সতর্ক থাকার পরামর্শ

চট্টগ্রামে বেড়েছে রাসেল ভাইপারের উপদ্রব

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১, ১০:০২ পিএম চট্টগ্রামে বেড়েছে রাসেল ভাইপারের উপদ্রব
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম ব্যুরো

পদ্মা তীরবর্তী কয়েকটি জেলায় বিচরণক্ষেত্র হলেও এবার চট্টগ্রামেও উপদ্রব বেড়েছে দেশের সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়ার। যার কামড়ে হতে পারে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ ভারী হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত, কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন উপসর্গ। এ সাপ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

তবে রাসেল ভাইপার বিষধর হলেও তাকে আঘাত না করলে সে কোনো ক্ষতি করে না। তাই এ ধরনের সাপ দেখলে একে ধরতে যাওয়া বা আঘাত করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আহসান মনসুর।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ১৭টি জেলাতেই রাসেল ভাইপারের উপস্থিতি রয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এই সাপের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। তবে বর্তমানে এই প্রজাতির সাপ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

গত ১০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দক্ষিণ কেদারখীল জামে মসজিদের পুকুরপাড়ে জালে আটকা পড়ে রাসেল ভাইপার। সাপটি ৯ ফুট লম্বা। সাপটিকে উদ্ধারে স্থানীয় বন বিভাগকে জানানো হলেও তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে সাপুড়েদের একটি দল এসে সাপটিকে নিয়ে যায়।

অন্যদিকে সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী বিচেও প্রায়ই দেখা মেলে রাসেল ভাইপারের। এ ছাড়া চন্দ্রনাথ পাহাড়, আনোয়ারা, লোহাগাড়া ও বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায়ও এই সাপের বিচরণ দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ঘন ঝোপ আর পরিত্যক্ত জমি অপেক্ষাকৃত কমে যাওয়ায় এই সাপ এখন কৃষিজমিতেই থাকে মনে করে আহসান মনসুর বলেন, যারা মাঠে কৃষিকাজ করেন তারা রাসেল ভাইপারের দংশনের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়ে থাকেন। এ ছাড়া বর্ষাকালে নদীর পানি বাড়ার ফলে ভারতের নদ-নদী থেকে ভেসেও এই সাপ বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এই প্রজাতির সাপের কামড়ের কিছুক্ষণ পরই দংশিত স্থানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ব্যথার পাশাপাশি দংশিত স্থান দ্রুত ফুলে যায়। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে দংশিত স্থানের কাছে শরীরের আরও কয়েকটি অংশ আলাদাভাবে ফুলে যায়। দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে নিম্ন রক্তচাপ, কিডনি অকার্যকর হওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হতে পারে।

তবে একে আঘাত না করলে কোনো ক্ষতি করে না। তাই এ ধরনের সাপ দেখলে ধরা বা আঘাত করা থেকে বিরত থাকলে আর সমস্যা হয় না। বাংলাদেশে প্রতিবছর অন্তত ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন। বছরে অন্তত ছয় হাজার মানুষ মারা যান বলে এক গবেষণায় উল্লেখ করেন চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আহসান মনসুর।

এসকে