• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২০, ০৭:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৫, ২০২০, ০৭:২৪ পিএম

রাশিদা তিথির কবিতা

রাশিদা তিথির কবিতা

দহনবেলা

এখনো কেনো অমন উন্মাদনী দৃষ্টি তোমার
যখন স্বেচ্ছায় তুলে নিয়েছো বেদনার সুধা!
হৃদয় সিঞ্চানো অশ্রুবন্যায় আর বিলাপে
ভেসে যায়নি কি আজও দরদী বিশ্বাস!

রাজকন্যা!
বিধ্বস্ত নগরীর কে তোমাকে সংবর্ধনা দেবে
এরা কতোদিন ধরে আলোতে অন্ধকার খোঁজে !
এখানে প্রেম ভাবলেশহীন প্রতীকী এপিটাফ
এবার সময় হয়েছে, বন্ধ করো ওই চোখ।


স্বগতকথন

আমি বিষাদের কথা বলতে আসিনি।
মাটির বুকের মধ্যে বীজ ওম নেয় যে সুখে
সেইসুখ বুনতে চেয়েছি আমার বাগানে।

আকাশ কোনোদিনও কাছে হওয়ার নয়,
সেকথা জানে হরিৎ বনভূমি;
তবু তৃণ বুক পেতে মাখে নীলাম্বরের ছবি।

সবুজের মায়ায় নিজেকে উজাড় করে মেঘ,
কত গোপনবিরহ সঞ্চিত রাখে অশ্রুশ্রাবণে,
হিমশিশিরে আর তীব্রদহনে খরতাপে!

মালতি ফুটেছে বলেই ঝরেছে ভোরে।
আঁধার না-হলে কি আলোর দীপ্তি থাকে?
দূরে আছো বলেই কাছে পেতে চাই !

আমি বিষাদের কথা বলতে আসিনি।
সাগরের জল কণ্ঠে তুলেছি;
তাই আমি মিঠেজলের তীব্র তিয়াসি!


দুঃসময়

কতকাল ধরে শুয়ে আছো এই মাটিতে
খোলা আকাশের নিচে ,
প্রতিদিন সূর্য ওঠে, আকাশে মেঘের খেলা হয়,
আলোকবর্ণ আনন্দধারা এঁকেবেঁকে যায়।
তুমি কেনো তা স্পর্শ করতে পারো না!

ছড়িয়ে দিচ্ছ শ্রেণীবৈষম্যের বীজ;
উঠছে ফসল, ভরছে ভাণ্ডার ধর্মান্ধতার!
শুনতে পাও না বুকভাঙা আর্তনাদ,
চিনতে পারো না একান্ত আত্মজন!
রফিক, রহিম, পারুল, অতুনুদের
মানচিত্রে রক্ত ঢেলে লাঞ্ছিত করছ মনুষ্যত্ব!

আমারই নির্ণয়নে মসনদে রাজা,
পোড়াচ্ছ আমার আঁতুড়ঘর?
এ মাটি আমার ঠিকানা,
তোমার ঠিকানা আমি।
তবে এসো রাজা, ঐকতানে সাম্যের গান গাই!  

  সখা
আমি বিশ্বাস করি তোমায় সকালের মতো,
আমি বিশ্বাস করি তোমায় রাতের মতো,
শাখার বুকে লুকানো গোপন কুশির মতো।

তোমায় অনুভব করি স্বাধীনতার মতো,
অনুভব করি আমার জন্ম চিৎকারের মতো,
অনুভব করি চিরসুন্দর মৃত্যুর পদ শব্দের মতো।

তুমি আমার অদৃশ্য কারণে মনের উদাসী ব্যথা,
শ্যামল অরণ্যে বিছানো তরুণ রোদেলা উত্তরীয়,
তুমি আমার আনন্দ-শোকের আত্মগৃহকোণ।