• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০১৯, ০৮:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৩, ২০১৯, ০৯:৪১ পিএম

শিল্পী শাকিলা খান চয়ন : প্রতিকূলের যাত্রী

শিল্পী শাকিলা খান চয়ন : প্রতিকূলের যাত্রী
চিত্রশিল্পী শাকিলা খান চয়ন

শিল্পী শাকিলা খান চয়ন। রিয়েলেস্টিক ধারায় কাজ করেন। ফিগারেটিভ কাজে অভ্যস্ত একজন মেধাবী শিল্পী তিনি। তার কাজে সে স্বাক্ষর পাওয়া যায়। যেসব শিল্পরসিকরা রং-তুলির কাজের আদ্যোপান্ত বোঝেন, চিত্রকলার নন্দনতত্ত্বের গভীরতা জানেন তারা শিল্পী শাকিলা খানের কাজ দেখে বিমোহিত হবেন । তার কাজে অন্তর্গত একাকিত্ব রয়েছে, রয়েছে একাগ্রতাও। তার পোর্ট্রেইটের কথা দিয়েই যদি শুরু করি তাহলে দেখা যাবে- আমাদের দেশের পোর্ট্রেইট শিল্পচর্চা যারা করেছেন তাদের মধ্যে প্রাণেশ মণ্ডল , অলোকেশ ঘোষ, শেখ  আফজাল, কামাল পাশা চৌধুরী, কিরীটি রঞ্জন বিশ্বাস, বিকাশ, তুষার, পুলক- যার যার কাজের মধ্য দিয়ে নিজস্ব ধারা তৈরি করেছেন।

`দ্য আর্থ’  সিরিজের একটি ছবি

 শিল্পী শাকিলা খান চয়ন  পোর্ট্রেইট আঁকার মধ্য দিয়ে তার পূর্বসূরীদের পথে যেতে যেতে নিজের আলাদা পথটি নির্মাণ করেছেন। সেটা তার একান্তই নিজস্ব। বলা যায় প্রাতস্বিক ধারা তৈরিতে মগ্ন এ শিল্পী অত্যন্ত শ্রম নিষ্ঠা দিয়ে তার কাজ করেছেন নির্মোহ দৃষ্টিকোন থেকে। তার আঁকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম , শিল্পী জয়নুল, পটুয়া কামরুল হাসান, শিল্পী শফিউদ্দিন, শাহাবুদ্দিন আহমেদ,নভেরা আহমেদ, কথাশিল্পী মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ শামসুল হক, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ থেকে প্রবাসী শিল্পী, চিকিৎসক লাবণ্য সায়মা রহমানের ছবিতেও তার নিজস্বতা রয়েছে। সবগুলি ছবি বিমোহিত হওয়ার মতো। একজন শিল্পীর শিল্পগুন ফুটিয়ে তুলতে এধরনের ছবির বিকল্প নেই।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

চারুশিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও যশস্বী পোর্ট্রেইট শিল্পী কামাল পাশা চৌধুরী  শিল্পী শাকিলা খান চয়নের পোর্ট্রেইট নিয়ে বলেন, শিল্পীর টোনাল ওয়ার্ক খুবই সূক্ষ্ম, পোর্ট্রেইট আঁকায় তিনি লাইন ও ফর্মকে গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি। তবে তার কাজের মূল বিষয় হলো ড্রয়িংয়ের পারফেকশন। তার ছবির ভেতরে পরিমিতি বোধের ব্যাপারটিও লক্ষণীয়। তিনি কাজে পটু ও দক্ষ এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। কাজের প্রতি তার একনিবিষ্টতা তাকে প্রাতস্বিক ধারার শিল্পী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।  তার তুলিতে শিল্পকর্ম জীবন্ত হয়ে ওঠে।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সম্প্রতি এক প্রদর্শনীতে শাকিলা খান চয়নের ছবি ‘দ্য আর্থ’ সম্পর্কে তিনি বলেন,আবহমান মানবজীবনের পথ চলার নামই ‘দ্য আর্থ’। ‘পৃথিবীতে আসা দু’জন মানুষের হাত ধরে এগিয়ে আসা আজকের মানব ইতিহাসের সূচনা। গন্ধম ফলের স্বাদ এবং র্পযবেক্ষণ বিন্দু বিন্দু পথের সৃষ্টি। উদ্ভিদ অঙ্কুরিত কোমল লতার মতো তুলে ধরে নিজেদের। মিলনের আলিঙ্গনে আবির্ভূত যে শিশু, সে হাত পা ছড়িয়ে জানান দেয় আমি এসেছি। প্রকৃতির সহবাসে ছড়িয়ে পড়ে জনমানবের কোলাহল। সমাজ সংসারে সৃষ্টি এবং ধ্বংসের আস্ফালনে শুরু হয় ভালো আর  মন্দের। অমাবশ্যা আর পূর্ণিমা তাল আর লয়ে যতই সুর তুলুক তা বাঁধতে পারে না মানুষকে। যুগে যুগে সব বাধা-বিপত্তিকে তুচ্ছ করে এগিয়েছে মানব বন্ধন। তাইতো নতুন সূর্যকে সাক্ষী রেখে হাতে হাত রাখে।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম


জেন্টেঙ্গেল মূলত একটি এ্যাবস্ট্রাকট আর্ট। এর আবিষ্কার করেন রবার্টস এবং মারিয়া থমাস। কল্পনা প্রশমিত করা সৃজনশীলতা এবং আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার দারুণ একটি কৌশল এটি। স্কুলে এবং হাসপাতালে এর প্রয়োগের মাধ্যমে ফোবিয়া, আসক্তি, ব্যথামুক্তি, দ্বন্দ্ব এবং কর্মক্ষেত্রে বার্ন আউট থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি জনপ্রিয় ফলপ্রসূ কৌশল। মূলত জেন্টেঙ্গেল করা হয় সাদা কাগজ বা আরিসের ওপর। নির্দিষ্ট মাপ ৩.৫/৩.৫। তাতে কালো কলমে কাজ করে। জেন্টেঙ্গেল প্যাটার্নে আমি আকৃষ্ট হই। এ প্যাটার্নের সাহায্যে আমি আমার ২৬.৭ ফুট স্ক্রল পেইন্টিংটি করেছি। জেন্টেঙ্গেল শিল্পীদের মতো আমিও বিশ্বাস করি জীবন এক শিল্পকর্ম এবং প্রতিটি ব্যক্তি একজন শিল্পী।’ শিল্পী শাকিলা খান চয়ন তার কালি ও কলমে করা মাইলফলক চিত্রকর্ম ‘দ্য আর্থে’র আঁকার পেছনের বক্তব্যটা এভাবে দিয়েছিলেন ।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন

 তার কাজ সেটা জলরঙ, পেন্সিল, এক্রেলিক বা কালি ও কলমে হলেও তাঁর ছবিকে আমরা বিচার করব তাঁর ছবির জমিন বা টেক্সচার, মাধ্যম বা  তার কাজের মিডিয়া এবং আর পেন্সিল বা তুলির স্টোক দিয়ে ধাক্কা মারা চিত্রকর্মের শিল্প - শৈলী পরীক্ষণের মাধ্যমে।  চিত্রকলার রঙ-রেখার বিচারে  একদিকে তিনি যেমন রঙ-রেখার বিন্যস্ত কাজ করেছেন, অন্যদিকে তার মোটিভ ও চিত্রশৈলী দিয়ে বোঝা যায় চিত্রকলার মধ্য দিয়ে  কত বড় শব্দমালা তৈরি করা যায়। কিউবিস্ট চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো তার গোয়ের্নিকা দিয়ে স্পেনের ফ্যাসিবাদী শাসন ও ফ্যাঙ্কোর দুঃশাসনকে আজও বাঁচিয়ে  রেখেছেন। এটাকে এক কথায় শিল্পের শক্তি বলা যায়। তার মানেই চিত্রকলা এমনই মাধ্যম একে সহজে খারিজ করার বিষয় না।

পটুয়া কামরুল হাসান

রঙ-রেখা ফিগারের শক্তি যেমন বতিচেল্লি থেকে ভ্যানগঘ, ভিঞ্চি থেকে আমাদের সুলতানের চিত্রকলায় দেখা যায়। তেমনি দেখা যায় শিল্পের ভুবন জুড়ে। ছবির বক্তব্যের ভিন্নতা তৈরি হতে পারে দেশভেদে, কালভেদে, প্রকাশভঙ্গি ভেদে। কিন্তু ছবি মানেই ইতিহাস,ছবি মানেই না বলা অনেক কথা। শিল্পী না থাকতে পারে,ছবি থাকে, ইতিহাস থাকে । ভিঞ্চি নেই, মোলিসা আছে। নতুন করে পুরানো ইতিহাস বেরিয়ে আসছে ।  সময়ের প্রেক্ষিতে শিল্পীদের চিত্রকলার রীতিতে, আবেশে, উপস্থাপনে পরিবর্তন আসে।  রেখার সূক্ষ্মতা বা রঙের রাজনীতি প্রচলিত চিন্তাকে অতিক্রম করে। কোনো সময় শিল্পীদের চিন্তা ও মননের নিবিষ্টতা দিয়ে যে ভাষা তৈরি হয় তার মধ্য দিয়ে তৈরি শিল্পীর চিত্রকলার গতি-প্রকৃতি।

শিল্পী শফিউদ্দিন আহমেদ                                                   

 যেটা তার নিজস্বতা তৈরির জন্য জরুরি। সেখানে সময়ের প্রয়োজনেই তুলির আঁচড়ে পরিবর্তন আসতে পারে। রেখা হয়ে ওঠে বলিষ্ঠ, গতিশীল। আর শিল্পীমনের যে গহীনে অন্তর্গত আকুতি, তাকে প্রকাশ করে রঙে-রেখায় তার ক্যানভাস জুড়ে, যেন তার ক্যানভাসে ক্রুশবিদ্ধ সে। চিত্রকলার প্রচলিত ফর্ম বদলে শিল্পীর জীবন ও অভিজ্ঞতা উঠে আসে ক্যানভাসে। প্রকাশের এ ভঙ্গিমার ভিন্নতার মধ্য দিয়েই জন্ম হয় ‘ইজম’ বা ‘বাদ’-এর। রিয়েলেস্টিক কাজে ফিগারেটিভ ফর্ম সরাসরি মানুষকে আকর্ষণ করে। মানুষের সাথে এভাবে ছবি আত্মিক যোগাযোগের সাঁকো নির্মাণ করে। আটলান্টিকের বিশাল তরঙ্গ রাশির মধ্য দিয়ে বত্তিচেল্লি, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, মিকেলেঞ্জেলো বা রাফায়েলের তুলির নিপুণ আঁচড়ে ছবির ক্যানভাস জীবন্ত হয়ে উঠেছিল সেই কবে পঞ্চদশ শতকে। ঘটনার শেষ এখানেই নয়। এর মধ্য দিয়ে মানুষের সাথে ছবির সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইজমের হাত ধরে তা বাংলা অঞ্চলে যে প্রভাব ফেলে তার ধারায় আঁকাঝোকা শুরু শিল্পী চয়নের। অনেক সংগ্রামে শাকিলা খান চয়নের শিল্পকলার পথে টিকে থাকা। বন্ধুর পথ পেরিয়ে দিনে দিনে বেড়ে ওঠে তার চিত্রকলা। 

নভেরা আহমেদ

লক্ষ্মীপুর, ফেনীতে বেড়ে ওঠা শাকিলা খান চয়নের জন্ম একটা সংস্কৃতিমনা পরিবারে হলেও পারিপার্শ্বিকতা ছিল ধর্মপ্রাণ মানুষদের এলাকা। ফলে চিত্রকলায় পড়াশুনা করার কথা কখনো ভাবেননি। ছোটবেলা থেকেই আঁকতেন। বড়বোনের দেখাদেখি সে আঁকাআঁকি আরো গতিশীল হলো। এরপরে এলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পালা। দুবোন আগেই পড়তেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে । পরে বড়বোন তাঁকে বললেন চারুকলায় ভর্তি হতে। শিল্পী চয়নের ইচ্ছের বাঁধ খুলে গেল। তিনি ইচ্ছে করলেন চারুকলায়ই পড়বেন। এজন্য সায়েন্স ফ্যাকাল্টির পরীক্ষায় শুধু হাজিরা দিলেন। কিন্তু টিকে গেলেন চারুকলায়। সংস্কৃতিমনা মা খুশি হলেন কিন্তু বাবা  রাজি হবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় শুরু হলো ।

 অতঃপর বাবা রাজি হলেন। ক্লাসে ফিগারেটিভ কাজে খুব ভালো করতেন। শিক্ষকরা তার কাজের জন্য খুবই স্নেহ করতেন। কিন্তু চট্টগ্রাম আর্ট কলেজের ২ বছরের ক্লাস করে যারা আসতেন তারা খুবই ভালো আঁকতেন। তাদের আঁকা দেখে শিল্পী চয়নের  মনে হতো কিছুই হবে না। তবে বড়রা আশা দিত, যে যারা আর্ট কলেজ থেকে আসে তাদের চেয়ে নতুনরা অনেক বেশি ভালো করে এমনও হয়। 

কথাশিল্পী মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

পাস করার পর সমস্যা হলো ছবি আঁকায়। একদিকে ধর্মপ্রাণ আত্মীয় স্বজনরা বলতেন ছবি আঁকা হারাম। তারপরও শিল্পী আঁকেন ফিগারেটিভ ছবি। শিল্পী  শাকিলা খান চয়ন বলেন ,এটা মূলত ধর্মের বক্তব্যের বিকৃতি হলেও সমস্যা হলো ছবি আঁকা। তারপরে যা হয়। শিল্পীর অভিমান বলে কথা। তিনি ছবি আঁকলেন না ১৬ বছর। ততোদিনে দুই সন্তান লুব্ধক আর দুর্লভের মা হয়ে গেছেন তিনি। ছেলেরাও বড় হয়ে গেছে। এবার আর তাকে ঠেকায় কে? শুরু হলো ছবি আঁকা। ফেসবুক হলো মাধ্যম। প্রতিদিন আঁকতেন ছবি পোস্ট দিতেন।  তার আঁকা দেখে দেশে-বিদেশে তারা চিত্রকলার খ্যাতি যেমন ছড়িয়ে পড়ল, বন্ধুরাও আবিষ্কার করল শিল্পী চয়নকে। তার আঁকা দেখে সক্রিয় হলো অনেক শিল্পী। শিল্পী চয়ন ফেসবুকে গ্রুপ খুললেন ‘কন্যা’ । তার মধ্য দিয়ে সংগঠিত হলো নারী শিল্পীরা। শিল্পী চয়ন তাদের নিয়ে এক্সিবিশন করলেন। যেটা খুব আলোচিত হলো। একাধিক জাতীয় পত্রিকায় লেখা হলো সে এক্সিবিশন নিয়ে।

মুর্তজা বশীর

‘শাকিলা চয়ন ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। দুই সন্তানের জননী শাকিলা পারিবারিক কারণে নিজে ছবি আঁকতে না পারলেও কোথায়, কখন কোন প্রদর্শনী হচ্ছে তা অন্যদের জানাতেন। তারপর ১৮ বছর পর বিদ্রোহ করে আঁকার জগতে ফিরে এসেই গত চার বছরে ৫০০ ছবি এঁকে ফেলেছেন। কিছু ছবি বিক্রি হয়েছে। কেউ মা আবার কেউ কন্যার বয়সী। বিভিন্ন ব্যাচের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ১৬ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন চারুকলায় পাঠ নেয়া বেশিরভাগ প্রাক্তন এবং অল্প কয়েকজন বর্তমান ছাত্রীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে শিল্পী শাকিলা চয়নের উদ্যোগে ২৪ নারী চিত্রশিল্পীকে নিয়ে প্রযুক্তি যোগাযোগ মাধ্যম মেসেঞ্জার গ্রুপ ‘কন্যা’।  শুরুতে বিভিন্ন শো নিয়ে, বিভিন্ন শিল্পীর কাজের খবর নিয়ে গ্রুপে আলাপ হতো। পরে ধীরে ধীরে তাদের নিজের কাজ নিয়ে আলাপ শুরু হয়।

শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ

এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠিত বিষয় ছিল চিত্রকলা কিন্তু পারিবারিক, সামাজিক বাধা কিংবা আলস্যের কারণে হাতে আর রঙ-তুলি নেয়া হয়নি, ক্যানভাসে জীবনের রঙ চিত্রায়ণও করা হয়নি। এই গ্রুপ তাদের হাতে আবারও রঙ-তুলি এবং ক্যানভাসের মেলবন্ধ ঘটাতে সহায়তা করেছে। অনেকে নিয়মিতই আঁকতেন। আবার এমনও আছে, কেউ ১৮ কিংবা ৩৫ বছর পর এই গ্রুপকে কেন্দ্র করে আঁকার জগতে ফিরে এসেছেন। গ্রুপটির সার্থকতা এখানেই। এই গ্রুপের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ‘চলো আঁকি’ স্লোগানকে সামনে রেখে ‘কন্যা আর আমরা’ শিরোনামের যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। যেটি গত ২৫-২৭ জানুয়ারি শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ২ নম্বর গ্যালারিতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক

প্রত্যেকের তিনটি করে মোট ৭২টি চিত্রকর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছিল।শিল্পী শাকিলা খান চয়নের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বহুদিন ছবি আঁকা না হলেও এখন পোর্ট্রেইটের একটা এক্সিবিশন করব। অন্যান্য কাজ নিয়েও আরেকটা এক্সিবিশন করার প্রস্তুতি রয়েছে। তবে তার পোর্ট্রেইট খুবই আলাদা। তাঁর আকা সব প্রতিকৃতিতে যেমন ব্যক্তির অন্তর্গত শুভচেতনাকে তুলে ধরা হয় তেমনি মানুষের স্বভাবগত চেতনার একটা প্রতিচ্ছবির প্রভাব থাকে তার ছবিতে। এটা  তার নিজস্ব অংকন রীতি বলা যায়।  ‘পরিবারের কাছে টাকা চেয়ে ছবি আঁকতে ইচ্ছে করে না। তাই বাসায় কিছু ছেলেমেয়েরা এসে শিখে, ছবি বিক্রি করি, পোর্ট্রেইট আঁকি এভাবেই আকার খরচ চলে।’ কথাটি বললেন শিল্পী শাকিলা খান চয়ন।

প্রবাসী শিল্পী ও চিকিৎসক লাবণ্য সায়মা রহমান

পরিবারের অমতে যে বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে তিনি ১৮ বছর ছবি আঁকেননি সে ১৮ ববছর ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের চিত্রকলার। সে ক্ষতি পোষাতে মরিয়া শিল্পী চয়ন। খোলামনের জাতশিল্পী চরিত্রের এই চিত্রকর চিত্রকলায় অনেক কিছু দেবে এ প্রত্যাশা আমাদের।