• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০১৯, ০৯:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৫, ২০১৯, ০৯:২৮ পিএম

‘আষাঢ়ের নব আনন্দ’

‘আষাঢ়ের নব আনন্দ’
সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করছেন সঙ্গীত ভবনের শিল্পীরা-ছবি : জাগরণ

আবহমান বাঙালির রয়েছে হাজার বছরের ঐশ্বর্যমণ্ডিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। যার সঙ্গে একাকার হয়ে আছে বৈচিত্র্য-ঘেরা ষড়ঋতু। বিশেষ করে বর্ষাকাল। এ অর্থে বাঙলা-বাঙালি আর বর্ষার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। বাংলার প্রকৃতি সারা বছর অপেক্ষায় থাকে বর্ষার ঘণমেঘস্নিগ্ধ অম্বর ছায়াতলে কেতকী-কদম-যূথিকা। পুষ্পবাসরে অবিরল প্রেমরস ধারায় সিক্ত নিষিক্ত হতে। নৃত্যপর সখিরা বাজায় মেঘের মৃদঙ্গ আষাঢ়ের নব আনন্দে। জেগে ওঠে জীবন। আর তাইতো বাঙালি গান-কাব্য, সাহিত্য সর্বদা বর্ষাবন্দনা।

বর্ষাকে স্বাগত জানিয়ে বর্ষার কিছু প্রাণছোঁয়া গান নিয়ে শনিবার (১৩ জুলাই) বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে  ‘আষাঢ়ের নব আনন্দ’ শিরোনামে  আয়োজন করে প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কলিম শরাফীর হাতে গড়া গানের সংগঠন সঙ্গীত ভবন।

অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সঙ্গীত ভবনের শিল্পীদের সমবেত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। তারা পরিবেশন করেন ‘বিশ্ববীণারবে বিশ্বজন মোহিছে’ গানটি। এরপর একক গান পরিবেশন করেন সীমা সরকার। তিনি পরিবেশন করেন ‘হেরিয়া শ্যামল ঘন নীল গগনে/সেই সজল কাজল আঁখি পড়িল মনে’ গানটি। তার এই গান রেশ কাটতে না কাটতে মঞ্চে আসেন সুপর্না দে ও তাহমিনা তনু গেয়ে শোনান ‘আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে/জানি নে, জানি নে কিছুতে কেন যে মন লাগে না’। আমিনা আহমেদের কণ্ঠে শোনা গেলো দ্বিজেন্দ্রগীতি ‘বরষা আইল ওই ঘন ঘোর মেঘে দশদিক তিমিরে আঁধারি’। এরপর দ্বৈত কণ্ঠে সালেহ মোহাম্মদ খোকন ও নিবেদিতা হালদার পরিবেশন করেন ‘এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে’। রিফাত জামাল মিতু ‘আমার নিশীথরাতের বাদলধারা, এসো হে গোপনে, আমার স্বপনলোকে দিশাহারা’। সর্ববানী চক্রবর্তী ‘ওগো তুমি পঞ্চদশী, তুমি পৌঁছিলে পূর্ণিমাতে’। গোলাম মোস্তফা গাইলেন ‘পুবালী বাতাসে’। এমদাদ হোসেন ‘আকাশ এতো মেঘলা যেও নাকো একলা’। অনেকগুলোর গানের পর ‘এসো শ্যামল সুন্দর, আনো তব তাপহরা তৃষাহরা সঙ্গসুধা’ গানের সঙ্গে একক নৃত্য পরিবেশন করে নেওয়াজ মৃন্ময় খুকুমনি।

নাচের পর আবার গানের পালা। এবার একক গান নিয়ে মঞ্চে আসেন স্বপন কুমার দাস। তিনি গাইলেন ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী, উড়ে চলে দিগ্দিগন্তের পানে’। বেশ কয়েকটি একক গানের পর আবার দ্বৈত গানের পালা। এবার মঞ্চে আসেন কনক খান ও খন্দকার জাফর সাদেক পাভেল। তারা দ্বৈত কণ্ঠে গাইলেন ‘এই মেঘলা দিনে একলা’।

তাদের দ্বৈত পরিবেশনা শেষে মঞ্চে আসেন সঙ্গীত ভবনের সভাপতি ও কণ্ঠশিল্পী পীযুষ বড়ুয়া। তার কণ্ঠে শোনা গেলো নজরুলগীতি ‘শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে’। তার এই পরিবেশনার পর সুমন চৌধুরী গাইলেন ‘গহন মেঘের ছায়া ঘনায় সে আসে’। মাহমুদ সেলিম গাইলেন ‘বড় একা লাগে এই আঁধারে’।

‘ধরণীর গগনের মিলনের ছন্দে, বাদলবাতাস মাতে মালতীর গন্ধ’ গানের সঙ্গে আয়োজনের দ্বিতীয় এবং শেষ একক নৃত্য পরিবেশন করেন তাহনীনা ইসলাম।

দু’টি সমবেত, দু’টি দ্বৈত, দুইটি একক নৃত্য ও ১০টি একক গান দিয়ে সাজানো বর্ষা বিষয়ক মনোমুগ্ধকর এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা শুরু হয়েছিল সমবেত গানের মধ্য দিয়ে আর শেষও হয় সমবেত কণ্ঠে গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। সঙ্গীত ভবনের শিল্পীরা সম্মিলিত কণ্ঠে গাইলেন ‘অম্বরে মেঘ মৃদঙ্গ বাজে’।

গানের ফাঁকে ফাঁকে বর্ষাবিষয়ক রচনাবলী থেকে আবৃত্তি করেন মৌমিতা জান্নাত।

অনুষ্ঠানের সূচনাতেই সংগঠনের সভাপতি পীযুষ বড়ুয়ার জন্মদিন উপলক্ষে তাকে সঙ্গীত ভবনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। আগত দর্শক-শ্রোতাতের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সঙ্গীত ভবনের সভাপতি পীযূষ বড়ুয়া। তার আগে পীযুষ বড়ুয়াকে নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করে সঙ্গীত ভবনের শিক্ষক ও গুণিশিল্পী মাহমুদ সেলিম। 

প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কলিম শরাফীর হাত ধরে ৩৫ বছর আগে গানের বিদ্যাপীঠ হিসেবে পথচলা শুরু হয় সঙ্গীত ভবনের।গানের বিদ্যাপীঠের কার্যক্রম গত তিন বছর ধরে সাময়িক বন্ধ থাকলেও থেমে নেই সঙ্গীতায়োজনের।

এসএমএম

আরও পড়ুন