে থাকলাম
               তখন কী কাণ্ড!
নদীটার ভাণ্ডভরা জল
             এঁদোপুকুরের জল হয়ে গেল
             মজাপুকুরের জল হয়ে গেল!
আমি ভাবলাম
নদীও কি পেটে ধরে রাখে কোনো জন্তু
তার জলহস্তী দূষণ তৈরিতে পটু!