• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০১৯, ০৬:৪২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৪, ২০১৯, ০৬:৪৬ পিএম

জামিনে মুক্তি পাওয়া জঙ্গিরা নিবিড় নজরদারিতে : স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী

জামিনে মুক্তি পাওয়া জঙ্গিরা নিবিড় নজরদারিতে : স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। তিনি বলেন, জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত, সাজাপ্রাপ্ত ও আটক জঙ্গিদের নিবিড় নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ জুন) টেবিলে উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদকে এ তথ্য জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশালাইজড ফোর্স গঠনের পাশাপাশি উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিস্টিকস সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও গোয়েন্দা নজরদারি এবং আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে জঙ্গি আস্তানা, জঙ্গিদের অবস্থান শনাক্তপূর্বক গ্রেফতার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জঙ্গি সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত বা শনাক্তকরণের সুবিধার্থে এলাকা ভিত্তিক ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বিডি পুলিশ হেল্প লাইন, হ্যালো সিটি ও রিপোর্ট টু র‌্যাব প্রভৃতি অনলাইন অ্যাপস চালু এবং গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক এ যাবৎ অনেকগুলো সফল অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং যেকোনো ধরনের জঙ্গি সংক্রান্ত বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ সদা তৎপর রয়েছে, পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে প্রচলিত আইন অনুযায়ী জঙ্গিদের গ্রেফতারপূর্বক বিচারের জন্য আদালতে সোপর্দ করার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমনের সফলতা বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হকের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও মাদক সমস্যার কবলে পড়েছে মূলত ভৌগলিক কারণে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে অবৈধ মাদক প্রবেশ করে। বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদক ইয়াবা যা প্রবেশ করছে মিয়ানমার থেকে। ভারত থেকে আমাদের দেশে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও ইনজেকটিং ড্রাগ আসে। ইয়াবা মূলত মিয়ানমার থেকে নাফ নদী হয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাচার হয়। ইয়াবার অনুপ্রবেশ বন্ধে এরইমধ্যে টেকনাফে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ৯ জন জনবল সমন্বয়ে একটি অস্থায়ী সার্কেল স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি কক্সবাজার জেলায় ১০ জন ব্যাটালিয়ন আনসারসহ মোট ১৯ জনবলের একটি টিম মাদকবিরোধী কাজ করছে।

মন্ত্রী জানান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ২০১৮ সালে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন মাদক কারবারির বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা দায়ের করেছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি-মে পর্যন্ত ৬ হাজার ৬৭১ জন মাদক কারবারির বিরুদ্ধে ৬ হাজার ১৫৬টি মামলা করা হয়েছে। প্রতিদিন মাদক বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। মাদক সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এ পর্যন্ত মহাপরিচালক পর্যায়ে ৫টি ফলপ্রসূ দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ষষ্ঠ দ্বি-পাক্ষিক সভার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ইয়াবা পাচার রোধকল্পে বাংলাদেশ মিয়ানমারের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩টি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি সভাতেই মিয়ানমারকে ইয়াবার উৎপাদন ও প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এবং মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত ইয়াবা তৈরির কারখানা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়। মিয়ানমারের সঙ্গে চতুর্থ দ্বি-পাক্ষিক সভা আগামী অক্টোবর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। 

 

এইচএস/একেএস