• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০১৮, ০১:৩১ পিএম

অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা বাজে রকমের দৃষ্টান্ত : হাইকোর্ট

অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা বাজে রকমের দৃষ্টান্ত : হাইকোর্ট

 


স্কুলে নিজের সামনে বাবা-মাকে অপমান করায় ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর (১৫) আত্মহত্যার ঘটনাকে 'খুবই বাজে রকমের দৃষ্টান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) এই মন্তব্য করেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাইয়েদুল হক গণমাধ্যমে প্রকাশিত অরিত্রি অধিকারীর (১৫) আত্মহত্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন। আদালতকে তিনি বলেন, এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা প্রার্থনা করছি।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলে, অরিত্রী অধিকারীর (১৫) আত্মহত্যার ঘটনা খুবই হৃদয় বিদারক। শিক্ষার্থীর সামনে বাবা-মাকে অপমানের ঘটনা খুবই বাজে রকমের দৃষ্টান্ত। আপনি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট নিয়ে আসেন। আমরা বিষয়টি দেখব।

স্কুল থেকে ছাড়পত্র (টিসি) দেওয়ায় এবং শিক্ষার্থীর সামনে বাবা-মাকে অপমান করায় ভিকারুননিসা নূন স্কুলের প্রধান শাখার শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারী (১৫) গতকাল সোমবার  আত্মহত্যা করে। সে প্রভাতী শাখার ইংলিশ ভার্সনের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। শান্তিনগরের ২৩/২৪ নম্বর বাড়ির সপ্তম তলার ফ্ল্যাটে গলায় ফাঁস দিয়ে অরিত্রী আত্মহত্যা করে।

অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, বড় মেয়ে অরিত্রী, ছোট মেয়ে ঐন্দ্রীলা ও স্ত্রী বিউটিকে নিয়ে শান্তিনগরের একটি বাসায় থাকেন তিনি। গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। তিনি কাস্টমসের সিএন্ডএফ-এর ব্যবসা করেন। ছোট মেয়ে ঐন্দ্রীলাও একই স্কুলের শিক্ষার্থী।

তিনি জানান, অরিত্রীর বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল।  রোববার ইতিহাস পরীক্ষা ছিল। স্কুলে মোবাইল ফোন নেয়া নিষেধ থাকা সত্ত্বেও অরিত্রি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। ফোনটি দেখতে পেয়ে শিক্ষকরা নিয়ে যায় এবং অরিত্রীকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়।

দিলীপ অধিকারী বলেন, সোমবার সকালে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য স্কুলে যায় অরিত্রী। কিন্তু তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দিয়ে আমাকে ও স্ত্রীকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। তখন আমি ও আমার স্ত্রী স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে যাই। ভাইস প্রিন্সিপাল বলেন, মোবাইল ফোনে অরিত্রি নকল করছিল। আমরা এজন্য ক্ষমা চাইলে তিনি প্রিন্সিপালের কক্ষে পাঠান। প্রিন্সিপালের কক্ষে গিয়েও আমরা ক্ষমা চাই। কিন্তু প্রিন্সিপাল সদয় হননি। এক পর্যায়ে পায়ে ধরে ক্ষমা চাই আমরা। কিন্তু প্রিন্সিপাল আমাদের বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনি অরিত্রিকে টিসি (ছাড়পত্র) দেওয়ারও নির্দেশ দেন।

স্কুল থেকে বের হয়ে দিলীপ স্ত্রী ও মেয়েকে বাসায় নামিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে তদবির শুরু করেন। হঠাৎ বাসা থেকে ফোন আসে অরিত্রী রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছে। বাসায় গিয়ে দরজা ভাঙলে অরিত্রীকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অধিকারী বলেন, অরিত্রীকে টিসি না দিতে আমি এবং তার মা স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনেক অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। অরিত্রীকে আরেকবার সুযোগ দিলে হয়ত আমার মেয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেত না।

মা আ/এএস