• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০১৯, ০৭:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২০, ২০১৯, ০৭:১৮ পিএম

রোহিঙ্গাদের জন্য ১৭১ কোটি টাকা সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

রোহিঙ্গাদের জন্য ১৭১ কোটি টাকা সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

কক্সবাজার জেলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হিসেবে ১৭১ কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয়দের জীবনে স্থিতিশীলতা আনতেই এ তহবিল ব্যয় হবে।

পুষ্টি, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি, শিক্ষা এবং শিশু সুরক্ষার মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার মাধ্যমে ইইউ’র সহায়তায় ইউনিসেফের তিন বছর মেয়াদী প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৮৮ হাজার শিশু ও পরিবার উপকৃত হবে।

এব্যাপারে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোযুমি বলেন, রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি শিশু, কিশোর-কিশোরী ও তাদের পরিবারের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সহায়তা স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে উদ্ভাবনী উপায়ে, সুসংহত ও সমন্বিতভাবে সেবা প্রদানে আমাদের জন্য সুযোগ তৈরি করবে।

তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো অংশীদারদের সহযোগিতায় আমরা গত দেড় বছরে আমাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বেশ জোরদার  করেছি। তবে পরিস্থিতি এখনও সংকটময় রয়ে গেছে। কেননা বাংলাদেশের দরিদ্রতম ও সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা জেলাগুলোর একটিতে এখনও ১২ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
 

কক্সবাজারে ২৩ লাখ মানুষের বসবাস। এদের প্রায় ৩৩ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। সেখানে শিক্ষার সূচকগুলো দেশের সর্বনিম্ন পর্যায়ে; যেমন, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির হার ৫৫ শতাংশ। ১৮ বছর বয়সের আগেই অর্ধেকের বেশি মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় এবং প্রায় ৫০ হাজার শিশু সম্পৃক্ত শিশুশ্রমে।

জেলাটিতে অপুষ্টির হারও সুউচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। মায়েদের পুষ্টিহীনতা এবং নবজাতক শিশুদের পর্যাপ্ত না খাওয়ানো ও যথাযথ যত্নের অভাবে সেখানে প্রতি দু’টি শিশুর একটি খর্বাকৃতির সমস্যায় ভুগছে।

এছাড়াও বাংলাদেশে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের কারণে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত কারণে কক্সবাজার অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ জেলা।

এসব সমস্যার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্ক বলেন, শরণার্থী সংকটের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ সবার জন্য আরও ভালো একটি ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের আরও কার্যকরভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এই কৌশলগত সহায়তার মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি কমিউনিটিগুলোর জন্য মানবিক ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে পানি, শিক্ষা, শিশু সুরক্ষা এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা প্রাপ্তির সুযোগ উন্নত করার ক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলো আমরা সমাধান করবো। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে স্থানীয় উন্নয়ন প্রচেষ্টা জোরদার করা এবং ভবিষ্যতে মানবিক সহায়তার চাহিদা কমানো।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় দেয়া স্থানীয়দের সহায়তা প্রদানে ইউনিসেফকে ২ কোটি ৪৮ লাখ ইউরো অর্থ সহায়তা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোযুমি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে ইউনিসেফের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে পাশে আছে ইইউ। আমরা প্রত্যাশা করি, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয় দেয়া স্থানীয় বাংলাদেশিদের জীবনমান উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ এই অংশীদারিত্ব অব্যাহত থাকবে।

টিএস/বিএস