• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০১৯, ০৮:১৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৮, ২০১৯, ০৮:২০ পিএম

‘জিয়া খুনি ও তারেক দুর্নীতিবাজ’

পাল্টা জবাব দেয়ার সুযোগ চাইলেন বিএনপি এমপি

পাল্টা জবাব দেয়ার সুযোগ চাইলেন বিএনপি এমপি
সংসদ অধিবেশন - ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকারদলীয় প্রবীণ এক এমপি। এ ছাড়াও বিএনপির কড়া সমালোচনা করেছেন সরকারদলীয় এমপিরা। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে সংসদে কথা বলার সুযোগ চেয়েছেন বিএনপির এক এমপি।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি হয়ে গেল। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলো না। এটা দুঃখের বিষয়। মানুষ আমাদের প্রশ্ন করে, জবাব দিতে পারি না। এসময় তিনি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের টাকা আদায়ে প্রশাসন ও ব্যাংক কর্মকর্তাদেরকে সব প্রক্রিয়া প্রয়োগ করার তাগিদ দেন। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণের টাকা পাচার ঠেকানোর তাগিদ দেন তিনি।

অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, ঋণ আদায়ের যত প্রক্রিয়া আছে সব প্রয়োগ করুন। দুর্ঘটনাক্রমে কেউ ঋণখেলাপি হলে একটা কথা থাকে। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণখেলাপি হলে তাদের ধরতে হবে। কেউ খেলাপি ঋণের টাকা দেশ থেকে পাচার করলে সেটা যদি ধরা পড়ে, তাহলে তারও রেহাই নেই। এজন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় জোরালো তদারকি দরকার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর নানাভাবে প্রশ্ন আসতে পারে। ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরি হয়ে গেছে। অথচ আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলো না, এটা দুর্ভাগ্যজনক। এটা জনগণের টাকা। ব্যাংকের নিশ্চয়তা কে দেয়? রাষ্ট্র। তাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসনে যারা আছেন, ব্যাংক কর্মকর্তা যারা আছেন তাদের বলছি, ব্যাংক ঋণ খোলপিদের ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা নিন। যত প্রকার প্রক্রিয়া আছে তা প্রয়োগ করুন।

তিনি আরো বলেন, খেলাপি ঋণের টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, যদি পাচার হয়ে যায় সেটার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

সরকারি দলের সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, এবারের সংসদে আর একটি বিরোধী দল যুক্ত হয়েছে। বিএনপির ৬ জন সংসদ সদস্য আছেন। উনারা সবাই বক্তৃতা শুরুটাই করেছেন স্বাধীনতার ঘোষক একজন ব্যক্তির নাম নিয়ে। সে হচ্ছে জিয়াউর রহমান। কিন্তু জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কোনোদিন এই বাংলাদেশে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, এ কথা বলেননি, এ দাবি করা হয়নি। এরকম কোনো প্রমাণ যদি ওই সদস্যরা এই সংসদে হাজির করতে পারেন তাহলে আমি এই সংসদ থেকে পদত্যাগ করব।

বিএনপির মোশারফ হোসেন ভুঁইয়া খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, বিশাল বাজেট দেয়া হলেও এত ঘাটতি দিয়ে তা বাস্তবায়ন খুব কঠিন হবে। পুরো জনগণের ওপর করের বোঝা না চাপিয়ে নতুন করদাতা খুঁজে বের করতে হবে। সংসদে মাত্র আমরা ৬ জন, কিন্তু কথা বলতে গেলেই বাধা দেয়া হয়। জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমান এদেশের জন্য অনেক কাজ করে গেছেন। জিয়াকে খুনি ও তারেককে দুর্নীতিবাজ বললে আমাদেরও পাল্টা জবাব দেয়ার সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বগুড়ায় একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বিমানবন্দর এবং সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের দাবি জানান।

বেগম লুৎফুন নেসা খান বলেন, মানসম্মত শিক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ অনেক পেছনে। দেশে বেকারের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তরুণ সমাজ মাদকের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। তিনি জাতীয় সংসদের ৩৩ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত করে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

সরকারি দলের সদস্য পংকজ দেবনাথ বলেন, গত ১০ বছরে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। নিভৃত গ্রামেও এখন জ্বলছে বিজলি বাতি। দেশের বিশাল অগ্রগতি, উন্নয়ন ও সাফল্যের পক্ষেই দেশের তরুণ ও নতুন প্রজন্ম আওয়ামী লীগকে দু’হাত ভরে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে। দুর্নীতির বরপুত্র কুলাঙ্গার তারেক রহমানদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচনকে বিতর্কিত করার অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সহকারী একান্ত সচিব অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান (শিখর) বলেন, বাংলাদেশ মানুষকে উন্নত জীবন দেয়াই হচ্ছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ধ্যান-জ্ঞান। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী গত ১০ বছর ধরে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাই বিদ্যুৎ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, দেশের অর্থনীতি ও বাজেটের আকার। তবে যাদের মানসিক সমস্যা রয়েছে তাদের কাছে এই বাজেট ভালো লাগার কথা নয়। কারণ তারা সরকারের কোনো উন্নয়নই চোখে দেখেন না। 

ডা. হাবিবে মিল্লাত এমপিওভুক্তির আগে এমপিদের পরামর্শ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিএনপির ৫/৬ জন সংসদ সদস্য সংসদে এসে লাগাতার মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। মাত্র কয়েকদিনেই তাদের অসংসদীয় ভাষা যেভাবে এক্সপাঞ্জ করা হয়েছে, অতীতে কখনো হয়নি। এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী চোরের কোনো মুক্তি হতে পারে না। বিএনপি-জামায়াতের ভয়াল অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার মানুষের দীর্ঘ নিঃশ্বাসে বিএনপি এখন মুসলীম লীগ হওয়ার পথে।

এইচএস/ এফসি