• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০১৯, ০৯:২৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২২, ২০১৯, ০৯:২৯ এএম

আওয়ামী লীগ ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

আওয়ামী লীগ ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যরা -ছবি : বাসস

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) দুই দলের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সফররত সিপিসির আন্তর্জাতিক বিভাগ সংক্রান্ত মন্ত্রী সং তাও এবং প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বৈঠকের পরে এই সমঝোতা স্মারকের সই হয়।  

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ জমির, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে সাংবাদিকদের ব্রিফি করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পীচ রাইটার নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ এবং  সং তাও নিজ নিজ দলের পক্ষে এই স্মারকে সই করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এবং কমিউনিস্ট পার্টির নেতা উভয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী দিনগুলোতে দুই বন্ধু ভাবাপন্ন দেশ এবং দুটি দলের মধ্যে সম্পর্ক এবং সহযোগিতা আরো শক্তিশালী হবে।

সং তাও উল্লেখ করেন যে, তার দল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একই ধরনের মতাদর্শে বিশ্বাসী।

নজরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে নিরাপদ এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসনে চীনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের তাদের নিজেদের দেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এর উত্তরে সং তাও তার দেশের সহযোগিতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফেরত নেয়ার জন্য চীন এ ব্যাপারে কাজ করছে এবং মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছে।

চীনকে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নে চীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।

চীন সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনের সহযোগিতা বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।

সারাদেশে একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে কৃষিতে চীনের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে নজরুল ইসলাম জানান, চীন কৃষিখাতে অনেক উন্নত, কাজেই আমরা আমাদের কৃষিখাতের উন্নয়নে তাদের সহযোগিতা চাই, যেহেতু আমাদের জমির পরিমাণ দিন দিন কমছে।

শেখ হাসিনা মীরেরসরাইতে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭শ’ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মিয়ানমার থেকে গ্যাস আনার জন্য চীনকে প্রস্তাব করেন।

তিনি বলেন, চীন তাদের এলাকা থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত গ্যাস পাইপ লাইন বসাচ্ছে এবং তারা চাইলে মীরেরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল পর্যন্তও মিয়ানমার থেকে এই গ্যাস আনতে পারে।

সং তাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চমৎকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি এই অর্থবছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশের অর্জন করতে যাওয়া ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধিরও প্রশংসা করেন।

চীনের নেতা চীনের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দেন এবং তাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান।

তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে বিগত নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিপুল বিজয়ে এবং চতুর্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করায় তাকে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় সং তাও-এর মাধ্যমে চীনের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকেও শুভেচ্ছা জানান।

বিসিআইএম (বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার) অর্থনৈতিক করিডোর সম্পর্কে তিনি বলেন, চীনসহ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধনকে আরও দৃঢ় করা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণে এই উদ্যোগ গৃহীত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫২ ও ’৫৬ সালের চীন সফরের কথা স্মরণ করেন।বাসস

এসএমএম