৮ মাসে ধর্ষণের শিকার ৮৮৯ নারী

ধর্ষণ কেন ঠেকানো যাচ্ছে না? 

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০, ১২:৩৫ পিএম ধর্ষণ কেন ঠেকানো যাচ্ছে না? 

গত এক সপ্তাহে দেশে বেশ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, দেশে ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সহিংসতা দিন দিন বাড়ছে। ধর্ষণকাণ্ডের বিচার না হওয়াকে পরিস্থিতির জন্য দুষছেন মানবাধিকারকর্মীরা।

গত শুক্রবার রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে নববধূকে ছাত্রাবাসে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইতিমধ্যেই তাদের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে অসুস্থ স্বামীর জন্য রক্ত জোগাড়ের কথা বলে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। খাগড়াছড়িতে ডাকাতি করতে ঘরে ঢুকে এক প্রতিবন্ধী তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্নস্থানে এমন আরো কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক তরুণীকে (২০) দুইদিন ধরে আটকে রেখে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশের ৮৮৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে ৪১ জন। সেই হিসেবে চলতি বছর প্রতিমাসে গড়ে ১১১ জন নারী  ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। 

সংস্থাটির দেয়া পরিসংখ্যান থেকে আরো জানা গেছে, দেশে ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সহিংসতা দিন দিন বাড়ছে। ২০১৯ সালে ১ হাজার ৪১৩ নারী ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন। আর আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ১০ নারী। এছাড়া ২০১৮ সালে ৭৩২ জন এবং ২০১৭ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮১৮ নারী।

এসব ঘটনার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বিচারহীনতাকে দায়ী করে আসছেন মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ঘটনাগুলোর সঙ্গে ক্ষমতাশালীরা জড়িত থাকায় তাদের বিচার হয় না। আবার অনেক সময় পুলিশ ক্ষমতাশালীদের গ্রেফতার করে না। কেউ কেউ গ্রেফতার হলেও তারা আবার জামিনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে অবশ্যই অপরাধ কমে যাবে।

এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির আইনি সহায়তাকারী এডভোকেট মাকসুদা আক্তার লাইলী বলেন, ধর্ষণের ক্ষেত্রে বিচার হয় না। আর বিচার না হলে এমন ঘটনা বাড়বেই। আইনে আছে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার হতে হবে। কিন্তু বাস্তবে বিচার হতে ৮ থেকে ১০ বছর লেগে যায়। বিচারের এ দীর্ঘসূত্রতা তো রয়েছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিচারকার্যে রাজনৈতিক প্রভাবও। সব মিলিয়ে বিচারহীনতার কারণে বেড়েই চলছে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।

জাগরণ/এমআর