• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০১৯, ০৫:২৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৬, ২০১৯, ০৫:২৮ পিএম

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলদের পদত্যাগ চান আইনমন্ত্রী

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলদের পদত্যাগ চান আইনমন্ত্রী
আলোচনা সভায় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক

নতুন নিয়োগের স্বার্থে ২০১৭ সালের আগে নিয়োগ পাওয়া সব ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, তাদের পদত্যাগের বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি অ্যাটর্নি জেনারেলকে। তিনি নিশ্চয়ই পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পদত্যাগপত্র পাইনি।  

বুধবার(২৬ জুন) সকালে রাজধানীর বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে প্রশিক্ষিত বিচারকদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বিচাকদের নিষ্ঠার সাথে তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। 

লিগ্যাল এইড অফিসারদের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, মাঠ পর্যায়ে লিগ্যাল এইড অফিসাররা কার্যকর ভূমিকা রাখলে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা কমানো সম্ভব। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভূমিকা পালন করলে সমাজ শান্তি আশার পাশাপাশি বিচারপ্রার্থীরাও উল্লেখযোগ্য হার সেবা পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার এবং আইনের শাসনের মূলনীতি। সরকার বিশ্বাস করে যে সকল নাগরিকের ন্যায়বিচারে প্রবেশের সমান অধিকার এবং নিরপেক্ষ বিচার পাওয়ার অধিকার থাকা প্রয়োজন। তাই, নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ জনগোষ্ঠীর আইনি অধিকার নিশ্চিতকল্পে সরকার ২০০০ সালে “আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০” প্রণয়ন করেছে। এছাড়া জেলা আইনগত সহায়তা প্রদান অফিসের মাধ্যমে দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিদের ন্যায় বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইনগত সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। 

‘জাস্টিস অডিটের তথ্যমতে ৬৮ ভাগ মানুষ আনুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার পাবেন বলে বিশ্বাস করেন মন্ত্রী। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল হওয়া স্বত্ত্বেও ৮৭ ভাগ মানুষ স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে আগ্রহী। জাস্টিস অডিটে দেখা যায়, শতকরা ৩০ ভাগ নাগরিকের প্রাথমিক দ্বন্দ্বের কারণ প্রতিবেশীর সাথে ছোট-খাটো বিরোধ বা মারামারি যা স্থানীয়ভাবেই নিষ্পত্তিযোগ্য। এছাড়াও বাংলাদেশের আদালতগুলোতে তিন মিলিয়নের অধিক মামলা জট রয়েছে যার বেশিরভাগই ছোটখাটো অপরাধের জন্য দায়েরকৃত মামলা।’ 

‘আইন সহায়তার বিষয়টি নিয়েও নতুন করে ভাববার আছে এবং এ বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের সময় এসেছে। এখন পর্যন্ত আইনিসেবা বলতে আমরা আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তাকেই বুঝি। আইনি বিষয়ে তথ্য প্রদান, পরামর্শ ও মীমাংসাও কার্যকর আইনি সহায়তা যা একটি বিরোধের উৎপত্তিকালে প্রদান করা জরুরি। বিচার ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল এবং জনমুখী করতে প্রয়োজন- সঠিক সমস্যার সঠিক সমাধান; সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মামলাজট হ্রাস; এডিআর এর মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ মীমাংসা; থানা, কারাগার ও আদালতের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে আটকে পরা বিচারপ্রার্থীদের সহায়তা; পরিশেষে আইনিসেবা গ্রহণকারী বিচারপ্রার্থীদের সন্তুষ্টি বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপসহ প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন করা আবশ্যক।’ 

মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যত কর্মপন্থা নির্ধারণ এবং নীতি প্রনয়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্যও অংশীদারিত্ব প্রয়োজন। উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি যে, ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০২০ সালের মধ্যে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ হাজার। সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০১৬ সালে, এই লক্ষ্যমাত্রার ১৭৮% অতিরিক্ত অর্জিত হয়েছে। এই সংখ্যা নির্দেশ করে যে, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এবং সরকারি-বিসরকারি সংস্থার সক্ষমতা জানতে কার্যকর অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

তিনি বিশ্বাস করেন যে, প্রশিক্ষণটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অর্জিত যৌথ সাফল্যগুলি পর্যালোচনা, পরিবীক্ষণ এবং ট্র্যাকিং এ সহায়তা করবে। আমি বিশ্বাস করি যে, এই প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি এবং আইন সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে এনএলএসএও আরো শক্তিশালী হবে। এই কার্যক্রমকে সামনে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং এনজিওর মধ্যে কার্যকরী অংশীদারিত্ব স্থাপন প্রয়োজন।

টিএইচ/টিএফ