• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০১৯, ০২:২০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০১৯, ০৬:৩৬ পিএম

জবিতে কোনো অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই

জবিতে কোনো অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই

অগ্নিকাণ্ডের জন্য রাজধানীর পুরান ঢাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। আর এ এলাকায় রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করেন। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নি নির্বাপণের কোনো সু-ব্যবস্থা নেই। কোনো ভবনেই নেই জরুরি নির্গমন পথ। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ কোনো একাডেমিক ভবনেই অগ্নি নির্বাপণের সু-ব্যবস্থা নেই। সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার রয়েছে মাত্র ১১টি।  যার অধিকাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ। এর মধ্যে নতুন একাডেমিক ভবনে ৫টি, বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ৩টি এবং প্রশাসনিক ভবনে ৩টি সিলিন্ডার রয়েছে। তবে কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, রফিক ভবন, অবকাশ ভবনে কোনো সিলিন্ডার নেই। নেই কোনো জরুরি নির্গমন পথ। কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ২টি ভবন এবং অবকাশ ভবন থেকে নামার জন্য রয়েছে একটি মাত্র সিঁড়ি।

নতুন একাডেমিক ভবন ও বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে একাধিক সিঁড়ি থাকলেও সুবিশাল স্থাপনা হিসেবে তা অপ্রতুল। একাডেমিক ভবনগুলোর মধ্যে অগ্নি নিরাপত্তা ঝুঁকির শীর্ষে রয়েছে নতুন একাডেমিক ভবন (নিউ বিল্ডিং)। ১৪ তলা এই ভবনের নবম তলা পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। ভবনটির নীচ তলায় ২টি, ২য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় ১টি করে মোট ৩টি অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার আছে। বাকি ছয় ফ্লোরে কোনো ধরনের অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা নেই। ভবনটির জন্য তিনটি সিঁড়ি থাকলেও নির্মাণ কাজের অজুহাতে একটি সিঁড়ি বন্ধ করে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উন্মুক্ত বাকি দুই সিঁড়ির মধ্যে একটি কোনো কোনো ফ্লোরে কলাপসিবল গেট দিয়ে আটকানো। ফলে শুধুমাত্র একটি সিঁড়ি দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয়। জরুরী নির্গমন পথ না থাকা এবং ভবনের মাঝ বরাবর একটি সিঁড়ি থাকায় অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা ঘটলে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তাছাড়া অবকাশ ভবনের নিচে রয়েছে ক্যান্টিন। সেখানে লাইন গ্যাসে রান্না করা হয়। দীর্ঘদিন গ্যাস লাইন সংস্কার না হওয়ার কারণে অনেকগুলো লিকেজ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যে কোনো সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। ২০১৬ সালের ১৭ মে নতুন একাডেমিক ভবনের ষষ্ঠ তলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তখন একাডেমিক কার্যক্রম না থাকায় কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সালেহ আতিফ জানান, ঢাকায় প্রতিনিয়ত যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে তাতে আমরা ভয়ের মধ্যে আছি। কখন কি ঘটে তা বলা যায় না। তাছাড়া পরিবারের সবাই দু:চিন্তায় আছে। তাই সবার নিরাপত্তার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বিবেচনা করতে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার দাবি জানিয়ে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন শওকত জাহাঙ্গীর জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নি নির্বাপণের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এ বিষয়ে আমরা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পক্ষ থেকে নতুন একাডেমিক ভবনে জরুরি নির্গমন পথ নির্মাণের জন্য উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মীজানুর রহমান জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরান ঢাকার কোথাও অগ্নি নির্বাপণের সুষ্ঠু কোনো ব্যবস্থা নেই। দুর্ঘটনা ঘটলে সবাই বাচবে এমন কোনো ব্যবস্থা নেই এখানে। তবে আমাদের নতুন ক্যাম্পাসে সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহা জানান, আমরা অগ্নি নিরাপত্তার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে টেন্ডার পেয়েছি। আমাদের ভবনের বহির্গমনের পথ পর্যাপ্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকেও লিখিতভাবে জানিয়েছি।

এসসি/