• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০১৯, ০১:১৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২৮, ২০১৯, ০৯:৫২ পিএম

বনানীর বহুতল এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ আগুন, আটকা পড়েছেন অনেকে

বনানীর বহুতল এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ আগুন, আটকা পড়েছেন অনেকে

বনানী কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে অবস্থিত ২২ তলা এফ আর টাওয়ার ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে ভবনটির নয় তলায় অবস্থিত একটি রেস্তোরাঁ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

বনানী থানার উপপরিদর্শক সহিদুল ইসলাম বলেন, বনানীর ১৭ নম্বর রোডের এফ আর টাওয়ারে এই আগুন লাগে। আগুন মুহূর্তের মধ্যে পাশের একটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে সেখানে দমকল বাহিনীর ২২টি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। ভবনের ভেতরে অনেকেই আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। আগুনে আতঙ্কিত হয়ে ভবনটি থেকে অনেকেই এ সময় নীচে লাফিয়ে পড়েন। তাদের বেশির ভাগই গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়া চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। যদিও এর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। 

এফ আর টাওয়ার থেকে আগুন পাশের আহমদ টাওয়ারেও ছড়িয়ে পড়ে। ইতোমধ্যেই আশপাশের বহুতল ভবনগুলো থেকে মানুষ-জনদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকল বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনী। এ ছাড়াও উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে বিমান বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাড়ে বারোটার দিকে এফ আর টাওয়ারের নবম তলায় অবস্থিত একটি রেস্তোরাঁ থেকে ধোঁয়া বের হতে শুরু করে। শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ১০ তলা, ১১তলা, ১২ তলা ও ১৩ তলায়।  এসব ফ্লোরে আটকে পড়া মানুষ এ সময় বাঁচার জন্য চিৎকার শুরু করেন। অনেকে ভবনের কাচ ভেঙ্গে বাইরে হাত বের করে বাঁচার জন্য চিৎকার শুরু করেন। অনেকেই ভবনের ছাদে আশ্রয় নেন। ১০ তলা, ১১তলা ও ১২ তলায় আটকে পড়া মহিলারা জানালা দিয়ে গায়ের ওড়না দেখিয়ে বাঁচার আকুতি জানান। অনেকে কাঁচ ভেঙ্গে ও টেলিফোনের ও ডিসের সংযোগ লাইনের তার নিয়ে পেঁচিয়ে ঝুলে এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে এবং পার্শ্ববর্তী অন্য ভবনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী মোখলেসুর রহমান জানান, আগুন লাগার পর চারজন ৮ম ও নবম তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে। তারা পার্শ্ববর্তী দুই ভবনের মাঝখানে পড়েন। হয়তো তারা বাঁচবে না। তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। তবে এই মুহূর্তে সেখানে তাদের কাছে গিয়ে দেখা যাচ্ছে না, তারা মরে গেছে না, বেঁচে আছে।

দুপুর পৌনে ২টায় দমকল কর্মী বাদল জানান, আগুনের চেয়ে এসি ও অন্যান্য আসবাবপত্র পুড়ে বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় আটকে পড়া মানুষ শ্বাসবন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার আতাউর রহমান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ২২টি ইউনিট এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থলে কাজ করছে। আরো ইউনিট পাঠানো হচ্ছে। ভবনের ভেতরে অনেক মানুষ আটকা পড়েছে। আগুন আতঙ্কে অনেকে প্রাণে বাঁচতে দৌড়ে এবং ছোটাছুটি করে ভবন থেকে বের হতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তাদের আশপাশের প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাৎক্ষনিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির সম্পর্কে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছি। এ মুহূর্তে কিছু জানা যাবে না। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ ঘটনাস্থল কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে অবস্থান করছেন। উৎসুক মানুষের ভিড়ে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকার্য। আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেখানে বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। 

   

আগুন লেগে যাওয়া এফআর টাওয়ার - ছবি : জাগরণ 
আগুন নেভানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে দমকল বাহিনীর কয়েকটি ইউনিট - ছবি : জাগরণ  
উদ্ধার কাজে যোগ দেয়া বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার - ছবি : জাগরণ 
আহত একজনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে - ছবি : জাগরণ 

 

বিস্তারিত আসছে...

এস খান/ এইচ এম/ আরআই

এস_খান / এইচ এম /আরআই