• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০১৯, ০৯:১৮ পিএম

অশান্ত পাহাড়, আতঙ্কে বাসিন্দারা

অশান্ত পাহাড়, আতঙ্কে বাসিন্দারা


সন্ত্রাসীদের হামলায় বারবার রক্তাক্ত রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির পাহাড়ি জনপদ। বাসিন্দারা ভুগছেন মৃত্যু আতঙ্কে। সর্বশেষ গত সোমবার উপজেলা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন শেষে  সাজেক থেকে বাঘাইছড়ি ফেরার পথে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা ও ব্রাশফায়ারে নিহত হন নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ ৮ জন।

ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আজ মঙ্গলবার সকালে বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তঙ্গচঙ্গ্যাকে পরিবারের সদস্যদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। উপর্যুপরি এসব ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ি জনপদে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার রাত থেকেই বিশেষ অভিযানে নেমেছে যৌথবাহিনী। গহীন পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু এখনও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কোন সদস্য বা ঘাতকদের গ্রেফতারে সক্ষম হয়নি তারা। ১৬/১৭ জনকে আটক করা হলেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় গোয়েন্দা সূত্র মতে, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি সীমান্তবর্তী দুর্গম যে এলাকায় অস্ত্রধারীদের ব্রাশফায়ারে ৮ জন নিহত হন, সেখানে একদিকে উঁচু পাহাড়, অন্য দিকে নিচু ঢাল। ওই খানে পাহাড়ের ঢালের দুপাশ থেকেই গুলি করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এ ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ। সংশ্লিষ্ট রাস্তায় বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের যানবাহন। 

স্থানীয় আতঙ্কগ্রস্ত একজন মোবাইল ফোনে জানালেন, নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে তিন চার মাইল হেঁটেছেন, গন্তব্যে পৌঁছুতে আরো কিছু পথ হাঁটতে হবে। আরেকজন বললেন, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনার পর থেকে তারা জঙ্গলে নির্ঘুম রাত পার করছেন, বাসা-বাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন প্রাণভয়ে। কখন আবার তাদের উপর ওই গোষ্ঠী হামলা চালায়। তিনি বলেন, আর লাশ দেখতে চাই না। আমরা শান্তি চাই।

এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এটি আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর বিরোধের জের। জেএসএস সন্তু লারমা গ্রুপ এবং ইউপিডিএফ এই হামলার সঙ্গে জড়িত বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। অপরাধীদের ধরতে যৌথবাহিনীর  অভিযান চলছে। 

অবশ্য সোমবারের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, শান্তির প্রশ্নে কোনো ছাড় দেবেন না তারা। তারা দাবি করেন, অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে পাহাড়ি এলাকা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারিতে শান্ত রয়েছে।

রাঙ্গামাটি জেলার পুলিশ সুপার আলমগীর কবির বলেন, অস্ত্রধারীরা পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ওঁত পেতে থাকে। দুই চার পাঁচ দিন বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে থাকে। এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সফল হয়। তাই এটাকে আমরা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই মনে করি। সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এইচ এম/আরআই