• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০১৯, ০৮:২৩ এএম

রাঙ্গামাটিতে ব্রাশফায়ারে ৭ খুনের ঘটনায় আটক ১৭

রাঙ্গামাটিতে ব্রাশফায়ারে ৭ খুনের ঘটনায় আটক ১৭

 

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্রাশফায়ারে ২ নির্বাচনি কর্মকর্তাসহ ৭ জন নিহত ও ২৫ জন আহতের ঘটনায় রাতভর অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট জেএসএস ও ইউপিডিএফর ১৭ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনীর সদস্যরা। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার আলমগীর কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গোয়েন্দা সূত্র বলেছে, স্থানীয় উপজাতিদের মধ্যে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস এবং প্রসীত সমর্থিত ইউপিডিএফ গোষ্ঠী যৌথভাবে এ বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। 

ইসি কবিতা খানম বলেছেন, পাহাড়িয়া এলাকার বিচ্ছিন্নতাবাদী ২টি সন্ত্রাসী গ্রুপ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় মূলহোতাদের আইনের আওতায় আনতে এরমধ্যে জেলা পুলিশ সুপার, সকল গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
 
এদিকে বর্বরোচিত হামলা ও হতাহতের পর প্রশাসনের জরুরি মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাঙ্গামাটিতে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের ধরতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, গোয়েন্দা ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান শুরু করেছে।
  
রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার আলমগীর কবীর বলেছেন, এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ১৮ জনকে হেলিকপ্টার যোগে রাঙ্গামাটি জেলা হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই হেলিকপ্টারে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসাধীন ৭ জনের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া মরদেহগুলো ময়না তদন্তের জন্য রাঙ্গামাটি জেলা হাসপাতাল লাশ ঘরে রাখা হয়েছে। 
  
অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার বলেন, আমরা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছি। রাতভর অভিযানে সংশ্লিষ্ট জে এসএস ও ইউপিডিএফর ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।  

রাঙামাটিতে ভোট শেষে ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম নিয়ে উপজেলা সদরে ফেরার পথে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে দুই নির্বাচনি কর্মকর্তাসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪ জন আনসার সদস্য ছিলেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৮ জন। তাদের মধ্যে ২ জন নারী। সাজেক ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা শেষে চাঁদের গাড়িতে করে তারা বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরে ফিরছিলেন। সোমবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাঘাইছড়ির নয় মাইল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। বাঘাইছড়ির থানার ওসি এমএম মঞ্জুরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি বলেন, ঘটনাস্থলে নিহত পোলিং অফিসার হচ্ছেন স্থানীয় কিশলয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমির হোসেন। নিহত ৪ আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা হচ্ছেন আল আমিন, মিহির কান্তি দত্ত, বিলকিস ও জাহানারা বেগম। নিহত অপরজনকে মন্টু চাকমা হিসেবে শনাক্ত করেছে স্থানীয়রা। এছাড়াও গুরুতর আহত ১১ জনকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে পাঠানোর পথে আবু তৈয়ব নামে আরেকজন নির্বাচন কর্মকর্তা মারা যান। তিনি সাজেকের ওই কেন্দ্রে সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
  
এদিকে ঘটনাস্থলের পাশের একটি ঝোঁপ থেকে আরেকটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা তার নাম মন্টু চাকমা বলে জানিয়েছে। তবে তাকে নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের একটি অংশ জানিয়েছেন, চাঁদের গাড়িটিতে সন্ত্রাসীরা ব্রাশফায়ার করার সময় আনসার সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় আনসার সদস্যদের গুলিতে মন্টু চাকমা নিহত হন।

তবে আরেকদল স্থানীয় বলেছেন, মন্টু নির্বাচনি কর্মকর্তাদের পেছেনে থাকা আরেকটি চাঁদের গাড়ির চালকের সহকারী (হেলপার) ছিলেন। এ হামলায় আহতদের হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাঘাইছড়ি ইউএনও নাদিম সরোয়ার।

এইচ এম/এএস