• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০১৯, ১২:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১০, ২০১৯, ০৬:১৬ পিএম

সাবেক ৯ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী দখলে রেখেছেন সরকারি বাসভবন 

সাবেক ৯ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী দখলে রেখেছেন সরকারি বাসভবন 
মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন ; ফাইল ফটো


আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান না পেয়েও মিন্টো রোডের বাংলো এবং মিনিস্টার্স এ্যাপার্টমেন্ট ছাড়ছেন না সাবেক ৯ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। এ কারণে নতুন মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই এখন আবাসন সমস্যায় ভুগছেন। বিঘ্নিত হচ্ছে তাদের নিরাপত্তা। বিষয়টি নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং পিডব্লিউডি’র আবাসন বিভাগ একাধিকবার চিঠি দিয়েও খালি করতে পারেনি এসব বাসভবন।

নতুন  মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়া বা মন্ত্রিত্ব হারানোর ক্ষেত্রে ১ মাসের মধ্যে মিন্টো রোডের বাংলো এবং মিনিস্টার্স এ্যাপার্টমেন্ট (সরকারি ভিআইিপ বাসভবন) ছাড়ার নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না এই সাবেক ৭ মন্ত্রী ও ২ প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী। আর এ কারণে বরাদ্দ পেয়েও মিন্টো রোডের বাংলো এবং মিনিস্টার্স এ্যাপার্টমেন্টের বাসভবনে উঠতে পারছেন না শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য। 

যারা ছাড়েননি : 

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়া সাবেক মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত (ছায়া বিথি-২, হেয়ার রোড), শাজাহান খান (৭, মিন্টো রোড), মো. মজিবুল হক (২০, পার্ক রোড), হাসানুল হক ইনু (ছায়াবিথি-৬, হেয়ার রোড), এ কে এম শাহজাহান কামাল (৫, মিন্টো রোড) ও শামসুর রহমান শরীফ (৩৫, মিন্টো রোড) বাসভবন ছাড়েননি। এছাড়া সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বাসভবনটিও খালি হয়নি। তার ভাই এবং বোন চিঠি দিয়ে সময় চেয়েছেন বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার (মিনিষ্টার্স এ্যাপার্টমেন্টের-ভবন-১, ৪ তলা) ও নারায়ন চন্দ্র চন্দ (মিনিস্টার্স এ্যাপার্টমেন্টের-ভবন-১, ২ তলা) তাদের বাসভবন ছাড়েননি।

যারা বরাদ্দ পেয়েছেন :

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসভবন বরাদ্দ পেয়েছেন রেল মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক নৌ মন্ত্রী শাজাহান খানের বাসভবন বরাদ্দ পেয়েছেন এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক রেলমন্ত্রী মজিবুল হকের বাসভবন বরাদ্দ পেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বাসভবন বরাদ্দ পেয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামালের বাসভবন বরাদ্দ পেয়েছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের বাসভবন বরাদ্দ পেয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, আর সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বাসভবন বরাদ্দ পেয়েছেন ডাক, টেলি যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জবার। মোস্তফা জব্বার অবশ্য আগের সরকারি বাসভবনেই (মিনিস্টার্স এ্যাপার্টমেন্টে-১ এর ৫ম তলা) বসবাস করছেন।

বরাদ্দ পেয়েও বাসভবন খালি না পাওয়ার বিষয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি আমার জন্য ৭, মিন্টো রোডের বাংলোটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কেন সেটি খালি হচ্ছে না, সে সম্পর্কে আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবেন যিনি সেখানে আছেন। তবে আমি শুধু এতটুকু বলবো যে, আগে-তো আমি মন্ত্রী ছিলাম না, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নতুন মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের স্পর্শকাতর কিছু বিষয় অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই বাসভবনে থাকে। এর পাশাপাশি আমার নিরাপত্তার জন্যই মিন্টো রোডের বরাদ্দ হওয়া বাসভবন প্রয়োজন।’  

গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং পিডব্লিউডি’র আবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, তারা এ বিভাগ থেকে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সাবেক ৭ মন্ত্রী ও ২ সাবেক প্রতিমন্ত্রীকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু গত ৩ মাসেও এসব বাসভবন খালি করে চাবি বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। বিষয়টি পূর্ত মন্ত্রণালয়কেও জানানো হয়েছে বলে জানান তারা।

মন্ত্রণালয় সূত্র আরো জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনের পরপরই ২৫, মিন্টো রোডের বাংলো ছেড়ে যান সাবেক বন্যা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। আর নির্বাচনের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে দেন সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, নুরুল ইসলাম নাহিদ ও অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। এর পর একে একে সাবেক অনেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বাসভবন ছেড়ে পিডব্লিউডির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে চাবি বুঝিয়ে দেন। 

এমএএম/আরআই