ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার

কারাগারে মারা গেছেন লেখক মুশতাক আহমেদ

জাগরণ প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১, ১২:১৬ এএম কারাগারে মারা গেছেন লেখক মুশতাক আহমেদ

`রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের' অভিযোগে গ্রেপ্তার লেখক মুশতাক আহমেদ কাশিমপুর কারাগারে মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।

র‌্যাবের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া মুশতাক আহমেদ গত বছরের মে মাস থেকে কারাবন্দি ছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কারাগারে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান মুশতাক আহমেদ। সেখান থেকে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ শরীফ জানান, কাশিমপুর কারাগার থেকে ওই বন্দিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা সম্ভব হবে।

মুশতাক আহমেদ রাজধানীর লালমাটিয়ায় স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তিনি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। বাণিজ্যিকভাবে দেশে কুমির চাষের অন্যতম প্রবক্তাও ছিলেন তিনি।

মৃতের পারিবার জানায়, শুক্রবার সকালে মুশতাকের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

গত ১১ জানুয়ারি ডিজিটাল‌ নিরাপত্তা আইনের মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার কর্মী দিদারুল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ওই বছরের মে মাসে রমনা থানায় মুশতাকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে র‌্যাব। তাঁদের বিরুদ্ধে যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জাতির জনক, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, মহামারি করোনাভাইরাস সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, তাঁরা রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপরাধ করেছেন।

গ্রেপ্তার হওয়া কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, মুশতাক আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে I am Bangladeshi নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনা, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির’ অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারে র‌্যাব দাবি করে, মুশতাক আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদে দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নানের সম্পৃক্ততা পায় তারা।

গত সেপ্টেম্বরে এই মামলায় গ্রেপ্তার মিনহাজ মান্নান ও দিদারুল ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পান। কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাক কারাবান্দি হন। ছয় বার মুশতাকের জামিন আবেদন নাকচ হয়।